আজ- ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  সন্ধ্যা ৬:৩৪

‘হিমালয় দেখি নাই শেখ মুজিবকে দেখেছি’ :: ফিদেল ক্যাস্ট্রো

 

দৃষ্টি নিউজ:


‘আমি হিমালয় দেখি নাই, কিন্তু আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব এবং সাহসিকতায় তিনি হিমালয়সম। আর এভাবেই আমার হিমালয় দর্শন।’ বাঙালির জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে এমন মন্তব্য বিপ্লবী ফিদেল ক্যাস্ট্রোর। আর মহান একাত্তরের ৭ মার্চের পর বিশ্ব গণমাধ্যম শেখ মুজিবুর রহমানকে আখ্যায়িত করে ‘পোয়েট অব পলিটিক্স’ হিসেবে। বিশ্বের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউজ উইকের নিবন্ধ ‘দ্য পয়েট অব পলিটিক্সে’ বলা হয়েছিল, ‘৭ মার্চের ভাষণ কেবল একটি ভাষণ নয় একটি অনন্য কবিতা। এই কবিতার মাধ্যমে তিনি ‘রাজনীতির কবি হিসেবে স্বীকৃতি পান।’
বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল তার অসামান্য ব্যক্তিত্ব আর হিমালয়ের মতো দৃঢ় সাহস। তার কট্টর সমালোচকও তার সামনে সমালোচনা ভুলে গুণমুগ্ধে পরিণত হতেন। অসীম সাহসিকতার জন্য ব্রিটিশ রাজকবি টেড হিউজ বঙ্গবন্ধুকে ‘টাইগার অব বেঙ্গল’ বলে অভিহিত করেছেন। বিখ্যাত লেখক, দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ আঁন্দ্রে মার্লো বঙ্গবন্ধুকে তুলনা করেছিলেন বাঘের বাচ্চার সঙ্গে। আমেরিকার প্রথাবিরোধী কবি অ্যালেন গিনসবার্গ বঙ্গবন্ধুকে বাঙালি জাতির একজন প্রকৃত নেতা মনে করতেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রতিদ্ব›দ্বী পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান সম্মোহনী বাগ্মী ছিলেন। তিনি তার রাজনৈতিক কৌশলে আধিপত্য নিয়ে ব্যবহার করেছেন। এ ক্ষেত্রে আজ পর্যন্ত কোনো বাঙালি নেতা তার সমকক্ষ বা তাকে অতিক্রম করতে পারেননি।
মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বিদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর। বাংলাদেশের শরণার্থী এক কোটি মানুষকে নয় মাস খাদ্যসহ আশ্রয়দান, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ, স্বাধীন বাংলার মুজিবনগর সরকার ও কর্মকর্তাদের বাসস্থান, সর্বোপরি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে যৌথ নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন করার মহান অবদানকে মৃত্যু পর্যন্ত স্মরণ করেছেন বঙ্গবন্ধু। তবে দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে স্বাধীন বাংলার মাটিতে ভারতীয় সৈন্যের উপস্থিতিও কাম্য ছিল না তার। যুদ্ধপরবর্তী প্রথম সাক্ষাতেই ইন্দিরা গান্ধীকে সবিশেষ অনুরোধ করেন, ‘বেহেনজী, বাংলাদেশের মাটি থেকে ভারতীয় সৈন্য আপনি কবে সরিয়ে নেবেন?’ ইন্দিরাজীও হাসতে হাসতে বললেন, ‘এটা হবে আপনার জন্মদিনে আমার উপহার।’ সত্যিকার অর্থে ছয় ফুট দুই ইঞ্চির ঋজু দেহের বুদ্ধিদীপ্ত চোখে মোটা চশমা পরা বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়তার সামনে কোনো স্ট্র্যাটেজি খাটে না। সে জন্য বাংলার মাটিতে কোনো বিদেশি সেনা হাঁটে না। বাংলাদেশের মানুষ চলে মাথা উঁচু করে, সগর্বে। আর তাই বঙ্গবন্ধুকে দেয়া কথা রেখেছিলেন ভারতমাতা ইন্দিরা গান্ধী। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের উপহার স্বরূপ স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করে নেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র তিন মাসের মধ্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সব সেনাসদস্যকে বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাহার করে- যা বিশ্বের যুদ্ধ ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পঞ্চাশ বছর পরেও জার্মানির মাটিতে মার্কিন, সোভিয়েত, ব্রিটিশ ও ফরাসি সেনাবাহিনীর অবস্থান ছিল। কোরিয়া যুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পরও দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সৈন্য আর জাপানে এখনো মার্কিন সৈন্য অবস্থানের কথা উল্লেখ করা যায়। সেদিন রাশিয়াসহ বিশ্বনেতারা উচ্ছ¡সিত প্রশংসা করেছেন, বরেণ্য এই দুই নেতৃত্বের বিশ্বাস, আস্থা আর দেশপ্রেমের।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno