আজ- ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ রবিবার  সকাল ৬:৫৯

টাঙ্গাইলে লোডশেডিংয়ে অসহনীয় জনজীবন

 

দৃষ্টি নিউজ:

Sub Station2
টাঙ্গাইল জেলায় যেন বিদ্যুৎ যায় না, কখন আসে তাই বোঝা দায়- এমন মন্তব্য জেলাবাসীর। তীব্র তাপদাহে ওষ্ঠাগত জনজীবন। বিচ্ছিন্নভাবে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও ভ্যাপসা গরম কিছুতেই কমছে না। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং। গত এক সপ্তাহ ধরে ২৪ ঘণ্টায় একটানা দুই ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে নাজুক হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। দিনে যেমন রোদের খরতাপ তেমনি রাতে বইছে গরম হাওয়া। বিদ্যুৎ অফিসের চরম গাফিলতি দেখারও কেউ নেই। সবাই যেন বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে নতজানু হয়ে পড়েছে। জেলার নানা বয়সীবিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলায় উঠে এসেছে এ চিত্র।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে অফিসগামী মানুষ, শ্রমিক, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং অল্প বয়সের শিশুরা তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে গরমে অসুস্থ রোগীর সংখ্যা।
আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দিন-রাতের এমন তাপদাহ আরও পাঁচদিন থাকবে। মঙ্গলবার(২৩ মে) সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আসছে ৪৮ ঘণ্টায় কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে আরও জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলার দুই এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।dabdaho-thumbnail
লোডশেডিং ও লাইন মেরামতের নাম করে প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় গ্রাহকরা এখন দিশেহারা। টাঙ্গাইল পৌর শহরে বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার মধ্যে থাকলেও গ্রামের অবস্থা পুরোটাই লেজেগোবরে। তারা গড়ে প্রতিদিন ২৪ ঘন্টার মধ্যে তিন-চার ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ পায় না। এমনকি কখন বিদ্যুৎ থাকবে, কখন লোডশেডিং তাও জানা যায় না। কারণ লোডশেডিং চলাকালে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও পিডিবির অভিযোগ কেন্দ্রের সেলফোনটি ব্যস্ত বা বন্ধ পাওয়া যায়। বিদ্যুতের অভাবে প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমে শিশুসহ নারী ও বয়ষ্ক মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। গরমে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি বাড়ছে।
সূত্রমতে, চলমান জৈষ্ঠ্যর তাপদাহের পরেই সামনে আসছে আষাঢ়ের ঝড়বৃষ্টি। এর মধ্যে আগামী সপ্তাহেই রমজান মাসের শুরু। বর্তমানে রয়েছে কালবৈশাখীর পূর্বাভাস। তীব্র গরম, রমজান ও ঈদের বাজার প্রস্তুতির কারণে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না বিদ্যুৎ বিভাগ। পিডিবি’র প্রতিবেদনে কোন লোডশেডিং নেই দাবি করা হলেও বাস্তব চিত্র উল্টো। লোডশেডিং, বিদ্যুৎবিভ্রাট ও লো-ভোল্টেজের কারণে সবকিছুতেই ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে জনজীবন। যান্ত্রিক ও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী বিকল হচ্ছে। বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা-যাওয়া এবং গ্রামে দীর্ঘ সময়ের লোডশেডিংয়ে আবাসিক গ্রাহকেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। আসছে রমজান মাসের ইফতার-তারাবি ও সেহরির সময় লোডশেডিং না দিয়ে সর্বত্র নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে টাঙ্গাইল জেলাবাসী।24890_1
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে একটু  ঝড়বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়। দুর্বল সঞ্চালন, বিতরণ ব্যবস্থা এবং বেশকিছু পুরনো ও নি¤œমানের ট্রান্সফরমারের কারণে বিভ্রাট বেশি দেখা দিচ্ছে।এর প্রভাব পড়ছে শহর ও গ্রামাঞ্চলে। অথচ কদিন আগে বিদ্যুৎ বিভাগের বিতরণ লাইনের সংস্কার করা হয়েছে। এ বছর কালবৈশাখীসহ বেশি ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এ অবস্থায় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে গত এক সপ্তাহে আগের মতো (চাহিদামতো) বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
টাঙ্গাইল জেলা পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সাহাদৎ হোসেন জানান, পুরো জেলায় ১৪০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। এছাড়া পৌর এলাকায় ২৫ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে কিন্তু আমরা ২০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। প্রায় ৫ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno