প্রথম পাতা / জাতীয় /
অমর একুশে আজ :: মাথা নত না করার দিন
By দৃষ্টি টিভি on ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ১২:১৭ পূর্বাহ্ন / no comments
দৃষ্টি নিউজ:
আজ ২১ ফেব্রুয়ারি, অমর একুশে। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল মাতৃভাষা বাংলার অধিকার। আজ রক্তাক্ত সেই অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। বাঙালি জাতির ইতিহাসে গভীর শোক ও বেদনার দিন; একই সঙ্গে গৌরবেরও।
পাকিস্তানের জান্তারা কেড়ে নিতে চেয়েছিল আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষা। লুণ্ঠন করতে চেয়েছিল বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য-গর্বের শ্রেষ্ঠ স্থানটি। সেদিন গর্জে ওঠেছিল অ আ ক খ। গর্জে ওঠেছিল বাংলার দামাল সন্তানেরা। বুকের রক্ত দিয়ে তারা প্রতিষ্ঠা করেছে মাতৃভাষার মর্যাদা।
অমর একুশে বাঙালি জাতির জীবনের এক অবিস্মরণীয় দিন। বিশ্বের কোটি কোটি বাঙালির কণ্ঠে আজ উচ্চারিত হবে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি…।’ আজ সরকারি ছুটির দিন।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া দিবসটি স্মরণে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠন বিশেষ কর্মসূচি পালন করবে।
জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং শোকের প্রতীক কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। একুশের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদ মিনার অভিমুখে প্রভাতফেরি, পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, আজিমপুরে শহীদদের কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ এবং বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো একুশের বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
:: রক্তের আখরে লেখা বর্ণমালা ::
১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্সে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানের গভর্নর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ‘উর্দু, কেবল উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা, অন্য কোনো ভাষা নয়’- দাম্ভিক উচ্চারণে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে বাংলাজুড়ে। আন্দোলন তীব্রতর হয়ে উঠলে শাসকগোষ্ঠী নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলার সভা থেকে ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন।
মিছিল বের হয় ১০ জন, ১০ জন করে। পুলিশ বাধা দিলে বাধে সংঘর্ষ। একপর্যায়ে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। শহীদ হন আবুল বরকত, রফিকউদ্দিন আহমদ ও আবদুল জব্বার। ছাত্র মিছিলে গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারিও ঘটে গুলিবর্ষণের ঘটনা।
পুলিশের গুলিতে শহীদ হন সফিউর রহমান, রিকশাচালক আবদুল আউয়াল, অহিউল্লাহসহ কয়েকজন অজ্ঞাত মানুষ। ৭ এপ্রিল মারা যান একুশে ফেব্রুয়ারিতে আহত আবদুস সালাম। রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করে পাকিস্তানি সরকার। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।
১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এলে একুশে ফেব্রুয়ারিকে শোক দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের রীতি চালু হয়। ইতিহাসবিদদের মতে, ভাষার প্রশ্নে একুশের আন্দোলন হলেও প্রকৃত প্রস্তাবে তা ছিল শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদ।
সেদিন আত্ম-অধিকার, সমতাভিত্তিক সমাজ আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রবিনির্মাণের স্বপ্নে জেগে উঠেছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। একুশের পথ ধরে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার সংগ্রাম। জন্ম নেয় স্বাধীন রাষ্ট্র।
একুশ তাই বাঙালির চেতনার প্রতীক। মহান ভাষাশহীদদের স্মরণে সারাদেশে, অগণিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং বিদেশে যেখানে রয়েছে বাঙালি, সেখানেই গড়ে উঠেছে অহংকারের প্রতীক শহীদ মিনার। একুশ তাই আত্মত্যাগের অহংকারে ভাস্বর মহান একটি দিন; জেগে ওঠার প্রেরণা।
দেশমাতৃকার প্রয়োজনে আত্মোৎসর্গ করার শপথ নেয়ার দিন। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষাশহীদদের স্মরণে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বাংলাদেশ ও বিশ্বে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাদের ৩০তম সম্মেলনে ২৮টি দেশের সমর্থনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে একযোগে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
মির্জাপুরে সাপের ছোবলে দুই নারীর মৃত্যু
-
ঢাবিতে তোফাজ্জল হত্যা :: গ্রেপ্তারকৃত জালালের সর্বোচ্চ শাস্তি চায় এলাকাবাসী
-
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্যের যোগদান
-
গণপিটুনির বিষয়ে সংবিধান ও আইনে কী বলা আছে?
-
দেশের চাঁদাবাজদের সমূলে ধ্বংস করা হবে :: শাকিল উজ্জামান
-
এলেঙ্গায় ভ্যানচালক জিহাদ হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
-
ধনবাড়ীতে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত
-
নাগরপুর চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন