ইউপি সদস্য গণধোলাইর শিকার

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের বাসাইলে তিন সন্তানের জননীকে কুপ্রস্তাব দেয়ায় এক ইউপি সদস্যকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপার্দ করেছে এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার (১৬ জুন) রাতে উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের তিরঞ্জ গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম (৪৮) তিরঞ্জ গ্রামের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা এবং ফুলকি ইউপি’র ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য। স্থানীয় চা দোকানীর স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী (৩৪) ওই গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা।

চা দোকানীর স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী জানান, একটি মামলায় তার পরিবারের সদস্যরা আসামী হওয়ার সুবাদে সাইফুল মেম্বার গত ৩-৪ দিন যাবত তাকে মোবাইলে কল দিচ্ছিল। রাতে কল দিয়ে পুলিশ আসবে বলে তার পরিবারের পুরুষ সদস্যদেরকে বাড়িতে অবস্থান করতে নিষেধ করেন।

এর মাঝে তাকে বিভিন্ন আপত্তিকর প্রস্তাব দেয়াসহ তার সাথে আপত্তিকর কাজে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছিল। সম্পর্কে ওই নারী ইউপি সদস্যের চাচী হওয়া স্বত্ত্বেও তিনি উত্ত্যক্ত করতেন।

ওই নারী বলেন, এ কারণে আমি তাকে এসব বাজে কথা বলতে নিষেধ করি। এতে সাইফুল আরো বেপোরোয়া আচরণ করতে শুরু করে। বিষয়টি আমি আমার স্বামীসহ পরিবার এবং স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্যকে অবহিত করি। এরপরও বেপরোয়া সাইফুল মেম্বার মঙ্গলবার (১৬ জুন) রাতে আমাকে ত্রিশবারের বেশি কল দেয়।

কোন প্রকার সাড়া না দেয়ায় গভীর রাতে তিনি আমার ঘরে প্রবেশ করেন। এসময় আমার স্বামী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাকে হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসীদের খবর দেয়। এলাকাবাসী এসে সাইফুলকে গণধোলাই দেয়। এসময় স্থানীয় মাতব্বররা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

ফুলকী ইউনিয়র পরিষদের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মলি আক্তার জানান, ভুক্তভোগী ওই নারী বিষয়টি আমাকে জানানোর সাথে সাথে আমি ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামকে এসব অপরাধমূলক কাজ থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করেছি।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি চা-দোকাদারের স্ত্রীর পরিবারসহ এলাকার লোকজনের মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেন। কেন, কোন ঘটনায় তাকে মারধর করা হয়েছে এমন প্রশ্ন শুনে তিনি ফোনটি কেটে দেন।

বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) হারুন অর রশীদ বলেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই ইউপি সদস্য গ্রামের চা বিক্রেতা ও তিন সন্তানের জননীর ঘরে প্রবেশ করায় পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়।

পরে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে বিষয়টি পুলিশ ওই ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে। তবে এ বিষয়ে এখনও থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে