আজ- ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার  সকাল ৭:০৩

মধুপুরের আদিবাসী নারীরা নারী দিবসের তাৎপর্য জানেন না

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের মধুপুর অঞ্চলের আদিবাসী নারীদের জীবন-যাত্রার ইতিহাস পাহাড়ি লাল মাটি সৃষ্টির ইতিহাসের মত। তাদের অধিকাংশই মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার রীতি মতে ভূমির অধিকার যেমন নারীর- তেমনি পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্বও তার।

মধুপুর গড়াঞ্চলে প্রধানত গারো সম্প্রদায়ের লোক বাস। তবে কিছু কোচ সম্প্রদায়ের লোকও রয়েছে। তারা উভয়েই মাতৃতান্ত্রিক পরিবারে বসবাস করে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ নারীই জানেন না নারী দিবস ও এর তাৎপর্য। স্বাধীনতার প্রায় পাঁচ দশকেও তাদের ভাগ্যের আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি।

একটি সূত্রমতে, টাঙ্গাইলের মধুপুরে প্রায় ২০ হাজার ২৭ জন আদিবাসী বাস করে। এরমধ্যে এক হাজার ৩৪০ জন পুরুষ ও ৯ হাজার ৬৮৭ জন নারী।

মাতৃতান্ত্রিক অধিকারে সংসারের কর্তা হলেও এসব নারীর ভাগ্য উন্নয়নের মন্ত্র জানা নেই। পরিবারের কর্তা হলেও সমাজের অন্য আর দশটি নারীর মতোই ঘরের গৃহস্থালী কাজকর্ম তাকেই করতে হয়। বেশির ভাগ নারীই শ্রম বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করেন। পুরুষের সম পরিমাণ কাজ করেও তারা সম পরিমাণ পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। দেশে নারী উন্নয়নের জাগরণ বইলেও মাতৃতান্ত্রিক সমাজে বাস করে আদিবাসী নারীর সম্মানের অধিকার দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবী আলোকিত হলেও তাদের সম্মানের জায়গাটুকু অন্ধকারে থেকে যাচ্ছে।

গৃহস্থালীর সব কাজ সুনিপুণভাবে শেষ করে তাদেরকে জীবিকার সন্ধানে বের হতে হয়। এ সময় তাদের পুরুষ সদস্যটি কোন চায়ের দোকান অথবা আড্ডায় অলস সময় পাড় করে থাকেন। নারী যেহেতু পরিবারের কর্তা তাই পুরুষরা কাজ করলেও নারীদের সমান পরিশ্রম করেন না। তবুও পুরুষের মজুরি বেশি হওয়ায় আদিবাসী নারীদের মনে ক্ষোভ দেখা যায়।

মধুপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যস্টিনা নকরেক বলেন, সামাজিকভাবে নারীকে সম্মান না জানালে আদৌ নারীর উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে তাদের জাগরণের প্রয়োজন। নারীকে দেখা পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন তেমনি আরো বেশি প্রয়োজন।

নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা মধুপুর আচিক-মিচিক সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সুলেখা ম্রং মনে করেন, আদিবাসীদের বৈষম্যের চিত্রই প্রমাণ করে আদিবাসীর করুণ চিত্র। এ থেকে নারীকে মুক্তি পেতে হলে তাকে শিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হতে হবে।

টাঙ্গাইল জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাজনীন সুলতানা বলেন, সমঅধিকার বঞ্চিত নারীরা গোলক ধাঁধাঁয় আটকে আছেন। বিভিন্নভাবে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে তাদের সমঅধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সমাজের সব শ্রেণির নারীর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান বজায় থাকুক এমনই তাৎপর্য নারী দিবসের এবং সকল ক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকার বজায় থাকুক এ প্রত্যাশা আজকের বিশ্ব নারী দিবসে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno