আজ- ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সোমবার  দুপুর ২:৪৮

আগাম টক বরই ও বিচি বিহীন লেবু চাষে ফেরিওয়ালা মোসলেমের সাফল্য

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কীর্ত্তন খোলা গ্রামের জয়েন উদ্দিনের ছেলে মোসলেম উদ্দিন গত চার বছর ধরে নয় একর জমিতে বিচি বিহীন লেবু এবং আগাম টক বরই চাষ করে সারা টাঙ্গাইল জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। ২০১৬ সালে জেলার সেরা লেবুচাষী হিসেবে স্বীকৃতি পান।
দুই বছর ধরে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, প্রিন্ট মিডিয়ায় সফল চাষী হিসেবে মোসলেমকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কৃষি ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ দ্যা ডেইলি স্টার পত্রিকায় মোসলেমকে নিয়ে একটি নিবন্ধও লিখেছেন।
সেই মোসলেম উদ্দিন সাড়ে চার একর জমিতে একই সঙ্গে মাল্টা ও বরই চাষ করেছেন। প্রতি সারিতে একটি করে টক বরই আর একটি করে মাল্টা গাছ রোপণ করা হয়েছে। মাল্টার ফলনের সময় ফুরিয়েছে মাস তিনেক আগে। এবার ওই বাগানের ১০টি মাল্টা গাছে প্রথম ফল ধরেছিল। পরিবার পরিজনকে নিয়ে খেয়ে-পড়ে ১৬ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেন মোসলেম।
ওই বাগানের সাড়ে ৮০০ গাছেই টক বরই ধরেছে। তাও আবার আগাম। চাষী মোসলেম এক সপ্তাহ ধরে টক বরই বিক্রি শুরু করেছেন। আগাম হওয়ায় এখন বাজারে এক কেজি টক বরই বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকায়। এক মাস পরেই টক বরইয়ে বাজার ভরে যাবে। তখন এক কেজির দাম হবে ১০ থেকে ১৫ টাকা। কৌশলী চাষী মোসলেম এবার আগাম টক বরই বিক্রি করবেন প্রায় দুই টন। এবার বরই বিক্রি করে প্রায় দুই লাখ টাকা পকেটে ভরবেন মোসলেম। একই বাগানে এক সঙ্গে দুটি ফলের বাগান করে উপজেলার অন্যান্য চাষীদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
মোসলেম বলেন, মাল্টাই হবে এ বাগানের প্রধান ফল গাছ। আগাম টক বরই থাকবে মাত্র পাঁচ বছর। পাঁচ বছর পর মাল্টা গাছ প্রসারিত হবে। তখন বরই গাছ সমূলে কেটে ফেলা হবে। মোসলেমের বিশ্বাস আগামি পাঁচ বছরে শুধু আগাম টক বরই থেকেই ৫০ লাখ টাকা আয় করবেন।
মোসলেমের মাল্টা ও টক বরই বাগানে গিয়ে দেখা যায়, মাল্টা গাছের ফাঁকে ফাঁকে রোপণ করা টক বরই গাছে ঝেকে বরই ধরেছে। বরইগুলো পাকতে শুরু করেছে। তিনজন কর্মচারী বাগানের পরিচর্যা করছে। মোসলেম বলেন, এ বাগানে শুধু মাল্টাই থাকবে। আমার চিন্তা হচ্ছে, মাল্টা গাছ বড় হতে হতে এর ফাঁকে আমি ওই জমিই কাজে লাগিয়ে আগাম টক বরই আবাদ করব।
মোসলেম দাবি করেন, দুই বছর আগে যখন মাল্টা ও বরইয়ের ছোট চারা লাগিয়েছিলাম ওই বছর আমি ওই বাগানের জমিতে কলাই চাষ করেছিলাম। একবারই কলাই চাষ করে বাড়তি ৪০ হাজার টাকার কলাই বিক্রি করেছিলাম।
কীর্ত্তন খোলা গ্রামের কলেজ শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মোসলেম আগে ফেরিওয়ালা ছিলেন। গ্রামে গ্রামে বাড়ি বাড়ি ঘুরে কখনো বিদ্যালয়ের সামনে বসে আচার, মুড়ি এসব বিক্রি করে সংসার চালাতেন। প্রথমে লেবু চাষ করে সারা জেলায় সাড়া ফেলেন। সে খুবই পরিশ্রমী। এখন আগাম টকবরই ও একই বাগানে মাল্টা ও লেবু চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফায়জুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ঢাকা ও টাঙ্গাইল থেকে কৃষিবিভাগের বড় কর্মকর্তারা সখীপুরে এলেই আমরা মোসলেমের লেবু বাগানে নিয়ে যাই। এবার মোসলেম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আগাম টক বরই চাষ করেছেন। ওই বাগানে আবার বারি-১ জাতের মাল্টা চাষও করেছেন। মোসলেম চাষাবাদের সব জায়গাতেই সফল।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno