আজ- ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  সকাল ৯:১০

পাল্টাপাল্টি মামলায় ঘাটাইলের আ’লীগের রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে!

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি হামলা ও মামলা দায়েরের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। তবে ঘটনাগুলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঘিরে হলেও এর নেপথ্যে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী দুইপক্ষ জড়িত রয়েছে।

এক পক্ষে রয়েছেন- উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু। অন্য পক্ষে রয়েছেন- সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা।

এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের দ্বন্দ্ব আবারও প্রকাশ পেয়েছে। এ নিয়ে উপজেলার গন্ডি পেরিয়ে জেলা সদরেও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।


স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, গত ২৫ এপ্রিল সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার অনুসারীদের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম লেবুর অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে রানার অনুসারী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হায়দার তালুকদার এবং সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী মো. জুনায়েদ আহত হন। জুনায়েদকে দা দিয়ে কোপানো হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় জুনায়েদকে উদ্ধার করে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।


এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল শহিদুল ইসলাম লেবুর অনুসারী ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন জুনায়েদের ভাই জাহিদুল ইসলাম। মামলা দায়েরের পর এলাকা ছেড়ে চলে যান উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবু সাঈদ ওরফে রুবেল।

তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত ৪ মে এলাকায় ফেরেন। পরদিন ৫ মে সকালে তার ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা করে। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেথানে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।


আহত আবু সাঈদ ঘাটাইল জিবিজি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি)। তিনি ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবুর অনুসারী। আবু সাঈদের ওপর হামলার জন্য শহিদুল ইসলাম টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার অনুসারীদের দায়ী করেছেন।

এ বিষয়ে আবু সাঈদ রুবেলের স্ত্রী নুপুর আক্তার বাদি হয়ে আনেহলা ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার মো. শাহজাহান সহ ১৩ জনের নামোল্লেখ ও আরও ৮-১০জন অজ্ঞাতদের আসামি করে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।


আবু সাঈদের স্বজনরা জানান, ঘটনার দিন শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে আবু সাঈদ ঘাটাইল জিবিজি কলেজ গেট এলাকায় যান। সে সময় দেশীয় অস্ত্রধারী একদল যুবক তার ওপর হামলা করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সাঈদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠানো হয়।


ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু জানান, টাঙ্গাইলসহ সারা দেশের মানুষ জানে আমানুর রহমান খান রানা একজন সন্ত্রাসী। তারা কখনও রাজনীতি করেনি। তারা সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি করেছে। জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আমানুর রহমান খান রানা।

তাই তাদের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ বা ভালো পরিবেশ পাওয়ার কোনো আশা ঘাটাইলবাসী করতে পারে না। আবু সাঈদ রুবেলের ওপর হামলার পরিকল্পনা তার বাসাতেই হয়েছে। তার নির্দেশেই এ হামলা। তারা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানান। একই সঙ্গে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানান। সুযোগ পেলে আমানুরের সন্ত্রাসী বাহিনী তার ওপরও বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা সরছেন।


এ বিষয়ে আমানুর রহমান খান রানা গ্রুপের নেতা আনেহলা ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার মো. শাহজাহান জানান, যে কোনো ঘটনা ঘটলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার অনুসারীদের দায়ী করা হয়। এর মধ্য দিয়ে শহিদুল ইসলাম লেবু রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চান। সাঈদের ওপর হামলার সঙ্গে তিনি বা তাদের কেউ জড়িত নয়।


ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) লোকমান হোসেন জানান, আবু সাঈদ রুবেলের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ঘাটাইলের পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত রয়েছে। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno