আজ- ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  সকাল ৯:৪৯

চাঞ্চল্যকর রূপা হত্যা মামলা :: পাঁচ আসামির দোষ স্বীকার

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আদালতে সপ্তম দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার পাঁচ আসামিই আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় টাঙ্গাইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া, আমিনুল ইসলাম, শামসুল আলম ও রুপম কান্তি দাস এবং জব্দ তালিকার সাক্ষী পুলিশ কনস্টেবল মাহবুবুর রহমান বুধবার (১৭ জানুয়ারি) টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে এ সাক্ষ্য দেন। প্রথমে সাক্ষ্য দেন মামলার সাক্ষী পুলিশ কনস্টোবল মাহবুবুর রহমান, দ্বিতীয় সাক্ষী দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া, তৃতীয় সাক্ষী দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম, চতুর্থ সাক্ষী দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামছুল আলম, পঞ্চম সাক্ষী দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুপম কান্তি দাস।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এবং এরপর এক ঘণ্টার মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর আবার বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চার বিচারক ও এক কনস্টেবলের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এরপর আসামিদের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন ও শামীম চৌধুরী তাদের জেরা করেন। এ নিয়ে এ মামলায় ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো। ২১ জানুয়ারি (রোববার) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুপুরের অরনখোলা ফাঁড়ির পরিদর্শক কাইয়ুম খান সিদ্দিকীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ কৌসুলি একেএম নাছিমুল আক্তার জানান, রোববার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়েই এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হবে। এরপর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।
গত ৩ জানুয়ারি মামলার বাদী অরণখোলা ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ৭ জানুয়ারি সাক্ষ্য প্রদান করেন চার সাক্ষী। তারা হচ্ছেন আব্দুর রশিদ, মামলার বাদি প্রবিন এন কুমার, মো. আবুল হোসেন ও মো. রহিজ উদ্দিন। ৮ জানুয়ারি সাক্ষ্য প্রদান করেন চার জন। তারা হচ্ছেন এমএ রৌফ, মো. ইমান আলী, মো. হাসমত আলী ও মো. লাল মিয়া। ৯ জানুয়ারি মোট তিন জন সাক্ষ প্রদান করেন। এদিন প্রথমে সাক্ষ্য দেন নিহত জাকিয়া সুলতানা রূপার ভাই হাফিজুর রহমান, দ্বিতীয় সাক্ষী দেন আব্দুল বারেক, তৃতীয় সাক্ষী দেন মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। ১৫ জানুয়ারি পঞ্চম দফায় মোট তিন জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। এ সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমে মামলার সাক্ষী লিটন মিয়া, দ্বিতীয় সাক্ষী দেন মো. হযরত আলী, তৃতীয় সাক্ষী দেন রুবেল মিয়া। ১৬ জানুয়ারি ষষ্ঠ দফায় মোট চারজন সাক্ষ্য প্রদান করেন। প্রথমে সাক্ষ্য দেন মামলার ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. সাইদুর রহমান, দ্বিতীয় সাক্ষী পাবলিক কিশোর, তৃতীয় সাক্ষী দেন পুলিশ কনস্টেবল হান্নান ও চতুর্থ সাক্ষী দেন পাবলিক আব্দুল মান্নান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের শিক্ষার্থী রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে সনাক্ত করেন। ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর, চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতে হাজির করা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার আসামিরা প্রত্যেকেই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন।

 

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno