আজ- ১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  রাত ১২:৪৯

বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে কর্মস্থলমুখী মানুষের ঢল

 

বুলবুল মল্লিক:

কঠোর লকডাউনের মধ্যে হঠাৎ পোশাক কারখানা খোলার ঘোষণায় বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে কর্মস্থলমুখী নারী ও পুরুষের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে।

মালবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, সিএনজি চালিত অটো রিকশা, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা- যে যেমন ভাবে পারছে গন্তব্যের দিকে ছুটছে। কেউ কেউ পায়ে হেটেই মহাসড়ক পারি দিতে গন্তব্যমুখী হয়েছেন।

শনিবার (৩১ জুলাই ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েণ্টে কর্মস্থলে ফেরা মানুষদের এমন উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। এছাড়া ভোরের দিকে কিছু যাত্রীবাহী বাস ঢাকার উদ্দেশে বিচ্ছিন্নভাবে ছেড়ে গেছে।

সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে ঢাকামুখী মানুষের ঢল দেখা গেছে। ফলে কর্মস্থলে ফেরা শ্রমজীবী মানুষ খোলা ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেটকার, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলযোগে গাদাগাদি করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

অনেকে ব্যাটারী চালিত অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে ঢাকার দিকে যাচ্ছে। এতে পরিবহনের সংশ্লিষ্টরা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ যাত্রায় কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না।

এদিকে, শনিবার সকাল থেকে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টিতে ভিজে খোলা ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তারা।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া ৬-৭টি যাত্রীবাহী বাসে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত জনপ্রতি ৪০০-৫০০টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশায় ভূঞাপুর থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৬০০টাকা।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড় গোলচত্ত্বর থেকে মালবাহী মিনি ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত ৪০০-৬০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। বাচ্চাদের বেলায়ও ২০০-৪০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। যানবাহন না পাওয়ায় অনেকে পায়ে হেটেই গন্তব্যে যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, আশেকপুর বাইপাস, ঘারিন্দা বাইপাস, রাবনা বাইপাস ও মির্জাপুর অংশে যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় রয়েছে। এছাড়া পরিবহন না পেয়ে অনেককেই পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে।

তবে মহাসড়কে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করা এসব বিষয়ে পুলিশের তেমন কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপার গোলচত্ত্বরের কাছে ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশনের দক্ষিণপাশে পরিবহনের অপেক্ষারত পোশাকশ্রমিক রাহেলা, কাইয়ুম, আবু নাসের ও জামাল হোসেন জানান, বগুড়ার শেরপুর উপজেলা থেকে বিভিন্ন বাহনে তারা ভেঙে ভেঙে অতিরিক্ত ভাড়ায় এ পর্যন্ত এসেছেন।

তারা গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। এখান থেকে সিএনজি চালিত অটো রিকশায় জনপ্রতি ৬০০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। তারপরও মহাসড়কে পুলিশ গাড়ি আটকালে তাদেরকেই টাকা দিয়ে ছাড়ানোর শর্ত জুড়ে দিচ্ছে।

ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকাগামী পোশাক কারখানা শ্রমিক ইতি, ইশরাত, সুফিয়া, তাদের শিশুপুত্র হৃদয় ও নমিতাকে নিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। তারা জানান, ছুটি নিয়ে ঈদে বাড়িতে এসেছিলেন।

পরিবহন খুলে না দিয়ে কিভাবে পোশাক কারখানা চালু করা হলো? এখন শ্রমিকরা কিভাবে কর্মস্থলে ফিরবে। কিছু যানবাহন পাওয়া যায় তাতেও তিনগুন-চারগুন ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকার যাই বলুক না কেন, নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগদান করতে না পারলে তাদের চাকুরি থাকবে না। তাই পথে নেমেছেন।

মহাসড়কের এলেঙ্গা বিরতি রেস্টুরেণ্টের সামনে অপেক্ষমান পোশাকশ্রমিক রহিমা খাতুন, আশরাফ আলী, নওশিন, আবুল খায়ের, রমেশ চন্দ্র সূত্রধর সহ অনেকেই পায়ে হেঁটে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন।

কারখানা খোলার ঘোষণায় কোম্পানী থেকে নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগদানের জন্য তাদেরকে বলা হয়েছে। এ কারণে চাকুরি বাঁচানোর জন্য কর্মস্থলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

তারা জানান, কখনও হেঁটে আবার কখনও ব্যাটারী চালিত অটো রিকশায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে তারা এ পর্যন্ত এসেছেন। যানবাহন না পাওয়ায় তারা এভাবেই গন্তব্যে পৌঁছবেন।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত জানান, মহাসড়কে কোন প্রকার গণপরিবহন চলছে না।

সরকারি বিধিনিষেধ অমান্যকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno