আজ- ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  সকাল ৮:৫১

নিহত পুলিশ কনস্টেবল পারভেজের দাফন সম্পন্ন ॥ পরিবারে শোকের মাতম কাটেনি

 

নাগরপুর প্রতিনিধি:

ঢাকায় দায়িত্ব পালনকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের মরদেহ রোববার(২৯ অক্টোবর) বিকালে তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা সদরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

এরআগে পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার, পুলিশ সুপার আজাদ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের জনগণ তার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।


রোববার (২৯ অক্টোবর) মাগরিবের নামাজ শেষে জেলার দৌলতপুর উপজেলার সরকারি প্রমোদা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে উপজেলা সদর কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।

তার আদি বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারি ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডের চরকাটারি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সেকেন্দার আলী মোল্লার বড় ছেলে। তাদের বাড়ি যমুনার করাল গ্রাসে ভেঙে যাওয়ায় তারা বর্তমানে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামে বসবাস করছেন।


এদিকে, আমিরুলের মরদেহ বহনকারী গাড়ি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা-বাবাসহ আত্মীয়স্বজনরা। স্থানীয় মতিলাল ডিগ্রি কলেজ মাঠে তার মরদেহ পৌঁছলে এক হৃদয় বিদারক ঘটনার অবতারণা হয়। তাকে শেষ বারের মতো এক নজর দেখতে শ’ শ’ মানুষ ভির জমায়। এ সময় কান্নায় চারপাশ ভারি হয়ে পড়ে। বড় ভাইকে হারিয়ে হাউমাউ করে কান্না করেন ছোট ভাই বিপ্লব ও তার বোন সেফালি, স্ত্রী রুমা ও মেয়ে তানহা।


অপরদিকে, নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের বর্তমান গ্রাম টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুরে এখনও শোকের মাতম চলছে।


নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের চাচা ও টাঙ্গাইলের বাসাইল থানার এসআই ওয়াজেদ আলী জানান, নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজদের বাড়ি ২০১১ সালের দিকে যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। পরে পরিবারসহ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামে বাড়ি করেন। তার স্ত্রীর নাম রুমা ও সাত বছর বয়সী মেয়ের নাম তানহা ইসলাম। তিনি স্ত্রী ও কন্যা সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকতেন।


নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের স্ত্রী রুমা আক্তার স্বামীর মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। তিনি কোন কথা বলছেন না- মাঝে মধ্যে মেয়ে তানহাকে জড়িয়ে ধরে অঝোর ধারায় চোখের পানি ফেলছেন।


নাগরপুরের দপ্তিয়র ইউনিয়নের সদস্য গোলাম রাব্বানী জানান, আমিরুল ইসলাম পারভেজরা তার এলাকার ভোটার নয়। বসবাস করার সুবাদে তার সম্পর্কে জানতেন, তিনি অত্যন্ত সাদাসিধে মানুষ ছিলেন।

কখনও কারো সাতে-পাঁচে তাকে দেখা যায়নি। তিনি একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক ছিলেন। বীরমুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করতেন।


দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিহত পুলিশ কনস্টেবল পারভেজের বাবা একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। পারভেজ ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মানিকগঞ্জের ঠিকানায় পুলিশের চাকুরিতে যোগদান করেন। তারা দুই ভাই এক বোন।

ছোট ভাইয়ের নাম আজিজুল হক বিপ্লব। তবে বর্তমানে তার পরিবার টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামের বসবাস করলেও তারা এখনও চরকাটারি ইউনিয়নের ভোটার।


প্রসঙ্গত, শনিবার(২৮ অক্টোবর) ঢাকার দৈনিক বাংলার মোড় এলাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পারভেজ আহত হয়। বিকাল ৪টার পর গুরুতর আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno