আজ- ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  রাত ৪:০৯

বঙ্গবন্ধু রেলসেতু নির্মাণে অগ্রগতি নেই :: ঝুঁকিতে বঙ্গবন্ধুসেতু

 

বুলবুল মল্লিক:

যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে ‘বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের অগ্রগতি এখনো দৃশ্যমান হয়নি। সেতুর ওপরে গতি কমিয়ে ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধুসেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। সেতুতে অপরিকল্পিতভাবে রেলপথ যুক্ত করায় এটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফলে যাত্রীদের নিরাপত্তাও হুমকিতে রয়েছে।

জানাগেছে, যমুনা নদীতে বিদ্যমান সেতুর সমান্তরাল পৃথক একটি নতুন রেলসেতু নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি ‘বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। রেল সেতুটি নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দেবে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। প্রকল্প হাতে নেয়ার সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখনও প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হয়নি। ঠিকাদার নিয়োগও হয়নি। তবে, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে এ প্রকল্পের মূল কাজ শুরু করার আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

‘বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের পরিচালক ও বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক কামরুল আহসান জানান, চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি এখনও বলার মতো হয়নি। এখনও ঠিকাদার নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। তবে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে প্রকল্পের মূল কাজ শুরু করার পরিকল্পনায় কাজ চলছে। গত সাড়ে তিন বছরে ফিজিবিলিটি স্টাডি, সার্ভে ও পরামর্শক নিয়োগের কাজে ব্যয় হয়েছে। স্টিলে নির্মাণাধীন রেলসেতুটির মূল কাজ দ্রæততম সময়ের মধ্যে শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিবিএ’র বঙ্গবন্ধুসেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী জানান, সেতুর নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বের কথা বিবেচনা করে সেতুতে গতি কমিয়ে রেল চলাচল করার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়কে পত্র দেয়া হয়। এরপর থেকে সেতুতে ধীরগতিতে রেল চলাচল করছে। রেলসেতু নির্মাণের কাজ প্রাথমিক পর্যায়েই রয়ে গেছে। প্রকল্পের অগ্রগতি এখনও দৃশ্যমান নয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পৃথক রেল সেতুটি নির্মিত হলে যাত্রাপথ ঝুঁকিমুক্ত তো হবেই সঙ্গে রক্ষা পাবে বঙ্গবন্ধুসেতু। কারণ পৃথক রেলসেতু হয়ে গেলে সেতুতে অপরিকল্পিতভাবে যোগ করা রেলপথটি বন্ধ করে দেয়া হবে।

সূত্রমতে, বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুটি করার জন্য ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ নির্মাণ করা হবে। সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এদিকে, ৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা ঋণ দিতে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে জাইকা। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া চলমান প্রকল্পটি ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা। সেতুর এক পাশে টাঙ্গাইল এবং অন্য পাশে সিরাজগঞ্জ। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নতুন এ সেতুর অবস্থান হবে।

সূত্র জানায়, মহাসড়কের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চার লেনের সেতুটি হবে ডুয়েলগেজ। এতে ওয়াগন ও কন্টেইনার বাল্ক অধিক পরিমাণে বহন করা যাবে। সেতু নির্মাণ হয়ে গেলে উত্তরাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ নিরাপদ ও দ্রুতগামী রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা পাবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যমুনায় নতুন রেলসেতু নির্মাণ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। ভারী মালামালবাহী কন্টেইনার পরিবহন করা যাবে। সেতুর বঙ্গবন্ধুসেতু ইস্ট(বিবিই) এবং বঙ্গবন্ধুসেতু ওয়েস্টে(বিবিডব্লিউ) স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটার বেজড ইন্টারলিংকিং(সিবিআই) সিগনালিং সিস্টেম থাকবে। সেতু বরাবর গ্যাস ট্রান্সমিশন পাইপলাইনও থাকবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জেল হোসেন জানান, যমুনা সেতুতে ট্রেন ওঠার আগে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এরপরই সেতুতে ট্রেন ওঠে। গতি কমানোর জন্য সেতুতে কন্ট্রোলারও ব্যবহার করা হচ্ছে। এজন্যই পৃথক রেল সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি জানান, পৃথক রেলসেতু নির্মাণের কারণ নানাবিধ। রেলসেতুটি হবে স্টিলের তৈরি। এর নির্মাণ সম্পন্ন হলে বিদম্যান সেতুর স্থায়িত্ব বাড়বে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno