আজ- ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  রাত ৯:৫১

ভূঞাপুরে সরকারি চাল পাচারের অভিযোগে ওসি ও নাইটগার্ড গ্রেপ্তার

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে দুই ট্রাক খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (১০ টাকা কেজি দরে বিক্রির) চাল পাচারের ঘটনায় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা(ওসি-এলএসডি) বেলাল হোসেন ও নৈশপ্রহরী আল আমীনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ সময় চালবোঝাই ট্রাকটি জব্দ করা হয়। তবে পাচার হওয়া অপর ট্রাকের (ঢাকা মেট্রো ট-৬১-৬১৫১) ৩৬০ বস্তা চালের সন্ধান বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ পায়নি।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভূঞাপুর উপজেলা খাদ্যগুদাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মুক্তা রাণী সাহা বাদি হয়ে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা(ওসি-এলএসডি) বেলাল হোসেন, নৈশপ্রহরী আল-আমীন ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

বুধবার দুপুরে পুলিশ আসামিদের টাঙ্গাইলের আদালতে পাঠালে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জানাগেছে, ভূঞাপুর খাদ্যগুদামের সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে মঙ্গলবার(১৩ এপ্রিল) দুপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরে জনসাধারণের মাঝে বিক্রির চাল ট্রাকযোগে পাশের ঘাটাইল উপজেলার হামিদপুর বাজারে একটি রাইস মিলে বিক্রির জন্য নেওয়া হয়।

পরে বুধবার বিকালে আরও একটি ট্রাকে চাল বোঝাই করা হয়। এতে ২৮০ বস্তায় ১৪ মেট্রিক টন চাল ছিল।

তবে ওই চাল ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের ডিলার নজরুল, ফরহাদ ও দিলীপ, অর্জুনা ইউনিয়নের ডিলার সাখাওয়াত হোসেন লেবুর চাল বলে দাবি করেন খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা(ওসি-এলএসডি) বেলাল হোসেন।

এ বিষয়ে তিনি ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ডিলারদের রেখে যাওয়া চাল বলে লিখিত বক্তব্য দেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ভূঞাপুর উপজেলার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির বিভিন্ন ডিলার কিছু কিছু চাল গুদামে রেখে যায়।

তাদের মধ্যে গাবসারা ইউনিয়নের ফরহাদ হোসেনের ৪ মে.টন, নজরুল ইসলামের ৪ মে.টন, দিলিপের ৪ মে.টন এবং অর্জুনা ইউনিয়নের ডিলার সাখাওয়াত হোসেন লেবুর ২ মে.টন চাল রয়েছে- যা ৩০ কেজি ওজনের সর্বমোট ২৪০ বস্তায় রাখা হয়েছে।

অপর ট্রাকটির বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ওই ট্রাকে চলের বস্তা উঠানোর সময় তিনি উপ-খাদ্য পরিদর্শকের সাথে অলোয়া ইউনিয়নের ডিলারের দোকান পরিদর্শনে যান। এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই।

ভূঞাপুর খাদ্যগুদামের নৈশপ্রহরী আল আমীন তার লিখিত জবাবে জানান, তিনি খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল প্রথমে একটি ট্রাকে ভর্তি করেন। পরে আবার আরও একটি ট্রাকে বাকি চাল ভর্তি করা হয়।

ভূঞাপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মুক্তা রাণী সাহা জানান, ট্রাকে পাচার হওয়া চাল গত মার্চ মাসে খুলনা থেকে ভূঞাপুর গুদামে এসেছিল। তবে চালগুলো বরাদ্দের জন্য এখনও কোন নির্দেশনা আসেনি।

এর মধ্যেই খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কীভাবে তা পাচার করছেন- সেটা তার জানা নেই। এ বিষয়ে দুজনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. আবদুল ওহাব জানান, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি দুদক সংশ্লিষ্ট হওয়ায় জেলা দুদক সমন্বয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান জানান, চাল পাচারের ঘটনায় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা বেলাল হোসেন ও নৈশপ্রহরী আল আমীনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

চাল বোঝাই ট্রাক জব্দ করে পুলিশের জিম্মায় রাখা হয়েছে। পাচার হওয়া অপর ট্রাকের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

টাঙ্গাইল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন জানান, তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া পাচার হওয়া ৩৬০ বস্তা চাল উদ্ধারে আইনশৃখলা বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno