আজ- ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  দুপুর ১:১৩

বীরমুক্তিযোদ্ধার সনদ ছেঁড়া চিকিৎসকের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন কাদের সিদ্দিকী

 

দৃষ্টি নিউজ:

মহান মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীর সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘চিকিৎসক শহীদুল্লাহ কায়সারের এত সাহস হলো কী করে- তিনি মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়েন? আমি মনে করি, এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। বীরমুক্তিযোদ্ধা শাজাহান যথাযথ নিয়মে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসার বদলে চরম অপমান করেছেন’। এ ঘটনায় তিনি অবিলম্বে চিকিৎসক শহীদুল্লাহ কায়সারকে বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ও তার ‘চিকিৎসক সনদ’ বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান।

এরআগে সোমবার(২৫ নভেম্বর) সকালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়াকে দেখতে যান। হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। পরে কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে উপরোক্ত কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বীরমুক্তিযোদ্ধা শাজাহানের সনদ ছিঁড়ে ফেলার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে তার কথা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষে ওই বিষয়ে যতটুকু সম্ভব তিনি করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন’।

এ সময় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীর প্রতীক, সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই, টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. রফিকুল ইসলাম, যুব আন্দোলনের সভাপতি আতিকুর রহমান সাদেক প্রমুখ বঙ্গবীরের সঙ্গে ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক(উপ-পরিচালক) ডা. নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, হাসপাতালে এ বীরমুক্তিযোদ্ধার সনদ ছেঁড়ার বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সদরউদ্দিনকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামি বৃহস্পতিবারের(২৮ নভেম্বর) মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান দেখিয়ে অপর বীরমুক্তিযোদ্ধার বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি। আমার পক্ষে যতটা করা সম্ভব তার সবটুকুই করবো।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারী বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকিট ছিঁড়ি নাই। একটি মহল অপপ্রচার চালিয়ে সামাজিক ও সাংগঠনিকভাবে আমাকে হেয় করার অপচেষ্টা করছে’।

প্রকাশ, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পৌরসভার মহেলা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়া তার কোমর ও পায়ের জয়েণ্টের হাড় ফেঁটে যাওয়ায় গত ১৭ নভেম্বর চিকিৎসা নিতে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। ২১ নভেম্বর সকালে হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারী বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ কায়সার ভিজিট করতে এসে রোগীর ফাইল দেখেন। ফাইলে রাখা বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়ার ‘মুক্তিযোদ্ধা সনদ’ দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘এই সনদ কী রোগীর চিকিৎসা করবে, না ডাক্তার করবে?’- এ কথা বলেই তিনি সনদটি ছিঁড়ে ফেলে দেন। ডাক্তারের এহেন আচরণে আশপাশের লোকজন হতবম্ভ হয়ে পড়েন।

বীরমুক্তিযোদ্ধার ‌’সনদ’ ছিঁড়ে ফেলার খবর ছড়িয়ে পড়লে টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কালিহাতী উপজেলার সাবেক কমান্ডার মীর মিজানুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সংস্থার কর্মকর্তা ইউনুস আলী, বাসাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. নূরুল ইসলাম, নাগরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আলহাজ্ব সুজায়েত হোসেন, খন্দকার আনোয়ার হোসেন, মো. সোলায়মান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি মো. মাহমুদুর রহমান খান বিপ্লব, সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান মেনন রাসেল সহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দ তাকে দেখতে হাসপাতালে যান।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno