আজ- ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার  বিকাল ৩:৫৮

এলেংজানী নদীতে ইউপি চেয়ারম্যানের অবৈধ বাংলা ড্রেজার!

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার এলেংজানী নদীতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে অবৈধ বাংলা ড্রেজার বসানো হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রতিরোধে বাংলপা ড্রেজারটি চালু করা হয়নি।

ছিলিমপুর ইউনিয়নের একটি খাল ভরাট করতে এলেংজানী নদীর কুচিয়ামারী গ্রামের অংশে ওই ড্রেজার বসানো হয়েছে।

সদর উপজেলার ছিলিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাদেক আলীর নেতৃত্বে ওই ইউনিয়নের রূপসী গ্রামে আরও একটি ড্রেজার বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

একইভাবে ওই ইউনিয়নের সূবর্ণতলীর নয়াপাড়া ধলেশ^রী নদীতে তিনটি বাংলা ড্রেজার বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন ও বিক্রির মহোৎসব চলছে। সন্তোষ পুলিশ ফাঁড়িতে মাসোহারা হিসেবে টাকা দিয়ে তারা ব্যবসা চালাচ্ছেন- এমন দাবি ওই বালু ব্যবসায়ীদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছিলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সাদেক আলী তার নিজ গ্রাম পাকুল্লা বৌলিপাড়া গ্রামের একটি খাল ভরাটের জন্য কুচিয়ামারী গ্রামে এলেংজানী নদীতে বাংলা ড্রেজার বসিয়েছেন।

ওই গ্রামের দয়াল নামে এক বালু ব্যবসায়ী বেলচা দিয়ে বালু তুলে ট্রাক্টরের মাধ্যমে দেদারসে বিক্রি করছেন।

ওই ইউনিয়নের সূবর্ণতলীর নয়াপাড়ায় ধলেশ্বরী নদীতে শহিদুল, জাহাঙ্গীর ও রসুলদি নামে তিন বালু ব্যবসায়ীর তিনটি বাংলা ড্রেজার বসানো হয়েছে। এছাড়াও বেলচা দিয়ে নদীর বালু তুলে ট্রাক্টরের মাধ্যমে বিক্রি করছেন কুদ্দুস ও সবুজ নামের দুই বালু ব্যবসায়ী।

কুচিয়ামারী গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম সহ একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, তিন শতাধিক ব্যক্তির বসবাস ওই গ্রামে। সম্প্রতি বন্যায় গ্রামটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে গ্রামটির ভাঙন ঠেকাতে এলেংজানী নদীর তীরে ব্লক স্থাপনের আশ্বস দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। আশ্বাসের প্রায় ছয় মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত ব্লক বসেনি।

স্থানীয় লোকজনের বাঁধার কারণে ইউপি চেয়ারম্যানের বাংলা ড্রেজারটি এখনও চালু হয়নি। তবে ড্রেজার চালু করতে চেয়ারম্যানের লোকজন ব্যাপক চেষ্টা-তদবির করছেন।

ড্রেজার চালানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও স্থানীয় এমপি’র অনুমতি পেয়েছেন বলেও দাবি করছেন তারা। একই সাথে জমির মালিকের কাছ থেকে কিনে নিয়ে বেলচা দিয়ে বালু তুলে ট্রাক্টরের মাধ্যমে বিক্রি করছেন দয়াল নামে এক বালু ব্যবসায়ী।

এলাকাবাসীর আশঙ্কা, অপরিকল্পিতভাবে এভাবে নদী কাটা অব্যাহত থাকলে আগামি বর্ষায় গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

এলেংজানী নদীতে বসানো ড্রেজার পরিচালনাকারী মশিউর বলেন, চেয়ারম্যানের কথায় তারা এ নদীতে ওই বাংলা ড্রেজার বসিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডির তত্ত্বাবধানে গ্রামের একটি খাল ভরাটের কাজ পেয়েছেন চেয়ারম্যান। নদীতে ড্রেজার চালানো জন্য এমপি ও ইউএনও মহাদয়ের অনুমতি নেওয়া হয়েছে।

সূবর্ণতলীর নয়াপাড়া গ্রামের জমি বিক্রেতা তারা মিয়া বলেন, ধলেশ্বরী নদীর তীর ঘেষে তার ১১ শতাংশ জমি রয়েছে। ওই জমির মাটি দশ হাজার টাকায় তিনি স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী কুদ্দুসের কাছে বিক্রি করেছেন। সেই মাটি বেলচা দিয়ে উত্তোলন করে ট্রাক্টরের মাধ্যমে বিক্রি করছেন কুদ্দুস।

সন্তোষ পুলিশ ফাঁড়ির এক কর্মকর্তা প্রতি মাসে প্রত্যেক বালু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮ হাজার করে টাকা নিচ্ছেন- এমন দাবি করেছেন বালু ব্যবসায়ীরা।

ছিলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সাদেক আলী বলেন, পাকুল্লা বৌলিপাড়া গ্রামবাসীর চলাচলে একটি রাস্তা নির্মাণের জন্য ড্রেজারটি বসানো হয়েছে। রাস্তা নির্মাণের জন্য এমপি সাহেব তাকে ২০টন টিআর দিয়েছেন।

তবে কোথাও মাটি না পেয়ে রাস্তাটি নির্মাণের স্বার্থে তাকে নদীতে বাংলা ড্রেজার বসাতে হয়েছে।

মাসোহারা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে সন্তোষ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, গ্রামগুলো প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় নিয়মিত অভিযান চালানো সম্ভব হয়না।

এরপরও ফাঁড়ি পুলিশ কয়েক দফা এসব স্থানে অভিযান চালিয়েছে। তবে তাদের জরিমানা বা পুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় এগুলো আবার চালু হচ্ছে। এরপরও এগুলো বন্ধে আবার তারা অভিযান চালাবেন বলে জানান তিনি।

অতিদ্রুতই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. খায়রুল ইসলাম।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno