আ’লীগে অনুপ্রবশকারীর বহিস্কার ও শাস্তি দাবি

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে শনিবার(৯ নভেম্বর) আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের বহিস্কার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, গোপালপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ।

গোপালপুরের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও হাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, গোপালপুর পৌরসভার মেয়র রকিবুল হক ছানা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মীর রেজাউল হক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম আক্তার মুক্তা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী খন্দকার গিয়াস উদ্দীন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুস সোবহান তুলা, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান সোহেল, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম শফিক, যুগ্ম-আহ্বায়ক আলমগীর কবীর রানা প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল কাদের তালুকদার লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের আজগড়া গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার আলাউদ্দীন তালুকদার তারার পুত্র ও ছাত্রদল নেতা আমিনুল ইসলাম নিক্সন স্থানীয় আ’লীগের সার্থান্বেষী গোষ্ঠীর যোগসাজশে হাদিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে বসানো হয়।

রাজাকারপুত্র ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আমিনুল ইসলাম নিক্সন হাদিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হয়েই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী লোকজন নিয়ে ওই ইউনিয়নে একটি বলয় তৈরি করেন। সেই বলয়ের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে তিনি এলাকার ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি ও নাজেহাল করছেন।

অভিযোগে বলা হয়, তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদের নাম ভাঙ্গিয়ে ‘রান ভেডেলপমেন্ট সোসাইটি’ নামে একাধিক অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় স্থাপন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

এসব স্কুলে দুই শতাধিক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং প্রতিজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমপিও ভূক্তির নামে ১০-১২ লাখ টাকা করে আদায় করেছেন। অথচ ৫-৬ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এসব স্কুল জেলা বা উপজেলা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক এ পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন পায়নি। এমনকি এসব স্কুলে পাঠদানের অনুমোদনও মিলেনি। গ্রামের অসহায় বেকাররা সরকারি অনুদানে বেতনভাতা পাওয়ার আশায় চাকুরির লক্ষে লাখ লাখ টাকা ঘুষ দেন।

এভাবে তিনি দলীয় সাইনবোর্ড ব্যবহার করে প্রতারণামূলকভাবে কোটি কোটি টাকা পকেটস্থ করছেন। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নাম। তারা কূটকৌশলে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের নাম ভাঙ্গিয়ে এবং সরকারি দলের ইমেজ ক্ষুন্ন করে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে রোজগার করছেন।

সরকার সম্প্রতি সারাদেশে রাজাকারের তালিকা তৈরি করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে চিঠি দিয়েছে। গোপালপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যেসব রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের নাম তালিকাভূক্ত করেছে আমিনুল ইসলাম নিক্সনের বাবা আলাউদ্দীন তালুকদার তারা তার মধ্যে অন্যতম। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার আলা উদ্দিন তালুকদার তারা গণহত্যার সাথেও জড়িত ছিলেন।

বক্তারা আমিনুল ইসলাম নিক্সনকে দল থেকে বহিস্কার এবং প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নাম ব্যবহার করে প্রতারণামূলকভাবে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগটি সরেজমিন তদন্ত করে তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এ বিষয়ে আমিনুল ইসলাম নিক্সন জানান, তার বাবা কখনোই রাজাকার ছিলেন না। এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও অপপ্রচার মাত্র। অটিস্টিক বিদ্যালয় স্থাপন করে কারো কাছ থেকে তিনি কোনো টাকা-পয়সা নেননি।

তিনি রান ভেডেলপমেন্ট সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পরোক্ষ সমর্থনে রান ডেভেলপমেন্ট সারা দেশে কাজ করছে। অটিস্টিক স্কুলগুলোর পরিদর্শন শেষ করেছেন সমাজসেবা বিভাগ। খুব দ্রুত এসব স্কুলের শিক্ষকরা সরকারি বেতনভাতা পাওয়া শুরু করবেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে