আজ- ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ রবিবার  ভোর ৫:০৬

টাঙ্গাইল জেলে বসে সন্ত্রাসীদের সংগঠিত করার অভিযোগে তদন্ত কমিটি

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি কারাগারে অসুস্থ হওয়ায় বুধবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে তাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে সাবেক মেয়র মুক্তির বিরুদ্ধে জেলে বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন লোকদের সাথে যোগাযোগ ও সন্ত্রাসীদের সংগঠিত করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জানাগেছে, টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মঙ্গলবার(১৭ আগস্ট) অনুষ্ঠিত মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির অভিযোগ করেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি কারাগার থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাইরের বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীদের সংগঠিত করছেন।

শহরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। পরে এ বিষয়টি তদন্ত করার জন্য টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান এবং একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জেল সুপারের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।


বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর সহিদুর রহমান খান মুক্তি দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক ছিলেন। পরে গত বছরের ২ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। তারপর থেকে তিনি টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে বন্দি থেকে জামিনে মুক্ত হওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করতে থাকেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার(১৭ আগস্ট) ১১তম বারও তার জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।

টাঙ্গাইলের জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সহিদুর রহমান খান মুক্তি মঙ্গলবার সকালে বুকে ব্যথা অনুভব করেন। পরে কারাগারের চিকিৎসক আবিবুর রহমান পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তদন্ত কমিটি গঠন ও এর কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি জানান, কারা বিভাগের একটি বিষয়ের তদন্তে তিনি কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। সুবিধাজনক সময়ে কমিটির সবাই বসে কর্মপন্থা নির্ধারণ বিষয়ে আলোচনা করে তদন্ত কাজ শুরু করা হবে।

হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. প্রণব কুমার কর্মকার জানান, সহিদুর রহমান খান মুক্তির বুকের ব্যথা পিঠেও ছড়িয়ে পড়ছে। শুয়ে থাকতে গেলে তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। এছাড়া রক্তচাপও বেড়েছে। তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পর তার চিকিৎসার ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রকাশ, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার কলেজ পাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে এ হত্যাকা-ে জড়িত সন্দেহে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে।

আদালতে ওই দু’জনের দেওয়া স্বাীকারোক্তিতে এ হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এর পর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আদালতে আত্মসমর্পন করেন। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। তাদের অন্য দুই ভাই এখনও পলাতক।

সহিদুর রহমান খান মুক্তি চাঞ্চল্যকর ফারুক হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই ও টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খানের ছেলে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno