প্রথম পাতা / অপরাধ /
গোপালপুরে শিক্ষককে বিয়ের নোটিশ দেওয়ার ঘটনায় অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি
By দৃষ্টি টিভি on ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ৬:৫৩ অপরাহ্ন / no comments
দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষককে বিয়ে করার নোটিশ ও চাকুরিচ্যূতির হুমকির বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
এখতিয়ার বহির্ভূত এবং অশোভনীয় কাজের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। শুক্রবার(১ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, সাজনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম গত ২৬ জুলাই হিন্দু ধর্ম বিষয়ক শিক্ষক রনি প্রতাপ পালকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করার নোটিশ দেন। অন্যথায় চাকুরিচ্যূতির হুমকি দেওয়া হয়। ধর্মীয় রীতিনীতি এবং গোত্র-বর্ণের সমস্যায় পাত্রী বাছাইয়ে সময় লাগার কথা জানিয়ে শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল আগামি অগ্রহায়ন মাস পর্যন্ত বিয়ে করার সময় প্রার্থনা করেন।
কিন্তু প্রধান শিক্ষক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বিয়ে সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। বার বার চাপ দেওয়ায় গত ২৩ আগস্ট অফিসে ডেকে নিয়ে সকল শিক্ষকের সামনে প্রধান শিক্ষক প্রাণনাশের হুমকি দিলে ওই সহকারী শিক্ষক নিরাপত্তা চেয়ে পরদিন থানায় সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেন। পরে দুর্নীতি এবং অসদাচরণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী স্কুল প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর বিষয়টি শিক্ষা অধিদপ্তরের নজরে আসে। টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ঘটনা তদন্তে গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানাকে আহ্বায়ক এবং জেলা শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা মো. বায়েজীদ হোসেন ও সহকারী পরিদর্শক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন কমিটি করেন। কমিটি গত ২৭ আগস্ট শুধুমাত্র বিয়ের নোটিশ সংক্রান্ত বিষয় তদন্ত করে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় গত মঙ্গলবার(২৯ আগস্ট) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল বলেন, প্রধান শিক্ষক নিজের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে আমাকে নোটিশ দিয়ে হয়রানি করছেন। ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে না করলে তিনি চাকুরিচ্যূতির হুমকিও দেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় প্রধান শিক্ষক আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন।
সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময় অভিভাবকদের কাছ থেকে ছোটখাট অভিযোগ আসায় ওই শিক্ষককে বার বার বিয়ের জন্য বলা হয়। কিন্তু তিনি বিয়ে করেন নি। তাই নিশ্চিত করার জন্য নোটিশ করা হয়েছে।
গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানা জানান, এর আগে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১২ দফা দুর্নীতি ও অসদাচরণ নিয়ে স্কুলের সকল স্টাফরা জেলা শিক্ষা অফিসে যে অভিযোগ করেন- সেটির তদন্ত কাজও প্রায় শেষ। সেখানেও একাধিক অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
ধোপাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম একজন দুর্নীতিগ্রস্ত লোক। তিনি বিদ্যালয়ের সভাপতির সাক্ষর জাল করে তিন লক্ষাধিক টাকা গোপণে উত্তোলন করেছেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতেই ওই হিন্দু শিক্ষককে বিয়ের নোটিশ দিয়েছেন। আমি প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা বলেন, ঘটনাটি পত্রিকায় দেখে স্বপপ্রণোদিত হয়ে আমি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত প্রতিবেদন মাউশিতে পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ প্রদানকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধান অনুয়ায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রধান শিক্ষক তার স্কুলের একজন সহকারী শিক্ষককে বিয়ের জন্য এ ধরনের নোটিশ দিতে পারেন না। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের এমপিও স্থগিত হতে পারে।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
নাগরপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহত
-
১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৪৯ টাকা
-
ধনবাড়ীতে মে দিবসে শ্রমিকদের কাজে যোগদানে বাধ্য করার অভিযোগ!
-
টাঙ্গাইল পৌরসভায় ১৩৭ বছরেও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি
-
মহান মে দিবসে টাঙ্গাইলে আ’লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
-
টাঙ্গাইলে প্রচণ্ড গরমে জেলা আওয়ামী যুবলীগের ছাতা-পানি-বিস্কুট বিতরণ
-
এলেঙ্গায় মহান মে দিবস পালিত
-
মহান মে দিবস আজ :: শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিন