আজ- ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  দুপুর ১২:৩৪

টাঙ্গাইলে প্রতিবন্ধি তরুণী ধর্ষণের বিচার দাবিতে মা-বাবার সংবাদ সম্মেলন

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলে প্রতিবন্ধি তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ন্যায় বিচার পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ধর্ষিতার মা ও বাবা। মঙ্গলবার(৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দেয়া লিখিত বক্তব্যে জানা যায়, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার কাটরা গ্রামের বাসিন্দা ও বর্তমান সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ঢেলি করটিয়াস্থ সাবেক সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের বাসার ভাড়াটিয়া মো. লাল মিয়া ও আলো বেগম। তাদের প্রথম কন্যা সন্তান বুদ্ধি প্রতিবন্ধি(১৭), এক ছেলের বয়স ১০ বছর। ধর্ষিতার বাবা লাল মিয়া করটিয়ার বিশ্বনাথ মহামায়া ঔষধালয় লিমিটেডের ওষুধ বিক্রেতা। গত ২০১৭ সালের ১ থেকে ৩১ জানুয়ারি তারিখের মধ্যে ধর্ষণ অতঃপর অন্তঃসত্ত্বার শিকার হন বুদ্ধি প্রতিবন্ধি এবং মৃগি রোগে আক্রান্ত তরুণী কন্যা(১৭)। বুদ্ধি প্রতিবন্ধি হলেও ধর্ষিতা ঘটনার বিবরণ ও জড়িতদের নাম প্রকাশ করতে পারে। ধর্ষিতার দেয়া ভাষ্যে প্রকাশ পায়, ভাড়াটিয়া বাসার মালিক ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান, বাসার ভাড়াটিয়া ও কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিন এবং কারখানার দর্জি মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদুর ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত। পরে ধর্ষকদের নামোল্লেখ করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় অভিযোগ করা হয়। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকালে ধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিন ও দর্জি মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদুকে আটক করে পুলিশ। তবে দুইদিন আটক রেখে কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিনকে ছেড়ে দিয়ে হয় ২১ সেপ্টেম্বর। এরপর ২১ সেপ্টেম্বর এসকো ফেব্রিক্স এ দর্জি হিসেবে কর্মরত মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদুকে আসামি করে মামলা দায়ের পূর্বক কারাগারে পাঠান তদন্তকারী কর্মকর্তা। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের শিকার মানসিক প্রতিবন্ধি তরুণীর ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেন, টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুম। জবানবন্দিতেও ধর্ষিতা উল্লেখিত তিনজনের নাম বেড়িয়ে আসে।
গত ১১ অক্টোবর প্রতিবন্ধি তরুণী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। ১৮ জানুয়ারি ওই নবজাতক শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করে। বর্তমানে মৃত নবজাতক শিশুর মা ও প্রতিবন্ধি কন্যাকে নিয়ে চরম সামাজিক সমস্যায় দিনানিপাত করছেন বলেও জানান তারা।
এতদস্বত্বেও চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ডিএনএ টেস্টে মামলায় আটক কারখানার দর্জি মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদু জড়িত নয় এমনটি প্রমাণিত হয় ও ১৭ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি পান তিনি। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ধর্ষিতার দেয়া বক্তব্য ও ঘটনায় জড়িত অপর দুই আসামি ভাড়াটিয়া বাসার মালিক সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান এবং এসকো ফেব্রিক্স কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিন প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করলেও পুলিশ তাদের আটক করছেনা। ফলে মানসিক প্রতিবন্ধি তরুণী ধর্ষণের ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এদিকে, উল্লেখিত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মামলাটি তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করছেন। ফলে ধর্ষণের বিচারপ্রাপ্তি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে নীরিহ পরিবারপি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইল মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জেসমিন আক্তার জানান, আদালতে দেয়া ২২ধারার জবানবন্দিতে ধর্ষিতা প্রতিবন্ধি তরুণী ভাড়াটিয়া বাসার মালিক সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান এবং এসকো ফেব্রিক্সে দর্জি হিসেবে কর্মরত মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদুর নাম উল্লেখ করে। এ ঘটনায় হামিদ মিয়াকে আটক ও তার ডিএনএ টেস্ট করা হয়। ডিএনএ টেস্ট রির্পোটে আটক হামিদ মিয়ার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলে আদালত তাকে জামিন প্রদান করেছে। তবে থানার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না পাওয়ায় অপর আসামি সোনলী ব্যাকের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুর রহমানকে আটক ও ডিএনএ টেস্ট করানো সম্ভব হচ্ছেনা।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. সায়েদুর রহমানের সরকারি মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ সহ বিভিন্ন প্রিণ্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno