প্রথম পাতা / টাঙ্গাইল / কালিহাতী /
পায়ে হেটে- ভেঙে ভেঙে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ
By দৃষ্টি টিভি on ২২ মে, ২০২০ ৬:৩৩ অপরাহ্ন / no comments
বুলবুল মল্লিক:
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার ঢল নেমেছে। শুক্রবার(২২ মে) ঢাকা, গাজীপুরসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে ভেঙে ভেঙে ও পায়ে হেটে ঘরমুখো মানুষদের বাড়ি ফেরার প্রতিযোগিতা লক্ষ করা গেছে।
এ সুযোগে বাড়তি টাকা আয় করছেন সিএনজি চালিত অটোরিকশা(থ্রি-হুইলার), ব্যাটারি চালিত অটোভ্যান, পিকআপ ভ্যান, মালবাহী ট্রাকগুলোর চালকরা। বঙ্গবন্ধুসেতু পাড় হতে পুলিশি কড়াকড়ি থাকায় ছোট ছোট নৌকায় যমুনা পাড়ি দিচ্ছে ঘরমুখো মানুষ।
জানা যায়, উত্তরবঙ্গের ২৬টি জেলার ৯২টি রুট ১২২ রুটের যানবাহন বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়ক হয়ে যাতায়াত করে থাকে। মহাসড়কে গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় যাত্রীসাধারণ যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসমাগম ঠেকাতে মহাসড়কের চন্দ্রা, মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন স্কয়ার এলাকা, গোড়াই হাইওয়ে থানা চেকপোস্ট, মির্জাপুর বাইপাস, টাঙ্গাইল বাইপাস, এলেঙ্গা ও বঙ্গবন্ধুসেতুর পূর্বপ্রান্তসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শতাধিক পয়েন্টে চেকপোস্ট (চকি) বসানো হয়েছে।
ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, থানা পুলিশ, জেলা পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘরমুখো জনস্রোত ঠেকাতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে গণপরিবহণ বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে আশেকপুর বাইপাস এলাকায় সিএনজি আর ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার রীতিমত অস্থায়ী স্ট্যান্ড বসেছে। এ স্ট্যান্ডের পরিবহণগুলো(বিশেষ করে থ্রি-হুইলার) ভোর থেকে রাত পর্যন্ত এলেঙ্গা, বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব রেল স্টেশন ও ভূঞাপুর পর্যন্ত পৌঁছে দিচ্ছেন যাত্রী। এছাড়া মির্জাপুর থেকে লেগুনা বা সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগেও ওইসব এলাকায় যাচ্ছেন যাত্রীরা।
এদিকে, যমুনার গোবিন্দাসী ঘাট, বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব পাড়ে গড়িলাবাড়ি ঘাটে পুলিশি তৎপরতা জোড়দার করায় যাত্রীরা ভূঞাপুরের মাটিকাটার পাশে ভাবীর ঘাট ও কালিহাতী উপজেলার বেলটিয়াবাড়ী নামক স্থান থেকে উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীরা চুপিসারে ছোট ছোট নৌকায় যমুনা পাড়ি দিচ্ছেন। এতে থ্রি-হুইলার চালক এবং নৌকার মাঝিদের যেমন বাড়তি আয় হচ্ছে, তেমনি যাত্রীরাও পৌছে যাচ্ছেন বাড়ি।
গাজীপুর, চন্দ্রা, ডিইপিজেড, বাইপাইল ও রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে রওনা দেয়া পাবনার যাত্রী খায়রুল, মোহাম্মদ আরী, ইশ্বরদীর যাত্রী রহমান, নাজমুল, আব্দুস সাত্তার, কুড়িগ্রামের যাত্রী আসাদুল মিয়া, রাশিদুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জের যাত্রী হেনা বেগম, নুরুল ইসলাম এ রকম অনেকেই জানান, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তারা কাজ করেন। ঈদকে সামনে রেখে তারা বাড়ি ফিরছেন।
গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় তারা ভেঙে ভেঙে ছোট ছোট গাড়িতে কখনো কখনো পায়ে হেটে বাড়ি যাচ্ছেন। এতে তাদের বাড়তি টাকা খরচ হলেও পরিবার নিয়ে ঈদ করার জন্যই তারা কষ্ট স্বীকার করছেন। করোনা ভাইরাসে সরকারি নির্দেশনার বিষয়ে তারা জানান, তারা তো মাস্ক পড়ে সামাজিক দূরত্ব মেনেই বাড়ি ফিরছেন। তবে রাস্তায় কখনো কখনো(থ্রি-হুইলার পেলে) অল্প সময়ের জন্য সামাজিক দূরত্ব বিনষ্ট হচ্ছে।
তারা আরো জানান, ভূঞাপুর থেকে নৌপথে সিরাজগঞ্জ হয়ে কোন না কোন ভাবে ছোট-খাট বাহনে চড়ে বা পায়ে হেটেই তাদের বাড়ি পৌঁছতে হবে। গণপরিবহণে তাদের যেখানে সাড়ে তিনশ’ থেকে সাড়ে চারশ’ টাকা ভাড়া লাগত এখন সেখানে খরচ হচ্ছে আটশ’ থেকে এক হাজার টাকা।
নদী পাড় হওয়া বগুড়াগামী সহবত মিয়া, পঞ্চগড়গামী শফিকুল, সিরাজগঞ্জগামী আসাবুর জানান, মহাসড়কে পরিবহণ বন্ধ থাকায় তারা আব্দুল্লাহপুর ও বাইপাইল থেকে ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন বাহনে এলেঙ্গা পর্যন্ত আসেন। সেখান থেকে কেউ পায়ে হেটে আবার কেউ ব্যাটারি চালিত ভ্যানে বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব রেল স্টেশনে আসেন। এরপর পায়ে হেটে বেলটিয়াবাড়ী যমুনা নদীর ঘাটে পৌঁছেন। এখান থেকে ছোট নৌকায় যমুনা নদী পাড় হয়ে একইভাবে গন্তব্যে পৌঁছবেন।
কালিহাতী উপজেলার বেলটিয়া গ্রামের মারুফ, রায়হান আলেক চান, আমিনুর সহ অনেকেই জানান, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন এসে নদী পাড় হচ্ছে। এতে এলাকাবাসীর করোনা ঝুঁকি বাড়ছে। গড়িলাবাড়ী ঘাটে পুলিশি তৎপরতা থাকায় মানুষজন বেলটিয়াবাড়ী এসে ছোট নৌকায় যমুনা পাড় হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) ইফতেখার রোকন জানান, গণপরিবহণ বন্ধ থাকা স্বত্তেও ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কে যাত্রী বেড়েছে। এ সুযোগে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, কেউ কেউ অসুস্থতার অযুহাতে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেও বাড়ি ফিরছেন। সন্দেহজনক কিছু গাড়ি প্রবেশে বাঁধা দেওয়া হলেও বেশির ভাগ গাড়িই সেতু পাড় হচ্ছে। একই কারণে মহাসড়কে মোটরসাইকেলেও সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বৃহস্পতিবার(২১ মে) ও শুক্রবার তিন শতাধিক মোটরসাইকেল সেতুর গোলচত্তর এলাকা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলআমিন জানান, মহাসড়ক দিয়ে লোকজন ট্রাক, মাইক্রোবাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা(থ্রি-হুইলার), ভ্যান ও পায়ে হেঁটে নৌঘাটে ভিড় জমাচ্ছে। ঘাট এলাকায় পুলিশের টিম কাজ করছে যাতে কেউ নৌঘাটে ভিড় জমাতে বা নদী পাড় হতে না পারে।
বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) কাজী আইয়ুবুর রহমান জানান, বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব বেলটিয়া ও গড়িলাবাড়ী ঘাটে পুলিশের টিম কাজ করছে। কেউ নৌকাযোগে নদী পাড় হয়নি। কাউকে পাড় হতে দেয়া হচ্ছে না।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
মহান মে দিবসে টাঙ্গাইলে আ’লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
-
টাঙ্গাইলে প্রচণ্ড গরমে জেলা আওয়ামী যুবলীগের ছাতা-পানি-বিস্কুট বিতরণ
-
এলেঙ্গায় মহান মে দিবস পালিত
-
মহান মে দিবস আজ :: শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিন
-
ধনবাড়ীতে অটোরিকশায় ট্রাকের ধাক্কায় দুই জন নিহত
-
টাঙ্গাইলে হিটস্ট্রোকে বৃদ্ধের মৃত্যু :: তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত
-
ভূঞাপুরে সবজি ক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক
-
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণ অনুষ্ঠিত