প্রথম পাতা / অপরাধ /
‘কুকুর ঘেউ ঘেউ করে মালিকের মরদেহ দেখিয়ে দেয়’
By দৃষ্টি টিভি on ১ মার্চ, ২০২৩ ৬:৫৩ অপরাহ্ন / no comments
বুলবুল মল্লিক:
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সূত্রহীন (ক্লু-লেস) ফরিদ উদ্দিন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করার দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)। এ হত্যাকান্ডে জড়িত তিনজনকে তারা গ্রেপ্তারও করেছে। বুধবার(১ মার্চ) দুপুরে পিবিআই টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মোহাম্ম সিরাজ আমীন প্রেস বিফিংয়ের মাধ্যমে ওই দাবি করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাড়রা এলাকার মো. আনোয়ার তালুকদারের ছেলে মো. অলি তালুকদার(১৯), একই এলাকার মৃত সিরাজ মন্ডলের ছেলে মো. কামাল হোসেন(২৯) ও একই উপজেলার শালিয়ারা এলাকার মো. শফিকুল আলমের ছেলে মো. সোহানুর ইসলাম ফারদিন(২০)।
পিবিআই টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন জানান, নাগরপুর উপজেলার বীর সলীল গ্রামের মৃত তোরাব আলী মিয়ার ছেলে ফরিদ উদ্দিন(৪৫) ইয়াবা ট্যাবলেট খেতেন এবং বিক্রি করতেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় পর্যায়ে একটি স্যালো মেশিন(সেচ পাম্প) চালাতেন।
ফরিদ উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা লিলি চাকুরির জন্য এলাকার বাইরে থাকায় বাড়িতে তিনি একাই থাকতেন। তিনি শখের বসে একটি কুকুর লালন-পালন করতেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি(শুক্রবার) সন্ধ্যায় জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য ফরিদ উদ্দিন নিজস্ব স্যালো মেশিন ঘরে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি।
পরদিন শনিবার(২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ফরিদ উদ্দিনের পালন করা কুকুরটি মাত্রাতিরিক্ত ঘেউ ঘেউ করছিল। বার বার ফরিদের চাচাত ভাই মধু মিয়া ও প্রতিবেশী পান্নু মিয়ার কাছে গিয়ে ঘেউ ঘেউ করছিল এবং কাপড় কাঁমড়ে স্যালো মেশিন ঘরের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।
দুপুরের দিকে তারা দুজন বিরক্ত হয়ে কুকুরের পেছন পেছন গিয়ে মেশিন ঘরের বাইরে তালা ঝুলতে দেখেন। তখন কুকুরটি মেশিন ঘরের চারপাশ ঘুরে ঘুরে চূড়ান্ত পর্যায়ে ঘেউ ঘেউ করতে থাকে।
এক পর্যায়ে তারা মেশিন ঘরের বেড়ার কাটা অংশ দিয়ে ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখেন ফরিদ ওই ঘরে থাকা চৌকির উপর পড়ে আছে। তাদের ডাকে কোন সাড়া না দেওয়ায় তারা ফরিদ উদ্দিনের বাড়ির লোকজনদের খবর দেন।
পরে বাড়ির লোকজন গিয়ে মেশিন ঘরের তালা ভেঙ্গে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ফরিদের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন দেখতে পায় এবং ফরিদ উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। পরে ফরিদের স্ত্রী শারমিন সুলতানা লিলি বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে নাগরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে পরবর্তীতে পিবিআই টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীনের নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক একেএম আলীনূর হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ফরিদ হত্যা রহস্য উদঘাটনের জন্য ছায়া তদন্ত শুরু করে। পিবিআইয়ের টিম সদস্যরা তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ফরিদ হত্যাকান্ডে জড়িত উল্লেখিত তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, ফরিদ নিজে ইয়াবা সেবন করতেন এবং তাদের কাছে বিক্রি করতেন। ঘটনার সময় গ্রেপ্তারকৃতরা ফরিদের কাছে বাকিতে ইয়াবা ট্যাবলেট চাইলে উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। কিন্তু এর আগের বাকি টাকা পরিশোধ না করায় ফরিদ ইয়াবা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি হয়।
এক পর্যায়ে গ্রেপ্তারকৃতরা ফরিদের মাথায় আঘাত করে হাত, পা ও মুখ বেঁধে গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চি করে ফরিদের কাছে থাকা ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে পালিয়ে যায়।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
নাগরপুরে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৃত্যু শয্যায়
-
নাগরপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহত
-
১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৪৯ টাকা
-
ধনবাড়ীতে মে দিবসে শ্রমিকদের কাজে যোগদানে বাধ্য করার অভিযোগ!
-
টাঙ্গাইল পৌরসভায় ১৩৭ বছরেও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি
-
মহান মে দিবসে টাঙ্গাইলে আ’লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
-
টাঙ্গাইলে প্রচণ্ড গরমে জেলা আওয়ামী যুবলীগের ছাতা-পানি-বিস্কুট বিতরণ
-
এলেঙ্গায় মহান মে দিবস পালিত