আজ- ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  রাত ২:১৬

দুই শিশুহত্যার দায়ে তিন জনের মৃত্যুদণ্ড সহ ৯ জনের নানা মেয়াদে সাজা

 

বুলবুল মল্লিক:

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের দুই শিশুকে অপহরণ ও হত্যার দায়ে তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড, তিন জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার(১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাউদ হাসান জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

এছাড়া রায়ে দণ্ডিত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলি (এপিপি) খোরশেদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট্ট গ্রামের শামছুল হকের ছেলে বাহাদুর মিয়া, একই গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে মিল্টন, টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার সুজালিলজা গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে মো. রনি মিয়া।

আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আ. মালেক, শশ্বধরপট্টি গ্রামের মোমরেজের ছেলে জহিরুল ইসলাম, ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট্ট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শাহিনুর শাহা

এবং যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট্ট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে মো. শামিম মিয়া, একই গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ ও মির্জাপুরের আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামের জব্বার মল্লিকের ছেলে মো. জাকির হোসেন।

আদালত একই সাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট্ট গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ পলাতক রয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে প্রকাশ, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি(বুধবার) বিকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছিল।

ওই প্রতিযোগিতা দেখতে যায় ঢাকার ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট এলাকার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল(১০) ও একই গ্রামের প্রবাসী আবু বক্করের ছেলে ইমরান(১১)। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে গিয়ে চতুর্থ শ্রেণির ওই দুই শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হন।

পরদিন ২৮ জানুয়ারি(বৃহস্পতিবার) মোবাইল ফোনে অপহরণকারীরা তাদের দুই জনের মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করে। পরে ২৯ জানুয়ারি(শুক্রবার) রাতে মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে নিখোঁজ ওই দুই শিশুর জবাই করা লাশ উদ্ধার করা হয়।

৩০ জানুয়ারি(শনিবার) এক শিশুর মা জোসনা বেগম বাদি হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে গত ৮ জুন আদালতে চার্জশীট জমা দেয়।

চার্জশীটভুক্ত ১১জনের মধ্যে শহিদুল ইসলাম ও মনোয়ার নামে দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়। এরপর ৮ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়। রায় ঘোষণার সময় ওই ৮ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

বাকি এক আসামি এখনও পলাতক রয়েছে। নিহত শিশু ইমরানের ফুফাত ভাই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মিল্টন ও রনি মিয়া তার চাচাত ভাই।

মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম জানান, ওই হত্যাকা-ের সাথে আসামিরা জড়িত নয়। এই রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। এ বিষয়ে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

মামলার বাদি জোসনা বেগম জানান, আদালতের রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। অতিদ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno