আজ- ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সোমবার  রাত ৪:০৫

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আজ

 

দৃষ্টি নিউজ:

‘যতদিন রবে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-গৌরী বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’ আজ ১৭ মার্চ। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিন। ১৯২০ সালের এ দিনে তিনি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ার সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এ দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
আজ সরকারি ছুটির দিন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপনে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম সায়েরা খাতুন। পরিবারের চার কন্যা এবং দুই পুত্রের সংসারে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয়। শৈশবে খোকা নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ এবং জনগণের প্রতি মমত্ববোধের কারণে পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। বিশ্ব ইতিহাসে ঠাঁই করে নেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে। গত বছর ইউনেস্কো ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে তার ভাষণ সারা বিশ্বের অন্যতম ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজীবন সংগ্রামী বঙ্গবন্ধুর যখন জন্ম হয় তখন ছিল ব্রিটিশ রাজত্বের শেষ অধ্যায়। ১৯২৭ সালে শেখ মুজিব গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে বঙ্গবন্ধু প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। এরপর গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান নাম মওলানা আজাদ কলেজ) ভর্তি হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত এ কলেজটি তখন বেশ নামকরা ছিল। এ কলেজ থেকে সক্রিয়ভাবে তিনি ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে অর্থাৎ দেশবিভাগের বছর এ কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে গঠন করেন ছাত্রলীগ। পাকিস্তান-ভারত পৃথক হয়ে যাওয়ার পর শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। বাঙালির এই নেতা ১৯৩৮ সালে ১৮ বছর বয়সে বিয়ে করেন ফজিলাতুন্নেসাকে। এ দম্পতির ঘরে দুই কন্যা এবং তিন পুত্রের জন্ম হয়। কন্যারা হলেন শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা। আর পুত্রদের নাম শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং শেখ রাসেল। তিনজন পুত্রই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে বিপথগামী সেনাদের হাতে নিহত হন।
অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধু কালের পরিক্রমায় কখনো ভাষার জন্য, কখনো স্বাধিকারের জন্য সক্রিয় আন্দোলনে অংশ নেন। এসবের আড়ালে গড়ে উঠে স্বাধীনতা আন্দোলন। ১৯৫৪ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ‘৫৫ সালে দলে মুসলিম নাম বাদ দেয়ার পর ‘৬৬ সালে হন সভাপতি। এরপর ‘৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ‘৬৯-এর গণঅভু্যত্থান পেরিয়ে ৭০ সালের নির্বাচনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর এ ঐতিহাসিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেদিন গোটা বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
এ ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্ত্মানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কারাগারে আটক রেখে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী তার প্রথম বিচার শুরু করে। তার নির্দেশনা অনুযায়ী ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বীর বাঙালি ‘৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে নেয়। জন্ম হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। ‘৭২-এর ১০ জানুয়ারি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের চাপে পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরেই তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন। কিন্তু সেই সুযোগ বেশিদিন পাননি তিনি। ১৯৭৫ সালে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি তথা একটি শোষণমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তিনি জাতীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর কিছুদিনের মধ্যেই ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকদের বুলেটে সপরিবারে নিহত হন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno