প্রথম পাতা / অপরাধ /
জন্মদিনেই এসআই উত্তমের শেষ কৃত্য সম্পন্ন
By দৃষ্টি টিভি on ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১:৫৪ পূর্বাহ্ন / no comments
অা. হাই শিবলী:
ঢাকায় বাস চাপায় নিহত এসআই উত্তম সরকারের জন্মদিন ছিল সোমবার(৩ সেপ্টম্বর)। জন্মদিনে নিজ বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা সদরের গৌরীবালা শশ্মানঘাটে তার শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। সোমবার রাত সোয়া ৮টায় ঢাকা থেকে তার মরদেহ উপজেলার পশ্চিম বেতডোবা গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। নিহতের বড় ভাই দীপঙ্কর সরকার সুমন মরদেহটি গ্রহন করেন। এ সময় এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের অবতারনা হয়। শোকে স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো এলাকা। স্ত্রী তমা রাণী ও মাতা কামনা সরকারসহ স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে গোটা পাড়ার বাতাস। সোমবারই রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে উপজেলা সদরের গৌরীবালা শশ্মান ঘাটে তার সৎকার করা হয়।
স্বর্গীয় ভজন সরকার ও কামনা রাণী সরকারের দুই ছেলের মধ্যে উত্তম সরকার ছোট। বড় ছেলে দিপঙ্কর সরকার সুমন ঢাকায় নাভানা গ্রুপে চাকুরি করেন। দিপঙ্কর সরকার সুমন জানান, ১৯৮৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন উত্তম। কালিহাতীর আরএস পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং কালিহাতী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভারতের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং-এ বিবিএ এবং ঢাকার ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে এমবিএ পাস করেন। ২০১২ সালে পুুলিশের এসআই পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা, মোহাম্মদপুর এবং সর্বশেষ রূপনগর থানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি আরও জানান, উত্তম ২০১৪ সালে ঢাকার ধামরাইয়ের তমা রাণী চৌধুরীকে বিয়ে করেন এবং তাদের উপমা সরকার নামের ৩ মাসের কন্যা সন্তান রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়িতে উত্তমের স্ত্রী ৪৮ দিন বয়সী মেয়ে উপমাকে কোলে নিয়ে তমা রাণী ও মা কামনা সরকার বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। তমা রাণী বিলাপ করতে করতে বলছেন, ‘আমি তিন মাসের মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাব, আমার কি হবে, আমাকে কে দেখবে?’ গতকাল (২ সেপ্টেম্বর) একসাথে ওর জন্য কেক, গিফট কিনতে যাওয়ার কথা ছিল, সবসময় ওর সব পছন্দের খাবারগুলো রান্না করে দিতাম, এখন কাকে রান্না করে খাওয়াবো? আগামি বছর জন্ম দিনে স্ত্রী-কন্যাসহ ভারতে বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল বলেও জানান তিনি। পাশের রুমে থাকা বিলাপ করছেন, ‘আমার বাবাকে(উত্তম সরকার) জন্মদিনেই দাহ করা হচ্ছে। আমি এই বেদনা সইতে পারছি না, আমার বুক ফেটে যাচ্ছে’। ছেলের সাথে ঢাকায় থাকতেন মা কামনা রাণী সরকার। ঈদের ছুটিতে কালিহাতী পৌরসভার পশ্চিম বেতডোবা গ্রামের বাড়িতে ভাড়াটিয়ারা বাড়ি যাওয়ায় খালি থাকবে বলে এখানে এসেছিলেন তিনি। দুর্ঘটনার দিন বিকালে ছেলের জন্য পায়েশ রান্না করে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বিকালের ফোনে থেমে যায় কামনা রাণী সরকারের ছেলের কাছে যাওয়া। ছেলেকে পায়েশ খাওয়ানো হলো না মা কামনা রাণী সরকারের। শোকে মুহ্্যমান হয়ে জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি। বিছানায় শুইয়ে রাখা হয়েছিল তাকে। কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো জানান, নিহতের বৌদি।
এসআই উত্তম সরকারের মৃত্যুর খবর পেয়ে সোমবার সকাল থেকেই বাড়িতে লোকজন আসা-যাওয়া করছিল। রাত সোয়া ৮টার দিকে তার মরদেহ কালিহাতীর বাড়িতে পৌঁছানোর পর স্বজনদের মাঝে কান্নার রোল পড়ে যায়। মেষবার উত্তম সরকারকে দেখার জন্য বাড়িতে ছুটে আসেন এলাকার শ’ শ’ নারী-পুরুষ। উত্তমের বন্ধুরা জানায়, উত্তম অনেক মেধাবী এবং ভাল মনের মানুষ ছিলেন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালিহাতী কেন্দ্রীয় গৌরীবালা শশ্মান ঘাটে এসআই উত্তম সরকারের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
টাঙ্গাইলে কাজ ফেলে উধাও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান!
-
ভূঞাপুরে এক ঘণ্টায় এক ভোট
-
টাঙ্গাইলে মাদক মামলায় নারীর যাবজ্জীবন
-
টাঙ্গাইলের তিন উপজেলায় নির্বাচনী সরঞ্জাম ভোট কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে
-
টাঙ্গাইল জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
-
বাসাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু
-
ভূঞাপুরে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে রাজমিস্ত্রী নিহত
-
ধনবাড়ীতে পুলিশের কাছ থেকে হ্যান্ডকাফসহ আসামি ছিনতাই