আজ- ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার  সকাল ৬:৪৯

শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করা পুত্রবধূরা সম্মাননা পাচ্ছেন

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করলেই পুত্রবধূরা থানার ওসির পক্ষ থেকে সম্মাননাসহ উপহার সামগ্রী পাচ্ছেন।

টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর মোশারফ হোসেন ব্যতিক্রম এ উদ্যোগ নিয়ে নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপহার সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন।

উপহার সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়ি, পোড়াবাড়ির চমচম ও সম্মাননা স্বারক। একই সাথে ওই পরিবারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছাও জানাচ্ছেন। তার এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ স্থানীয় সুশীল সমাজে প্রশংসিত হয়েছে।

টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি ফেস্টুনে ‘বৃদ্ধাশ্রম নয়, পরিবারই হোক বাবা-মায়ের নিরাপদ আবাস; পুত্রবধূ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে তার শ্বশুর-শাশুড়ির খেদমত করে আল্লাহ তাকে আখিরাতে পুরস্কার প্রদান করবেন’।

সেখানে আরও লেখা রয়েছে- শ্বশুর শাশুড়িকে যে পুত্রবধূ সেবা-যত্ন করবে এবং একসাথে বসবাস করবে সেই ভাগ্যবতিকে পুরস্কৃত করা হবে এবং যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর উল্লেখ রয়েছে।

টাঙ্গাইল শহরের কলেজ পাড়ার বাসিন্দা শিউলি খান জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজে তিনি একটি পোস্ট দেখতে পান। পোস্টটি দেখে তার খুব ভালো লাগে।

তিনি শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মায়ের মত ভালবাসেন ও তাদের সেবা-যত্ন করেন। তাদের সেবা করে তিনি আত্মতৃপ্তি পান।

বিষয়টি জানানোর জন্য তিনি ফেসবুকে দেওয়া ওই ফেস্টুনে উল্লেখিত নম্বরে ফোন করেন। ওই দিন বিকালে ওসি মীর মোশারফ হোসেন নিজে বাসায় গিয়ে গৃহবধূর হাতে উপহার তুলে দেন।

শিউলি খানের শ্বশুর কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, আমার একটি মেয়ে আছে, পুত্রবধূও আমার আরেকটি মেয়ে।

আমার মেয়ে আমাকে যেমন ভালবাসে, আমার ছেলেবউও ঠিক তেমনি ভালবাসে। আমাদের দেখভাল ও সেবা-যত্নে কোন ত্রুটি করে না। এমন ছেলেবউ পেয়ে আমরা সত্যিই আনন্দিত।

বাউশা খানপুর এলাকার গৃহবধূ মাহমুদা আক্তার বলেন, আমি পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছি।

পুরস্কার পেয়ে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেছে। আমি শ্বশুর শাশুড়িকে যেমন নিজের বাবা-মা’র মত দেখি ওনারাও আমাকে নিজের মেয়ের মত স্নেহ করেন।

মাহমুদা আক্তারের শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন বলেন, আমার ছেলে ও ছেলেবউ সাধ্য অনুযায়ী সেবা করে। একজন পুলিশ অফিসার বউমাকে পুরস্কৃত করেছে। পুরস্কার পেয়ে সে আনন্দে আত্মহারা।

টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, সমাজে বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের অবহেলায় বাবা-মায়ের অযত্নে জীবন-যাবন তিনি গভীরভাবে লক্ষ করেছেন।

অনেকে বৃদ্ধ বাবা-মাকে ঠিকমত খাবারও দেয় না। আর্থিক অবস্থা ভালো এমন সন্তানরাও বাবা-মাকে ত্যাগ করে বউ-বাচ্চা নিয়ে আলাদা বসবাস করে। তাদের ঠাই হয় বৃদ্ধাশ্রমে।

অনেক সন্তানরাই ভুলে যান এই বাবা-মা দিনরাত পরিশ্রম করে নিজে না খেয়ে সন্তানের মুখে আহার তুলে দেন এবং উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেন। তারা এটাও ভুলে যান তাদেরও একদিন বৃদ্ধ হতে হবে, বাবা-মা হতে হবে।

আবার অনেকে কাজের প্রয়োজনে বাইরে ব্যস্ত থাকেন, তাদের বাবা-মা পুত্রবধূর সাথে বেশি সময় কাটান। তার মূল উদ্দেশ ওই পুত্রবধূদের উৎসাহিত করা।

তিনি জানান, যারা বাবা-মাকে ছেড়ে দূরে চলে যায় এবং একাধিক সন্তান থাকার কারণে বাবা-মাকে ভরনপোষণ নিয়ে ঠেলাঠেলি করে দূরে সরিয়ে দেয়- সেই সব সন্তান ও পুত্রবধূর প্রতি প্রতিবাদ হিসেবে এ আয়োজন। যাতে কোন বাবা-মাকে অবহেলা ও বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno