আজ- ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ রবিবার  সন্ধ্যা ৬:৫৬

যমুনার চরে কৃষকের ‘গুপ্তধন’ বাদাম!

 

বুলবুল মল্লিক:

যমুনা নদীতটে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। বর্ষায় দু’কূল ভাসিয়ে নেয়া যমুনা এ মৌসুমে ধু-ধু বালুচর। যমুনার বুকে জেগে ওঠা বালুচর অবহেলিত মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম অবলম্বন। রাক্ষুসে যমুনার ভাঙা-গড়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকা মানুষগুলো বালুচরে দীর্ঘদিন ধরে বাদাম চাষ করছে। চলতি মৌসুমে বাদামের দাম ও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তাই চরের কৃষক বাদামকে ভালোবেসে নাম দিয়েছেন ‘গুপ্তধন’।

সরেজমিনে দেখা যায়, যমুনা নদীর বুকজুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় বালুচর। এসব বালুচরে মাইলের পর মাইল চাষ হচ্ছে চিনা বাদাম। সাদা বালুর জমিনে সবুজ আর সবুজে ছেয়ে গেছে লতানো বাদামের গাছে। প্রতিটি বাদাম গাছের মুঠি ধরে টান দিলেই উঠে আসছে থোকা থোকা সোনালী রঙের চিনা বাদাম। এ যেন বালুর নিচে লুকিয়ে থাকা কৃষকের গুপ্তধন।

ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা চরের কৃষক আজমত আলী জানান, যমুনা চরের বালুমাটি চিনা বাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ বছর বাদাম চাষ করে বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন। প্রতিমণ কাঁচা বাদাম বিক্রি হচ্ছে এজ হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায় এবং প্রতিমণ শুকনো বাদাম বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকায়। এবার ফলন ভালো হওয়ায় এক বিঘা জমিতে ৮ থেকে ১০ মণ বাদাম পাওয়া যাচ্ছে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ হবে।

কৃষক হোসেন মিয়া জানান, বালু মাটিতে অন্য কোন ফসল উৎপাদন করে বাদামের সমপরিমাণ লাভ হয় না। অন্যান্য ফসল উৎপাদনের চেয়ে চিনা বাদামে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় চরাঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক বাদাম চাষ করছেন। বাদাম রোপণের পর অন্য ফসলের ন্যায় পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। নেই রাসায়নিক সারের ব্যবহার। বীজ রোপণ আর পরিপক্ক বাদাম উঠানোর শ্রমিক(কামলা) খরচ ছাড়া তেমন কোনো খরচ নেই বললেই চলে। একটি ফসলেই তাদের সারা বছরের সংসার খরচ উঠে আসে। বালুচরের এ ফসলটি তাদের বেঁচে থাকার জন্য গুপ্তধন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, টাঙ্গাইলে এবার দুই হাজার ২৭২ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদন ধরা হয়েছে তিন হাজার ৪৪ মেট্রিকটন। চলতি বছর বাদামের ফলন ভালো হওয়ার আশা করছেন। এবার বাদাম চাষ করে গোপালপুর, ভূঞাপুর ও নাগরপুর উপজেলার প্রায় এক হাজার কৃষক লাভের মুখ দেখবেন। চলতি মৌসুমে বাদামের ভালো ফলনের পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। বাদাম আবাদে সেচ, সার ও শ্রমিক খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা দিনদিন বাদাম আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। বাজারে বাদামের দামও পাচ্ছেন ভালো।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno