আজ- ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার  দুপুর ১২:৩২

রোলার মেশিন ভাড়ায় টাঙ্গাইল এলজিইডির রাজস্ব আয় দেশে সর্বোচ্চ!

 

বুলবুল মল্লিক:

টাঙ্গাইল এলজিইডি ২০২২-২৩ অর্থবছরে রোলার মেশিন ভাড়া দিয়ে দেশের জেলাগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ রাজস্ব আয় করেছে। গত জুলাই থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত রোলার মেশিন ভাড়া দিয়ে দুই কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৫৩ টাকা আয় করেছে। টাঙ্গাইল এলজিইডির নিয়ন্ত্রণে ২৬১ কোটি ৮ লাখ ৫ হাজার ৯০৬ টাকার উন্নয়ন কাজের বিপরীতে রোলার মেশিন ভাড়ায় ওই পরিমাণ টাকা আয় হয়েছে।


জানাগেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) প্রদত্ত টাঙ্গাইলের আওতায় রোলার মেশিন(রাস্তা সমানকারী যন্ত্র) রয়েছে ২৪টি। এরমধ্যে ৪টি বিকল থাকায় সেগুলোর মেরামত করা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা, নরসিংদী ও মৌলভীবাজার জেলা থেকে অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকা ১০টি রোলার মেশিন এনে মেরামতের মাধ্যমে সচল করে ব্যবহার করা হয়েছে।

রোলার মেশিনগুলো প্রকৃতিক বৈরী পরিবেশেও ব্যবহার করা, একই রোলার মেশিন পাশাপাশি সড়কগুলোতে ব্যবহার করা ও সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে সব সময় ব্যবহারের মধ্যে রাখায় এ রাজস্ব আয় অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।


টাঙ্গাইল এলজিইডি সূত্রে জানাগেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের জুলাই মাসে ১৭ কোটি ৯১ লাখ ৮০ হাজার ৭৭ টাকার উন্নয়ন কাজের বিপরীতে রোলার মেশিন ভাড়ায় আয় হয়েছে ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৮৪১ টাকা। আগস্ট মাসে নয় কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৭৩২ টাকার উন্নয়নের বিপরীতে রোলার মেশিন ভাড়ায় আয় হয়েছে তিন লাখ ৪১ হাজার ৪০৮ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে নয় কোটি ২৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৯০ টাকার উন্নয়ন কাজের বিপরীতে রোলার মেশিন ভাড়ায় রাজস্ব আয় হয়েছে ১০ লাখ ৩৭ হাজার ১৪৭ টাকা।

একইভাবে অক্টোবর মাসে আট কোটি ৮১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৪০ টাকার বিপরীতে পাঁচ লাখ ৪২ হাজার ৩৭৬ টাকা। নভেম্বর মাসে ১৫ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ৮৮৮ টাকার বিপরীতে আয় ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৪৮ টাকা। ডিসেম্বর মাসে নয় কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৩০ টাকার বিপরীতে ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ৫৫৭ টাকা। জানুয়ারি মাসে ২০ কোটি ৬৪ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪৬ টাকার উন্নয়ন কাজের বিপরীতে ১৯ লাখ ৪৪ হাজার ৭৩১ টাকা রোলার মেশিন ভাড়ায় রাজস্ব আয় হয়েছে।

ফেব্রুয়ারি মাসে ১৫ কোটি নয় লাখ ৬১ হাজার ৯৪৪ টাকার বিপরীতে আয় ১৩ লাখ ১৭ হাজার ৬৬৮ টাকা। মার্চ মাসে ৫২ কোটি ৯৫ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪৫ টাকার বিপরীতে আয় হয়েছে ৫১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩৩ টাকা। এপ্রিল মাসে ৪৩ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৫৩৮ টাকার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৪ লাখ ৩৯ হাজার ২৮২ টাকা।

মে মাসে ১৪ কোটি ৫৭ লাখ ৭২ হাজার ৫৪২ টাকার বিপরীতে আয় হয়েছে ১৪ লাখ ৮২ হাজার ৬৪০ টাকা এবং জুন মাসে ৪৩ কোটি ৯৬ লাখ ৬১ হাজার ১৩৪ টাকার উন্নয়ন কাজের বিপরীতে রোলার মেশিনের ভাড়া হিসেবে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ২২২ টাকা।


এলজিইডির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ঘোষ এণ্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার ঘোষ, এসএম জাহাঙ্গীর এণ্টারপ্রইজের স্বত্ত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুছ ছালাম খান এণ্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুছ ছালাম সহ অনেক ঠিকাদারই জানান, টাঙ্গাইল এলজিইডির ফোরম্যান খুবই তৎপর। রাস্তার কাজের জন্য রোলার মেশিন চাইলে তিনি আশপাশে থাকা মেশিনই সাইটে পাঠিয়ে দেন। এতে রোলার মেশিনের জন্য কাজ বন্ধ রাখতে হয়না। বাড়তি খরচও গুনতে হয়না। তারা রোলার মেশিনের সার্ভিস নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট।


টাঙ্গাইল এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী(যান্ত্রিক) মো. বিপ্লব হোসেন জানান, টাঙ্গাইল এলজিইডি গত জুলাই থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত রোলার মেশিন ভাড়া দিয়ে দুই কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৫৩ টাকা রাজস্ব আয় করে সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে অনন্য নজির স্থাপন করেছে। এক্ষেত্রে প্রায় এক কোটি ৮৮ লাখ টাকা আয় করে দেশের জেলাগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ফরিদপুর এলজিইডি।


তিনি জানান, টাঙ্গাইল এলজিইডি ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ১৭৯ কোটি ২৯ লাখ ৭৪ হাজার ৩২১ টাকার উন্নয়ন কাজের বিপরীতে রোলার মেশিন ভাড়ায় এক কোটি ৫৮ লাখ ৯০ হাজার ৬৭২ টাকা রাজস্ব আয় করে এবং ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ১৬৬ কোটি ৯৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৬৭ টাকার উন্নয়ন কাজের বিপরীতে এক কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫৬৯ টাকা রোলার মেশিন ভাড়ায় রাজস্ব আয় করে।


টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, রোলার ভাড়ার মাধ্যমে টাঙ্গাইলে সর্বোচ্চ পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়েছে। সঠিক দিকনির্দেশনা মেনে যান্ত্রিক বিভাগে দ্বায়িত্বপ্রাপ্তরা রোলার মেশিনগুলোর সার্বক্ষণিক ব্যবহার নিশ্চিত করায় এ আয় করা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল এলজিইডি ল্যাব টেস্টের মাধ্যমেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব আয় করেছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno