আজ- ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সোমবার  ভোর ৫:৪৩

যানজটে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন যাত্রীরা ॥ ৫০ কিমি. জুড়ে জট

 

দৃষ্টি নিউজ:

বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে তীব্র যানজট আর গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সাধারণ যাত্রীরা। অনেকেই গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার পাশে গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছেন। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা। রোববার (১১ আগস্ট) দিনভর এ চিত্র চোখে পড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব প্রান্ত থেকে করটিয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কে শ’ শ’ যানবাহন আটকা পড়ে থাকে। যানজটের মধ্যে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বেশি সমস্যায় পড়েন নারীরা। কেউ কেউ সড়কের পাশের কোনো বাসা-বাড়িতে ঢুকে সারেন প্রাকৃতিক কাজ।

এদিকে, যানজটে আটকা পড়ে গরমে বগুড়াগামী সোনিয়া নামে এক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মাথায় পানি ঢেলে সুস্থ করার চেষ্টা করে অন্য যাত্রীরা। এছাড়াও নীলফামারীর মুক্তা নামে এক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তার গলা দিয়ে রক্ত বের হতে থাকলে তাকে দ্রুত গাড়ি থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

উত্তরবঙ্গগামী যাত্রী সেবা পরিবহনের আবুল কালাম নামে এক যাত্রী বলেন, ভোর ৫টার দিকে গাবতলী থেকে গাড়িতে উঠি। কিন্তু এখন পর্যন্ত(দুপুর ২টা) টাঙ্গাইল করটিয়া বাইপাসে যানজটে আটকা পড়ে আছি।

কুদ্দুস মিয়া নামে এক ট্রাকচালক বলেন, সকাল ১০টার দিকে ঘারিন্দা বাইপাস থেকে রাবনা বাইপাস এসেছি সাড়ে তিন ঘণ্টায়। যেখানে সাধারণ সময়ে সর্বোচ্চ ৫-৭ মিনিট লাগে।সোলায়মান নামে এক যাত্রী বলেন, বাড়িতে সবার সঙ্গে ঈদ করবো ভেবে গাজিপুরের চন্দ্রা থেকে সকাল ৬টায় গাড়িতে উঠেছি।কিন্তু এখন পর্যন্ত যানজটে করটিয়া বাইপাসেই আটকে রয়েছি। যেভাবে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে মনে হচ্ছে, ঈদ রাস্তায়ই করতে হবে।

বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে ঈদযাত্রার শেষ দিনে টাঙ্গাইল অংশে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এমন স্থবির হয়ে থাকা মহাসড়কে যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ির মধ্যে বসে থেকে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন নারী-শিশুসহ ঈদে ঘরমুখো মানুষ। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বেশ কষ্টে সময় পাড় করছে।

রোববার (১১ আগস্ট) সকাল পৌণে ১১টার দিকে মহাসড়কের বঙ্গবন্ধুসেতু থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোর থেকে এই মহাসড়কে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন চলাচলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এদিকে, যানজটে নাকাল যাত্রীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করার খবর পাওয়া গেছে। আবার যানজটে আটকে পড়া তৃষ্ণার্তদের মাঝে স্থানীয়রা বিনামূল্যে পানি ও সরবত বিতরণ করতেও দেখা গেছে।

পুলিশ জানায়, ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ বার বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায় বন্ধ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতুর ওপরে লক্কর-ঝক্কর বেশ কয়েকটি গাড়ি বিকল হয় এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ের সিরাজগঞ্জ অংশে গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে না চলায় টোল বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ। আর এতেই টাঙ্গাইল অংশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

পুলিশ সূত্র আরও জানায়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মহাসড়কের দু’টি স্থানে গাড়ি বিকল হয়েছিল। পরে ওই গাড়িগুলোকে রেকার দিয়ে সরিয়ে নেয় পুলিশ। এছাড়াও বৃষ্টিপাতের কারণে ও এলেঙ্গায় দুই লেনের সড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ায় এখানে গাড়ির গতি কমে আসে। এর ফলে গাড়িগুলো ঠিকমতো টানতে পারে না।

অপরদিকে, যানবাহনের বাড়তি চাপ এবং চালকদের প্রতিযোগিতা ও খেয়াল খুশিমত গাড়ি চালানোর কারণে এ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। শুক্রবারও দিনভর থেমে গাড়ি চলাচল করেছে। তবে শনিবার ভোর থেকে আরো খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়। দশ হাত চললে আবার প্রায় এক-দেড় ঘণ্টা গাড়ি আটকে থেকেছে। এর ধারাবাহিকতা শনিবার দিন-রাতে অব্যাহত থাকে। আর এই যানজট রোববার পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়।

বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোশারফ হোসেন বলেন, অতিরিক্ত চাপের কারণে সেতুতে টোল আদায় মাঝে মধ্যে বন্ধ রাখা হয়। এ কারণেই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে রোববার বিকালের মধ্যেই মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকবে না বলে ধারণা করছি।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno