আজ- ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ রবিবার  রাত ১:৩৮

পথ-ঘাট-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রক্ত রঙের ছড়াছড়ি!

 

সিরাজ আল মাসুদ:

গ্রীষ্মের তীব্র তাপপ্রবাহকে ছাপিয়ে টাঙ্গাইলের পথ-ঘাট, সড়ক-মহাসড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো রক্ত রঙে সেজেছে। যেদিকে দু’চোখ যায় সেদিকেই গ্রীষ্মকালীন বাহারি ফুলের সমারোহ। কৃষ্ণচূড়ার অপার সৌন্দর্য প্রকৃতিতে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। প্রচণ্ড গরমে স্বস্তি বিলাচ্ছে মৃদু বাতাস ও মনোমুগ্ধ কৃষ্ণচূড়া।


বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি ও বহু আন্দোলনের পটভূমির সাথে কৃষ্ণচূড়ার রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। বাংলা সাহিত্যের ছড়া-কবিতা-গানে উপমা হিসেবে নানা রূপে প্রকাশ পেয়েছে এর সৌন্দর্যের বর্ণনা। গ্রীষ্মের দাবদাহেও মনকে আন্দোলিত করে- প্রকৃতিও প্রাণ ফিরে পায় কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে। রুক্ষ্মতা ছাপিয়ে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে উজার করে দেয় আপন মহিমায়।

এই গ্রীষ্মে শহর কিংবা গ্রামের রুক্ষ্ম প্রকৃতিতে নয়া রূপের ঢালি মেলে ধরে দীপ্তি ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া। সবুজ চিরল পাতার ফাঁকে রক্তলাল রঙের গালিচা মেলে ধরেছে কৃষ্ণচূড়া। গ্রীষ্মের ঘামঝরা ক্লান্ত পথিককে প্রশান্তি দিতে সূর্যের প্রখরতায় বাধা দিচ্ছে আপন মনে। তাপপ্রবাহে ওষ্ঠাগত পথিক পুলকিত নয়নে উপভোগ করছে এর সৌন্দর্য। পথচারীরা একবার হলেও থমকে দাঁড়ায়, কৃষ্ণচূড়ার রূপে মোহনীয় মনকে আদৃত করে নেয়।


কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় সাধারণত ১২-১৫ মিটার হলেও শাখা-পল্লবে এটির ব্যাপ্তি বেশ প্রশস্থ। কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়া। এটি ফাবাসিয়ি পরিবারের অন্তর্গত একটি বৃক্ষ। ‘গুলমোহর’ নামেও এর পরিচিতি রয়েছে। এর রক্তিম ফুলগুলো চারটি পাপড়ি যুক্ত। মুকুল ধরার কিছু দিনের মধ্যে পুরো গাছ ফুলে ফুলে ভরে যায়।

কৃষ্ণচূড়ার বড় ফুলগুলো ৭-৮টি গাঢ় লাল পাপড়িতে আবৃত। ফুলের ভেতরের অংশ হালকা হলুদ ও রক্তিম হয়ে থাকে। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেণ্টিমিটারের মতো লম্বা হয়ে থাকে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ উদ্ভিদ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেণ্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০টি উপপত্র(চিরলপাতা) বিশিষ্ট। শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ। বাংলাদেশে কৃষ্ণচূড়া ফোঁটে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত।


কবিগুরু রবি ঠাকুরের ভাষায়- ‘গন্ধে উদাস হাওয়ার মত উড়ে তোমার উত্তরী/ কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরী…../ তরুণ হাসির আড়ালে কোন আগুন ঢাকা রয়/ এ কি গো বিস্ময়!’


জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের দুই লাইন মনোমুগ্ধকর গানে কৃষ্ণচূড়ার বর্ণিত সৌন্দর্য। ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে/ আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে/ রেশমি চুড়ির তালে কৃষ্ণচূড়ার ডালে/ পিউ কাঁহা পিউ কাঁহা ডেকে ওঠে পাপিয়া।’


তবে ক্রমে ক্রমে বাড়ছে কৃষ্ণচূড়া গাছের কদর। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শোভাবর্ধনে কৃষ্ণচূড়া গাছ অতুলনীয়। তাই সৌন্দর্য্যরে পাশাপাশি মানুষ ও প্রকৃতির স্বার্থে বেশি করে কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রকৃতিপ্রেমীরা।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno