আজ- ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  রাত ১১:১১

টাঙ্গাইলে ঘুষ লেনদেন নিয়ে আদালত চত্ত্বরে উত্তেজনা

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের আদালত চত্ত্বরে ঘুষের টাকা লেনদেন নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও আইনজীবী সহকারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় উভয় পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ওই ঘটনায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যৗাজিস্ট্রেট আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পক্ষে জারীকারক মো. আজিজুল হক বাদি হয়ে সদর থানায় মামলা এবং আইনজীবী সহকারী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মির্জা কামাল হোসেন প্রতিকার চেয়ে জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতিতে লিখিত আবেদন করেছেন।

এহেন পাল্টাপাল্টি মামলা ও অভিযোগের কারণে আদালত এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।


অভিযোগে প্রকাশ, গত বৃহস্পতিবার(২৩ জুন) টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মো. রাসেল মিয়া নামে একজন আইনজীবী সহকারী ‘এফিডেভিট’ দাখিল করতে গেলে আদালতের জারীকারক মো. আজিজুল হক ৫০০ টাকা ঘুষ দাবি করেন।

ওই ঘুষের টাকা দিতে অস্বীকার করায় তিনি আইনজীবী সহকারীর উপর ক্ষুব্ধ হয়ে গালিগালাজ করেন। খবর পেয়ে আইনজীবী সহকারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসাইন সহ অন্যান্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সাথে তাদের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জারীকারক মো. আজিজুল হক বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসাইন সহ ১২ জনের নামোল্লেখ ও ১০-১২জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করা হয়।

একই ঘটনায় আইনজীবী সহকারী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মির্জা কামাল হোসেন প্রতিকার চেয়ে টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে আবেদন করেছেন।


টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জামাল হোসেন মিঞা, সদস্য নুরুল হক নুরু, ফরহাদ হোসেন, আসাদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন, টিপু মিয়া সহ অনেকেই জানান, টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঘুষ ছাড়া কোন কাজই হয়না।

এফিডেভিট করতে আবেদনকারীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হয়। আইনজীবী সহকারীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা নেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তারা জানান, আদালতে বিচারকরা উপস্থিত না থাকার সময়ই ঘুষ লেনদেন হয়ে থাকে। ফলে আদালতের বিচারকরা আদালতের অনেক বিষয়েই আবগত থাকেন না। তারা আরও জানান, একটি মামলায় আদালত কর্তৃক সমন জারির আদেশ হলে জারীকারক দুই হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় সময় মতো সমন জারি করা হয়না। সেখান থেকেই মূলত ঘটনার সূত্রপাত।


আদালতের জারীকারক ও মামলার বাদি মো. আজিজুল হক জানান, তার পাশের কক্ষে আইনজীবী সহকারীদের সাথে তর্কবিতর্কের শব্দ পেয়ে তিনি এগিয়ে গেলে মারপিটের শিকার হন এবং আইনজীবী সহকারীরা আদালতের দরজায় লাথি মারেন। তাই তিনি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।


টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জারীকারক মো. আজিজুল হক বাদি হয়ে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে, তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।


টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক কবীর হোসেন উজ্জল জানান, আইনজীবী সহকারী সমিতির নেতাদের সাথে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যকার বিরোধ নিস্পত্তির চেষ্টা করা হচ্ছে। সমঝোতা না হলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno