আজ- ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  সকাল ৯:৩২

ঐতিহাসিক আতিয়া জামে মসজিদের দেয়ালে শেওলার আস্তর!

 

দৃষ্টি নিউজ:

সংস্কারের অভাব ও অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছে দেশের অন্যতম প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন টাঙ্গাইলের আতিয়া জামে মসজিদ।
জানাগেছে, প্রায় চারশ’ বছরের পুরনো ইসলামী স্থাপত্যের নিদর্শন টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ঐতিহাসিক আতিয়া জামে মসজিদ। বর্তমানে মসজিদটির তিনটি দেয়ালের মধ্যে একটি দেয়ালে মাটির কারুকাজ করা মৌটিফগুলোতে লোনা ধরে গেছে। শেওলা জমে নষ্ট হতে বসেছে এইসব সৌন্দর্যমন্ডিত কারুকাজ। বৃষ্টি হলে চুইয়ে মসজিদে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে। এ ছাড়া মসজিদের মুসল্লিদের ওজুর জন্য সামনে একটি পুকুর খনন করা হয়েছিল। আগে পুকুরটিতে বিভিন্ন ধরনের কচ্ছপ দেখা যেত। বর্তমানে মসজিদের এই পুকুরটিতে গৃহস্থালীর কাজ সহ কাপড় কাঁচা সহ গণহারে এলাকার লোকজনের গোসলের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে কচ্ছপগুলো এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
ইসলামী স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন আতিয়া জামে মসজিদটি ঘিরে রয়েছে নানা জনশ্রুতি। বিভিন্ন ধর্মের মতাদর্শের মানুষ এখানে আসেন মনের বাসনা পূরণের জন্য- মানত করতে। মজার বিষয় হচ্ছে, রোগমুক্তির জন্য মসজিদের দেয়ালের পোড়ামাটি নিজের গায়ে মাখা ও সেগুলো খাওয়ার গল্প শোনা যায় অনেক দর্শনার্থীর মুখে। আর তাদের এসব কার্যকলাপে মসজিদটির সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
চুন-সুরকি দিয়ে নির্মিত চার কোণে চারটি অষ্টকোণাকৃতির মিনার বিশিষ্ট এই মসজিদটি সুলতানি ও মোগল স্থাপত্য রীতির সুস্পষ্ট নিদর্শন। মসজিদটি আকারে বেশ ছোট, তবে এর মনোমুগ্ধকর কারুকার্য হার মানায় তার আয়তনকে। পাঁচটি প্রবেশদ্বার সম্বলিত মসজিদটির সামনের অংশে পোড়ামাটির বিভিন্ন নকশা আঁকা তিনটি দেয়াল রয়েছে। মসজিদটির কার্নিশে শিল্পকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে তৎকালীন বাংলার বেশকিছু রূপ। এছাড়া পোড়ামাটির তৈরি অসংখ্য ফুলের নকশা থাকার কারণে আতিয়া মসজিদটির সৌন্দর্য আরো কয়েকগুন বেড়েছে। ষোড়শ শতাব্দিতে নির্মিত এই মসজিদটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক এই মসজিদের ছবি বাংলাদেশ সরকার মূদ্রিত ১০ টাকার নোটে স্থান পায়।

দর্শনার্থী ঢাকার উত্তরার জসিম উদ্দীন রোডের বাসিন্দা আবির আহমেদ বলেন, মসজিদটি দেখতে আমি বেশ ক’বার এসেছি। বর্তমানে সংস্কারের অভাবে আতিয়া মসজিদের জীর্ণ দশা। দ্রুত এটির সংস্কার করা প্রয়োজন।
আটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম মল্লিক বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এই মসজিদের সংস্কারের প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখছি। সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি আতিয়া মসজিদের ছবি সহ ১০ টাকার নোটটি পুরনায় মূদ্রণ ও প্রচলন করা হোক।
দেলদুয়ার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক মারুফ বলেন, ঐতিহাসিকতা বিবেচনায় মসজিদটি সংস্কার করা প্রয়োজন। জন গুরুত্বপূর্ণ এই মসজিদ রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে। আশা করি, মসজিদটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno