আজ- রবিবার | ৯ নভেম্বর, ২০২৫
২৪ কার্তিক, ১৪৩২ | দুপুর ১:২২
৯ নভেম্বর, ২০২৫
২৪ কার্তিক, ১৪৩২
৯ নভেম্বর, ২০২৫, ২৪ কার্তিক, ১৪৩২

টাকা তুলতে পেনশনভোগিদের ভোগান্তি চরমে!

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের পেনশনভোগিরা টাকা উত্তোলন করতে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে প্রায় সারাদিনই কাটিয়ে দেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দা ও গাছ তলায়। এভাবে প্রতিমাসেই পেনশনভোগী গ্রাহকদের চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

একদিকে বসার অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা ও টয়লেট না থাকায় তাদেরকে চরম বিপাকে পড়তে হয়। ফলে বৃদ্ধ পেনশনভোগিরা প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগিরা।

সরেজমিনে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দেখা যায়, ৬৫ থেকে ৮২ বছর বয়সী পেনশনভোগী বয়োবৃদ্ধরা এদিক-সেদিক ঘুরাফেরা করছেন। কেউ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বেঞ্চে বসে কষ্টের হাই তুলছেন।

পেনশন নিতে আসা টাঙ্গাইল পৌরসভার বাজিতপুর এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জানান, তার স্বামী পাবলিক হেল্থে চাকুরি করতেন। তার স্বামী দীর্ঘ দিন আগে তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রেখে মারা যান। মৃত্যুর পর থেকে আনোয়ারা বেগম তার স্বামীর পেনশনের টাকা তুলতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন। বর্তমানে তার বয়স ৮২ বছর। ইতোমধ্যে শরীরে নানা রোগ বাসা বেঁধেছে। বয়সের ভারে ন্যূব্জ তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। তবু জীবন ধারণের প্রয়োজনে তাকে স্বামীর পেনশনের টাকা তুলতে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার পেনশনভাগী রয়েছে। প্রায় সবাই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা এবং টয়লেট সুবিধা না থাকায় তারা সীমাহীন কষ্টের শিকার হচ্ছেন।

ভুক্তভোগিরা জানায়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কাগজপত্র ঠিক করে সোনালী ব্যাংকে যেতে হয়। সেখানেও একই চিত্র। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে টাকা নিতে হয়।

নাগরপুরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেনশনভোগী এক নারী জানান, মাঝে মাঝে সকাল সাড়ে আটটায় এসে দেখা যায় অপেক্ষা করতে করতে রাত হয়ে যায়। ওই সময় মনে হয় পেনশনের টাকার দরকার নেই। তবু জীবন-যাপনের তাগিদে পেনশন তুলতেই হয়। তাই বাধ্য হয়ে অপেক্ষা করা ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। তিনি দাবি করেন, সরকার নিয়ম করে প্রত্যেকের ব্যাংক অ্যাকাউণ্টে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিলে প্রতিমাসের এ দুর্ভোগ লাঘব হবে।

বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি শাহানুর ইসলাম খান জানান, পেনশনের টাকা তুলতে প্রবীণদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পুরানো পদ্ধতি বাদ দিয়ে অনলাইন পদ্ধতি চালু করলে পেনশনভোগিরা সুবিধা পাবে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, ইতোমধ্যে নতুন পেনশন গ্রহীতাদের টাকা তাদের নিজ ব্যাংক হিসাব নম্বরে দেয়া হচ্ছে। যারা অনেক আগে পেনশনে চলে গেছেন- তাদের টাকাও নিজ নিজ ব্যাংক হিসাব নম্বরে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়