আজ- রবিবার | ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | দুপুর ১২:৪৭
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

‘বিএনপির এক নেতা রাতকে দিন আর দিনকে রাত বানাতে পারেন!’

দৃষ্টি নিউজ:

দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলকালে সকল চরাই উৎরাই, জেল-জুলুম, হুলিয়া-নির্যাতন সহ্য করে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দলের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা একটি চক্র ফরহাদ ইকবালের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নানা প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

 

 

 

 

 

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন ত্যাগী নেতাকর্মী বলেন, ‘বিএনপির জনৈক বড় নেতার হাত অনেক লম্বা। তিনি এখন দিনকে রাত আর রাতকে দিন বানাতে পারেন’। তার সম্পর্কে মন্তব্য করার সাহস তাদের নাই বলেও জানান তারা। তবে প্রপাগান্ডা ছড়ানো তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়ে তারা বলেন, ‘এটা অপরাজনীতি। এই ধরণের রাজনীতি দল ও দলের কর্মীদের ক্ষতি হবে- কর্মীদের ঐক্য নষ্ট করবে’।

 

 

 

 

 

প্রপাগান্ডা ছড়ানোর তীব্র নিন্দা জানিয়ে সদর উপজেলার ছিলিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব আন্দোলনে ফরহাদ ইকবাল নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখনকার অনেক নেতাই তখন পালিয়ে থাকত, কিন্তু ফরহাদ ইকবাল কখনো পালিয়ে থাকেন নাই। তখন যুবদলের সিনিয়র অনেক নেতা পালিয়ে থাকলেও সদস্য সচিব তৌহিদুল ইসলাম বাবু কখনো পালিয়ে যাননি। অথচ কোন একজন বিশেষ নেতার সাথে কাজ না করার জন্য তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। আরো কয়েকজনকে বহিস্কার করা হয়েছে। এখন তারা ফরহাদ ইকবালের বিরুদ্ধে কথা বলে’।

 

 

 

 

 

 

 

 

তিনি বলেন, ‘আমি কারো নাম বলতে চাই না। তিনিও একজন ত্যাগী নেতা কিন্তু বহিরাগত। টাঙ্গাইল সদর আসনের সাধারণ মানুষ বহিরাগত কাউকে চায় না’। এসময় তিনি আরো বলেন, ‘টাঙ্গাইলে আবারো যেন পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না পায়। পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি আমরা আর চাই না। আর কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয়’।

 

 

 

 

 

 

এবিষয়ে সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মামুন সরকার বলেন, ‘এখন আমি সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি, কিন্তু ৫ আগস্টের আগে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলাম’। ৫ আগস্টের আগে ফরহাদ ইকবালের ভ‚মিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ফরহাদ ইকবালের ভ‚মিকা ছিল সর্বোচ্চ। বিগত ১৭টি বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন, লড়াই-সংগ্রাম হয়েছে, এই লড়াই-সংগ্রামে সঠিক নেতৃত্ব দিয়েছেন ফরহাদ ভাই’। প্রপাগান্ডা ছড়ানোর বিষয়ে মামুন সরকার বলেন, ‘যারা ফেইক আইডি দিয়ে এ ধরনের প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, তারা দলে ঐক্য নষ্ট করার জন্যই এই কাজগুলো করছে’। এর তীব্র নিন্দা জানান তিনি। এসময় একজন ত্যাগী নেতার বিরুদ্ধে এই ধরনের প্রপাগান্ডা প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান তিনি।

 

 

 

 

 

 

এই বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, ‘দলের ত্যাগী নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আমার সম্পর্কে জানে। আমি দলের ত্যাগী নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথেই থাকতে চাই, তাদের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই। কোন সুবিধাভোগীর জন্য নয়’। এসময় তিনি সামাজ মাধ্যমে প্রপাগান্ডা ছড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ছড়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন বলেন, ‘যারা এই প্রপাগান্ডাগুলো ছড়াচ্ছে, তারা কিন্তু কোন অথেনটিক আইডি থেকে পোস্ট দেয়নি। তাদের কাছে যদি কোন প্রমাণ থাকতো, তাহলে প্রমাণ সাবমিট করে তারা বলতো’। জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘যদি বুকের পাটা থাকে, প্রমাণ সামনে নিয়ে হাজির হয়ে এগুলো বলুক, করুক। এগুলো সবাই করতে পারে। এগুলো শুধু তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করা হচ্ছে’।

 

 

 

 

 

 

 

তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি বিশাল সংগঠন, নির্বাচনে যেকোন নির্বাচনী এলাকায় একাধিক প্রার্থী অবশ্যই থাকতে পারে। তার মানে এই নয় যে, এই ধরনের নোংরামি করতে হবে- এটা দুঃখজনক। প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। মনোনয়ন দিবে হাই কমান্ড এবং যাকে দিবে তার পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। কিন্তু এই নোংরামিগুলোর কোন ভিত্তি নাই। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই’।

 

 

 

 

 

 

 

উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল ছাত্রজীবনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৯০ সালে তিনি সরকারি মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ ছাত্রদল শাখার সভাপতি হন। এরপর ১৯৯১ ও ১৯৯৩ সালে ওই কলেজের ছাত্রসংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। তারপর ১৯৯৯ সালে তিনি টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও ২০০২ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন। ওই বছরই তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের (ঢাকা বিভাগ) সহ-সভাপতি হন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন প্রায় ৫ বছর। এরপর ২০১৭ সালে কাউন্সিল অধিবেশনের মাধ্যমে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ফরহাদ ইকবাল।

 

 

 

 

 

 

 

 

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়