প্রথম পাতা / অপরাধ /
আলোচিত রূপা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় কাল
By দৃষ্টি টিভি on ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮ ৭:২৮ অপরাহ্ন / no comments
দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে রাজধানীর আইডিয়াল ল’ কলেজ ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় আগামিকাল সোমবার(১২ ফেব্রুয়ারি)। গত ৫ ফেব্রুয়ারি আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আইনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট একেএম নাছিমুল আক্তার। তার সহায়তায় রয়েছেন, মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী এস আকবর খান, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এমএ করিম মিয়া ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ।
আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন, অ্যাডভোকেট শামীম চৌধুরী দয়াল ও অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন।
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি একেএম নাছিমুল আক্তার জানান, ঘটনার ১৭৩ দিন আর মামলার ১৭১ দিনের মাথায় আলোচিত এই মামলার রায় হতে যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা করছি। নিহত রূপার পরিবারের চাওয়া আসামিদের চূড়ান্ত শাস্তি। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এধরণের জঘন্য কাজ করার সাহস না পায়।
মামলা সূত্রে প্রকাশ, গত ৩ জানুয়ারি মামলার বাদী অরণখোলা ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ৭ জানুয়ারি সাক্ষ্য প্রদান করেন চার সাক্ষী। তারা হচ্ছেন আব্দুর রশিদ, মামলার বাদি প্রবিন এন কুমার, মো. আবুল হোসেন ও মো. রহিজ উদ্দিন। ৮ জানুয়ারি সাক্ষ্য প্রদান করেন চার জন। তারা হচ্ছেন এমএ রৌফ, মো. ইমান আলী, মো. হাসমত আলী ও মো. লাল মিয়া। ৯ জানুয়ারি মোট তিন জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। এদিন প্রথমে সাক্ষ্য দেন নিহত জাকিয়া সুলতানা রূপার ভাই হাফিজুর রহমান, দ্বিতীয় সাক্ষী দেন আব্দুল বারেক, তৃতীয় সাক্ষী দেন মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। ১৫ জানুয়ারি পঞ্চম দফায় মোট তিন জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। এ সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমে মামলার সাক্ষী লিটন মিয়া, দ্বিতীয় সাক্ষী দেন মো. হযরত আলী, তৃতীয় সাক্ষী দেন রুবেল মিয়া। ১৬ জানুয়ারি ষষ্ঠ দফায় মোট চারজন সাক্ষ্য প্রদান করেন। প্রথমে সাক্ষ্য দেন মামলার ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. সাইদুর রহমান, দ্বিতীয় সাক্ষী পাবলিক কিশোর, তৃতীয় সাক্ষী দেন পুলিশ কনস্টেবল হান্নান ও চতুর্থ সাক্ষী দেন পাবলিক আব্দুল মান্নান। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর এ মামলায় সপ্তম দফায় প্রথমে সাক্ষ্য দেন মামলার সাক্ষী পুলিশ কনস্টোবল মাহবুবুর রহমান, দ্বিতীয় সাক্ষী দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া, তৃতীয় সাক্ষী দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম, চতুর্থ সাক্ষী দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামছুল আলম, পঞ্চম সাক্ষী দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুপম কান্তি দাস। ২১ জানুয়ারি অষ্টম দফায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুপুরের অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কাইয়্যুম সিদ্দিকী খান এবং ছোঁয়া পরিবহনের মালিকের স্বামী আক্তারুজ্জামান ও তার ছেলে সাব্বির হোসেন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাইয়্যুম সিদ্দিকী খানের সাক্ষী অসমাপ্ত থাকায় আদালত ২৩ জানুয়ারি তার অসমাপ্ত সাক্ষ্য গ্রহন ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি(সোমবার) সকাল থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত আইনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। এর আগে সকাল ১১টায় টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন। মামলার আসামিদের উপস্থিতিতে এই বিচারিক কার্যক্রম চলে। আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীগদের আইনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ মামলার রায়ের দিন আগামি ১২ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালতে বিচারক আবুল মনসুর মিয়া।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করে পরিবহণ শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রূপার মরদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় মহিলা হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে সনাক্ত করেন। গত ১৫ অক্টোবর এ মমলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে ৫ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্র দাখিলের পর দিন ১৬ অক্টোবর মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর আদালত এ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহণের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার আসামিরা প্রত্যেকেই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছে।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
মধুপুরে বারোয়ারী মন্দির ও বনে অগ্নিকাণ্ডে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ!
-
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
-
মির্জাপুরে গভীর রাতে কৃষি শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা
-
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস :: তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে- বেড়েছে হয়রানিও
-
করোনার টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে নতুন উপসর্গ
-
নাগরপুরে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৃত্যু শয্যায়
-
নাগরপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহত
-
১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৪৯ টাকা