আজ- ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  সকাল ১১:১৭

নাগরপুরে ৮৩ বছরেও বয়স্ক ভাতা পাননি শান্ত রাণী!

 
অশীতিপর শান্ত রাণী মন্ডল

নাগরপুর সংবাদদাতা:

বয়সের ভারে ন্যূব্জ অশীতিপর শান্ত রাণী মন্ডল। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগে-শোকে ভুগছেন। চিকিৎসা সেবা নেওয়া তো দূরের কথা, তিন বেলা খাবার জোটানোও তার জন্য কষ্টকর।

জীবনের শেষ সময়ে একটু স্বচ্ছলতার আশায় বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য ধর্ণা দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে। আশ্বাস মিললেও এখনো পাননি বয়স্ক ভাতার কার্ড।

শান্ত রাণী মন্ডলের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মোকনা ইউনিয়নের আগদিঘুলিয়া গ্রামে। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নং ৯৩১৭৬৬৫১৪৩৫৩২ এবং তার জন্ম তারিখ ১৯৩৭ সালের ২১ মার্চ।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বয়স্ক ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীর বয়স সর্বনিম্ন ৬২ ও পুরুষের সর্বনিম্ন ৬৫ বছর। বয়স ৮৩ বছর হলেও ওই বৃদ্ধা বয়স্ক ভাতার কার্ড পেতে কেউ তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।

সরেজমিন আগদিঘুলিয়া গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শান্ত রাণী মন্ডলের স্বামী অনন্ত চন্দ্র মন্ডল মারা গেছেন প্রায় ৩ বছর আগে। সহায়-সম্বল বলতে স্বামীর রেখে যাওয়া একখন্ড বসতভিটা। যার অর্ধেকের বেশি ধলেশ্বরী নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে।

দুই ছেলে ও চার মেয়ের জননী শান্ত রাণী মন্ডল। ছেলে-মেয়েরা তাদের মত পৃথক হওয়ায় এখন তিনি ছোট ছেলে গণেষ চন্দ্র মন্ডলের বাড়িতে থাকেন।

শান্ত রাণী মন্ডল বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর আমি ছোট ছেলের কাছে থাকি। আমার অন্য ছেলে-মেয়েরা কেউ আমাকে দেখে না। ছোট ছেলে তার বউ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোনোরকম কষ্ট দিনযাপন করে। তার ওপর আমাকে পালতে ওর অনেক কষ্ট হয়। একটু খেয়ে পড়ে চলার জন্য অনেকবার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য গেছি। সবাই কথা দিছে, কিন্তু এখন অব্দি কেউ দেয় নাই’।

শান্ত রাণীর ছেলের বউ মায়া রানী মন্ডল (৪০) বলেন, করোনায় উপার্জন প্রায় বন্ধ। দিনপাত না চলায় ধার-দেনা করে খুব কষ্টে চলতেছি তার উপর আবার নদীর ভাঙন মরার ওপর খারার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর মধ্যে অসুস্থ শাশুরিকে ওষুধ খাওয়ানো লাগে। বয়স হয়ে যাওয়ায় শাশুরি প্রায় সময়ই অসুস্থ থাকেন। বয়স্ক ভাতার কার্ডটা হলে খুব উপকার হত।

এ বিষয়ে মোকনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান খান কোকা বলেন, কয়েক মাস আগে শান্ত রাণী মন্ডলসহ কয়েকজন বয়স্ক মহিলা এসেছিলেন।

সীমিত কার্ড থাকায় সবাইকে দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়া হবে।

নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ওই বয়স্ক মহিলা নাগরপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আবেদন করলে তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno