এলেঙ্গা প্রতিনিধি:

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় সার্বজনীন রাধাগোবিন্দ রাসলীলা মন্দিরের ১১টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার(৮ নভেম্বর) সকালে মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাঙা দেখতে পাওয়া যায়। তবে কারা প্রতিমাগুলো ভাঙচুর করেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ঘটনায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
জানা যায়, এলেঙ্গায় রাধাগোবিন্দ রাসলীলা মন্দিরে প্রতিবছরের মতো এবারও গত মঙ্গলবার(৪ নভেম্বর) বাৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার প্রতিদিনের ন্যায় স্থানীয়রা মন্দিরের গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করেন এবং অনেকেই মন্দিরে পূজা দেন। এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্বর্গীয় খুশী মোহন দাশের স্ত্রী দুলালী রাণী মন্দিরে পূজা দিতে গিয়ে দেখতে পান মন্দিরের ১১টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রতিটি প্রতিমার ঘাড় ভেঙে ফেলা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সকালে কে কারা ওই প্রতিমাগুলো ভেঙেছে তা কেউ দেখতে পায়নি।
মন্দিরের আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরাও নেই। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা আরও জানান, ঘটনায় জড়িতদের দ্রæত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
দুলালী রাণী জানান, এদিন সকালে অনেকই মন্দিরে ফুলজল দিয়ে প্রণাম করে গেছেন। তখনও সব ঠিকঠাক ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এসে মন্দিরের ১১টি প্রতিমার মাথা ভাঙা দেখতে পেলে তার ডাক চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। পরে পুলিশ প্রশাসন ঘটনস্থল পরিদর্শন করেছে।
মন্দিরের সদস্য এলেঙ্গা জিতেন্দ্রবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র দাশ জানান, দুইশ’ বছরের পুরানো এই মন্দিরে গ্রামবাসীরা মিলে পূজা করে আসছেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মঙ্গলবার বাৎসরিক পূজা সম্পন্ন হয়েছে। সকালে স্কুলে যাওয়ার পর খবর পান কে বা কারা মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলে গেছে মন্দিরে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে তারপর থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে। তারা অভিযোগ করবেন। তবে বিষয়টি নিয়ে তারা উদ্বিঘেœর মধ্যে রয়েছেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রবাল কমল ভট্টচার্য জানান, দুষ্কৃতকারীরা এলেঙ্গার রাধাগোবিন্দ রাসলীলা মন্দিরের বেশ কিছু প্রতিমা ভেঙে রেখে গেছে। তিনি এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘসময় কথা হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি জানান, কালিহাতী সার্কেলের এএসপি ও থানার ওসি সহ পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিক তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
