আজ- ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  সকাল ১১:৫৮

পল্লী চিকিৎসক সুমন হত্যার বিচার নিয়ে পরিবারের সংশয়

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পল্লী চিকিৎসক শোয়াইব তালুকদার সুমন(৩৫) হত্যা মামলার সব আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ায় সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিয়ে হতাশায় ভূগছে তার পরিবার।

উচ্চ আদালতের জামিনে এসে আসামিরা চোখের সামনে বুক ফুলিয়ে ঘোরাফেরা ও বিচার নিয়ে নানা কথা ছড়ানোয় নিহতের পরিবার আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে। এদিকে গত তিন মাসেও নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও হাতে পায়নি পুলিশ।

ফলে পুলিশ মামলাটি এগিয়ে নিতে না পারায় আদালতে চার্জশিটও দিতে পারছেনা। নিহত শোয়াইব তালুকদার সুমন কালিহাতী উপজেলার বাংড়া ইউনিয়নের দয়থা গ্রামের আলতাফ মিয়ার ছেলে।


সরজমিনে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের স্ত্রী, তিন সন্তানসহ পরিবারের লোকজন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তারা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।


জানা যায়, চলতি বছরের ১৪ জুন পল্লী চিকিৎসক শোয়াইব তালুকদার সুমন ফজরের নামাজ আদায় করতে গিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন ১৫ জুন সকালে উপজেলার আউলটিয়া কানাইগাড়া শ্মশান ঘাটের পাশে গাবগাছের নিচে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ১৬ জুন নিহতের স্ত্রী খালেদা আক্তার বাদি হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৫-৭জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই আসামিরা গা ঢাকা দেয়। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা গত ৭ আগস্ট উচ্চ আদালত থেকে ৪২ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান।

মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে নিহতের পরিবার ও তার স্বজনরা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।


কালিহাতী থানায় দায়েরকৃত মামলার আসামিরা হচ্ছেন- কালিহাতী উপজেলার বাংড়া ইউনিয়নের দয়থা মধ্যপাড়ার আলী আজগরের ছেলে বেলায়েত হোসেন(৪৫), বছির উদ্দিন(৪৩), একই এলাকার ময়েজউদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক(৫০)। ওই ঘটনার মূল আসামি বেলায়েত হোসেনের বাবা আলী আজগর(৬৮)।


নিহতের স্ত্রী খালেদা আক্তার জানান, জমি-জমা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে তার স্বামীকে আসামিরা প্রথমে অপহরণ করে। পরে তাকে বর্বর নির্যাতন চালিয়ে হত্যার পর লাশ গাছের নিচে ফেলে রাখে। ঘটনার তিন মাস অতিবাহিত হলেও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন বের হয়নি।

এঘটনায় কোনও আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করতে পারেনি। উচ্চ আদালত থেকে আসামিরা জামিন পেয়েছে বলে শুনেছেন। আসামিরা যাতে নি¤œ আদালত থেকে জামিন নিতে না পারেন এজন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে তিনি দাবি জানান।


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালিহাতী থানার এসআই মো. রাজু জানান, ওই হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ সকল আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। তিন মাসেও নিহতের লাশের ময়নাতদন্তের রির্পোট এখনও হাতে পাননি। এজন্য মামলার চার্জশিট ও মামলার তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি হচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


বাংড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাসমত আলী জানান, নিহত শোয়াইব তালুকদার সুমন তার পরিচিত ছিলেন। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে তিনি পল্লী চিকিৎসকের পেশা বেছে নিয়েছিলেন।

ওইদিন তিনি ফজরের নামাজ পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন তার লাশ পাওয়া যায়। যেভাবে লাশটি পাওয়া গিয়েছিল তাতে মনে হয়েছে- কেউ তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ওই স্থানে লাশটি ফেলে গিয়েছিল। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের তিনি সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno