আজ- ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  রাত ৮:২৩

দেওহাটা-ধানতারা সড়কের বেহাল দশায় তিন জেলার মানুষের ভোগান্তি!

 

বুলবুল মল্লিক:

টাঙ্গাইলের দেওহাটা-ধানতারা আঞ্চলিক সড়কের দেওহাটা বাসস্ট্যান্ড থেকে শিল্পপতি নুরুল ইসলাম সেতু পর্যন্ত প্রায় সোয়া চার কিলোমিটার সড়কে কার্পেটিং উঠে- বড় বড় গর্তের কারণে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।

সড়কটির কার্পেটিং উঠে গেছে, চার কিলোমিটারের কোথাও কার্পেটিংয়ের ছিটেফোঁটাও নজরে পরে না। এরমধ্যে সড়কটির একটি ব্রিজের মাঝখানে ভেঙে গর্ত হয়েছে।

ফলে ওই সড়কটি মির্জাপুর সহ পাশের ঢাকা জেলার সাভার ও ধামরাই এবং মানিকগঞ্জ জেলার মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানাগেছে, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার দেওহাটা-ধানতারা সড়কের ওই সোয়া চার কিলোমিটার সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে অন্তত ২০টি ইটভাটা। ওইসব ভাটায় মাটি, কয়লা, লাকরি ও ইট বহনে প্রতিদিন শ’ শ’ ট্রাক চলাচল করছে। সড়কটিতে ভারী ট্রাক চলার কারণে ইট, পিচ, খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ফলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর সহ পাশের ঢাকা জেলার সাভার ও ধামরাই এবং মানিকগঞ্জ জেলার মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়া উপজেলার যোগাযোগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওই আঞ্চলিক পাকা সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখাগেছে, ভারী যান চলাচলের কারণে কার্পেটিং উঠে পুরো সড়কটিতে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের তৈরি হয়েছে।

সড়কে চলাচলকারী ট্রাক থেকে কাঁদামাটি পড়ে পুরো সড়ক পিচ্ছিল ও বিপদজনক হয়ে পড়েছে। ধুলা-বালি থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয়রা পানি ছিটানোর ফলে সড়কে তৈরি হওয়া গর্তের কোথাও কোথাও পানি জমে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে জেলা পরিষদের ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই সড়কের দেওহাটা অংশে ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) একাধিকবার ওই সড়ক সংস্কার ও পাকাকরণের কাজ করলেও জরাজীর্ণ ব্রিজটির কোন সংস্কার বা পুননির্মাণ করা হয়নি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে দেওহাটা থেকে চান্দুলিয়া আলহাজ শিল্পপতি নুরুল ইসলাম সেতু পর্যন্ত সোয়া চার কিলোমিটার সড়ক টাঙ্গাইলের আরএস এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটির সংস্কার করা হয়। এলাকাবাসী কাজের মান নিয়ে অনিয়মের অভিযোগও তুলেন।

স্থানীয়রা জানান, গতবছর বন্যার কারণে ওই সেতুর কয়েক স্থানে ফাটল দেখা দেয়। অতিরিক্ত ভারী যানবাহন চলাচল করায় ফাটলগুলো আস্তে আস্তে বড় হয়ে ভাঙনে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে ব্রিজে গর্তের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় লোকজন ওই গর্ত ঢালাই দিয়ে সংস্কার করে।

মির্জাপুর উপজেলার মীর দেওহাটা গ্রামের শাজাহান, কাদের, টুটুল, জুয়েল, রাজ্জাক সহ অনেকেই জানান, দেওহাটা-ধানতারা আঞ্চলিক সড়কটি অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক।

সময় বাঁচাতে ও দুর্ঘটনা এড়াতে এবং দূরত্ব কম হওয়ায় ঢাকা জেলার ধামরাই ও সাভার, মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া ও মানিকগঞ্জ সদর এবং মির্জাপুরের লোকজন ওই সড়কটি বেশি ব্যবহার করে থাকেন।

তিন বছর আগে সড়কটি নির্মাণ করা হলেও নিম্নমানের কাজ হওয়ায় এলাকাবাসী অভিযোগ করলেও তা আমলে না নেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এলজিইডি’র কয়েকজন ঠিকাদার জানান, দেওহাটা-ধানতারা আঞ্চলিক সড়কটি ৮-১০ টনের যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করা হয়েছিল। বাস্তবে ওই সড়ক দিয়ে ২০-২৫ টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল করছে।

সড়কটি দিয়ে ২০টি ইটভাটা ও একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ভারী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচল করছে। প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমে মাটিভর্তি শ’ শ’ বড় ড্রাম ট্রাকও চলাচল করে থাকে এ কারণে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টাঙ্গাইল এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কারে প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই টেন্ডার আহ্বান করা হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno