প্রথম পাতা / অপরাধ /
চাঞ্চল্যকর ফারুক হত্যা মামলায় এমপি রানা ও তার তিন ভাই সহ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
By দৃষ্টি টিভি on ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১২:৫৭ অপরাহ্ন / no comments
দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইলের চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাই সহ ১৪ জন আসামির বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২/ ১২০/৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। বুধবার(৬ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইলের ১নং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবুল মনসুর মিয়া এই অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির ছিলেন এই মামলায় কারাগারে বন্দি চার আসামি এবং জামিনে থাকা তিন আসামি।
আদালত সূত্র জানায়, সাংসদকে কাশিমপুর কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বুধবার সকাল ৯টার দিকে টাঙ্গাইল আনা হয়। বেলা ১১টায় ১নং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবুল মনসুর মিয়া আদালতে বসেন। প্রথমেই তালিকানুযায়ী চাঞ্চল্যকর ফারুক হত্যা মামলাটির শুনানী শুরু হয়। আসামিদের পক্ষ থেকে মামলাটি পুনঃতদন্ত, চিকিৎসার এবং অভিযোগ গঠন না করার জন্য তিনটি আবেদন করা হয়। আদালত দুটি আবেদন খারিজ করে দেন এবং চিকিৎসার আবেদনটি আমলে নেন। শুনানী শেষে এ মামলার সকল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযোগ গঠনের পর আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৮ অক্টোবর পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ২৩জন স্বাক্ষী রয়েছেন। পরে এমপি রানাকে কঠোর নিরাপত্তায় দুপুর ১২টার দিকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। এমপি রানার টাঙ্গাইল আদালতে হাজির হওয়া উপলক্ষে আদালত ও এর আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এদিকে, আদালত চলাকালে ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আসামিদের বিচার ও ফাঁসির দাবিতে আদালতের বাইরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণ ও শহরের গুরুত্বপুর্ণ স্থানগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। দুপুর ১২ টার দিকে এমপি রানাকে টাঙ্গাইল আদালত থেকে কড়া পুলিশ পাহারায় কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ মামলার বাদী পক্ষের আইজীবী অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম খান ও এস আকবর খান জানান, এর আগেও অসুস্থতা সহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কাশিমপুর কারাকর্তৃপক্ষ এমপি রানাকে আদালতে হাজির না করায় এই হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি আটবার পিছিয়েছে। নবম বারে হাজির হওয়ায় শুনানী শেষে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
নিহত ফারুক আহমদের স্ত্রী এ মামলার বাদী নাহার আহমদ জানান, আমি আজ অত্যন্ত খুশি। দীর্ঘ দিন পর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হওয়ায় খুনিদের সঠিক বিচার হবে বলে আশা করছি।
আসামী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাকী ও জহিরুল ইসলাম জহির জানান, কারাগারে চিকিৎসার জন্য আবেদন, মামলার পুনঃতদন্ত ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করা হয়। আদালত চিকিৎসার আবেদনটি আমলে নেন। তারা অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, সর্বশেষ গত ১৯ জুলাই অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক সুব্রত কুমার বালা আদালতকে জানান, পাইলসের রক্তক্ষরণজনিত কারণে অসুস্থ থাকায় আমানুর ভ্রমণ-উপযোগী নন বলে কারাগারের সহকারী সার্জন জানিয়েছেন। তাই তাঁকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না। এর আগের তারিখ ১২ জুন জানানো হয়, জ্বর, বমি, পাতলা পায়খানা, কোমর ব্যথা ও হৃদরোগের ব্যথার কারণে আমানুর ভ্রমণ-উপযোগী নন।
গত বছরের ৯ নভেম্বর এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির প্রথম তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু এর আগের দিন কাশিমপুর কারাগার থেকে তাঁকে বুকে ব্যথাজনিত কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ টাঙ্গাইলে তাঁর কলেজপাড়া এলাকার বাসার সামনে পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমদ টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত করে। ২০১৪ সালের আগস্টে এ মামলার আসামি আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হন। আদালতে তাঁদের স্বীকারোক্তিতে এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাইয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এরপর থেকে আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা আত্মগোপণে চলে যান। দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর সাংসদ আমানুর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। এর আগে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে বেশ কয়েক দফা আবেদন করেও তিনি জামিন পাননি। গত বছর ৩ ফেব্রুয়ারি এমপি আমানুর, তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা সহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। আমানুরের তিন ভাই পলাতক রয়েছেন।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
মহান মে দিবসে টাঙ্গাইলে আ’লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
-
টাঙ্গাইলে প্রচণ্ড গরমে জেলা আওয়ামী যুবলীগের ছাতা-পানি-বিস্কুট বিতরণ
-
এলেঙ্গায় মহান মে দিবস পালিত
-
মহান মে দিবস আজ :: শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিন
-
ধনবাড়ীতে অটোরিকশায় ট্রাকের ধাক্কায় দুই জন নিহত
-
টাঙ্গাইলে হিটস্ট্রোকে বৃদ্ধের মৃত্যু :: তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত
-
ভূঞাপুরে সবজি ক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক
-
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণ অনুষ্ঠিত