আজ- বুধবার | ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
৩০ আশ্বিন, ১৪৩২ | রাত ৯:৩৬
১৫ অক্টোবর, ২০২৫
৩০ আশ্বিন, ১৪৩২
১৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৩০ আশ্বিন, ১৪৩২

১১ দিন হাজতবাসেও ডা. পার্থ বহালতবিয়তে!

দৃষ্টি নিউজ:

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন বিউটি দাস।ইনসেটে যৌতুকলোভী ডা. পার্থ

টাঙ্গাইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে দায়ের করা একটি মামলায় ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ দীর্ঘ ১১দিন হাজতবাস করেও স্বপদে বহালতবিয়তে রয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। অথচ চাকুরি বিধিতে কোন সরকারি চাকুরিজীবী ফৌজদারী মামলায় ৪৮ঘণ্টা বা তার বেশি হাজতবাস করলে সাময়িক বরখাস্ত করণের বিধান রয়েছে। শনিবার(২১ সেপ্টেম্বর) সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থর শাশুরি বিউটি দাস এক সংবাদ সম্মেলনে ওই অভিযোগ করেন।

ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যৌতুক নিরোধ আইনে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা মামলায় ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ গত ২৬ জুলাই আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে জেল-হাজতে প্রেরণ করেন। ২৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট ১১ দিন জেল-হাজতে বন্দি ছিলেন। জেল-হাজতে থাকার বিষয়টি টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের(স্মারক নং-৪২০৫, তাং-৩১/০৭/২০১৯ইং) মাধ্যমে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনকে জানানো হলেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

টাঙ্গাইলে শহরের বটতলা আনন্দ মোহন দাসের স্ত্রী বিউটি দাস সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার মেয়ে প্রিয়াংকা দাসের সাথে বিগত ২০১৫সালের ১৪ অক্টোবর ঝিনাইদহের মৃত নরেশ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থর বিয়ে হয়। ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত। বিয়ের সময় ছেলে পক্ষকে আনুষঙ্গিক আসবাবপত্রের সাথে পাঁচ লাখ টাকা ও ১০ভরি স্বর্ণালঙ্কার দেয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে প্রিয়াঙ্কার সাথে দেবর অভিজিৎ বিশ্বাস(২০) ও শাশুরি প্রতিমা সরকার(৫০) যৌতুকের দাবিতে আপত্তিকর আচরণ এবং শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। প্রিয়াঙ্কা বিষয়টি স্বামী ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থকে জানালে অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।

https://youtu.be/5HYyNe4d-Ik

অপরদিকে, ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ বিভিন্ন মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে। বিষয়টি জেনে ফেলায় প্রিয়াঙ্কা দাসের উপর নির্যাতন আরো বাড়তে থাকে এবং ডা. পার্থ ১৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় ৬সপ্তাহের গর্ভবতী অবস্থায় প্রিয়াঙ্কাকে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।

বিউটি দাস বলেন, প্রচন্ড শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করে তার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়। সন্তানের নাম প্রথ্বিজিৎ বিশ্বাস। বর্তমানে তার বয়স ৩ বছর। ছেলে জন্মের পর বার বার জানানো হলেও প্রসেনজিৎ বিশ্বাস কোন প্রকার পিতার দায়িত্ব পালন করেননি। পারিবারিক সমস্যা সমাধান চেয়ে গত ৭মে ঝিনাইদহ পৌর মেয়রের কাছে লিখিত আবেদন করে প্রিয়াঙ্কা দাস। পৌরসভার সালিশে প্রিয়াঙ্কা দাসকে বাড়িতে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে সংসার করার প্রতিশ্রæতি দেয় ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ। কিন্তু পৌরসভা থেকে বের হয়ে প্রিয়াঙ্কা দাসকে ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ বাড়ি নিয়ে যায়নি। পরবর্তীতে বিষয়টি তৎকালীন ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. রাশেদা সুলতানাকে জানালে তিনি প্রিয়াঙ্কা দাসকে লাঞ্ছিত করে ও ডা. পার্থকে ডিভোর্স দেয়ার জন্য চাপ দেন।

বিগত ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই প্রসেনজিৎ, তার ভাই ও মা টাঙ্গাইলে এসে পুনরায় যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রিয়াঙ্কা দাস বাদি হয়ে স্বামী, দেবর ও শাশুরিকে অভিযুক্ত করে যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারায় টাঙ্গাইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করে।
বিউটি দাস আরো বলেন, ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ জামিনে মুক্ত হয়ে আবার স্বপদে বহাল হয়েছেন। বর্তমানে মোবাইল ফোনে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেন। হাজত বাসের কারণে ডা. পার্থর সাময়িক বরখাস্তসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্বাস্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সাবেক সিভিল সার্জন রাশেদা সুলতানা বলেন, আমি বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছি। আমি কাউকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করি নাই। ডা. প্রসেজিৎ বিশ্বাস পার্থর জেল-হাজতে থাকার বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়