আজ- ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার  বিকাল ৪:০৬

মহান মে দিবস আজ :: শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ের দিন

 

দৃষ্টি নিউজ:

আজ ১ মে, সোমবার। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। মহান মে দিবস। বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দিবসটি পালিত হয়। শুরুটা হয়েছিল আজ থেকে ১৩৭ বছর আগে। ১২ ঘণ্টার পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে ১৮৮৬ সালের ১ মে রাস্তায় নেমেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা।

শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশে ওই দিন গুলি চলে শ্রমিকদের ওপর। নিহত হন ১১ জন শ্রমিক। তাদের জীবনদানের মধ্য দিয়ে পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো বিশ্বে ৮ ঘণ্টা শ্রমের দাবি মেনে নেয়া হয়। সেই থেকে ১ মে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের প্রতীক হিসেবে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত হয়ে আসছে।

দেশে অর্থনৈতিকভাবে কর্মক্ষম শ্রমশক্তি রয়েছে প্রায় ৬ কোটি ৭ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ৯২ শতাংশ শ্রমিকের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। স্বীকৃতি নেই এমন শ্রমিকের মধ্যে রয়েছে, নির্মাণ শ্রমিক, জাহাজভাঙ্গা শ্রমিক, গৃহশ্রমিক, মাটিকাটা শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর, পরিবহণ শ্রমিক, রিকশা শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, জেলে বা মৎস্যজীবী শ্রমিকসহ অসংখ্য কারখানা ও ক্যাটাগরির শ্রমিক।

বিপুল এই অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিককে মাঝে মধ্যেই কর্মহীন থাকতে হয়। বৃহৎ এই শ্রমিক জনগোষ্ঠীর জন্য নেই কোনো সুরক্ষা বা সুনির্দিষ্ট মজুরি। পোশাক কারখানাসহ ৫৪ ধরনের শিল্পে সরকার সর্বনিম্ন মজুরি বেঁধে দিলেও শ্রমিকদের বিশাল একটি অংশ অনিশ্চিত জীবন যাপন করেন। এরপরও এদের রয়েছে মৃতু্য ঝুঁকি। দেশের এ বাস্তবতায় শ্রমিকদের টিকে থাকাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এরই মাঝে বছর ঘুরে আবার এসেছে শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম আর সংহতির দিন মহান মে দিবস। সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও মে দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।


এ বছর দিবসটি প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প ও শ্রমবান্ধব বর্তমান সরকার শ্রমিকের সার্বিক কল্যাণসাধন ও দক্ষতা বাড়াতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে উন্নত কর্মপরিবেশ, শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক, শ্রমিকের পেশাগত নিরাপত্তা ও সুস্থতাসহ সার্বিক অধিকার নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই।


প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, শ্রমিক এবং মালিক সুসম্পর্ক রেখে জাতীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন-মান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।


দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু এবং সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা এবং সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো বিবৃতি দিয়েছে।


বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, ইতিহাসের পাতায় মে দিবস উজ্জ্বল হয়ে থাকলেও শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। দেশে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত হলেও তা মানা হচ্ছে না।

অপর এক বাণীতে জিএম কাদের বলেন, যারা শ্রমজীবী মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়, তাদের প্রতিরোধে দুরন্ত লড়াইয়ের চেতনা ছড়ায় মহান মে দিবস। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিপীড়িত শ্রমিকরা তাদের ন্যায্যতা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে তারা অমানবিক জীবনযাপন করছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno