আজ- ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  বিকাল ৪:৪১

টাঙ্গাইলে সরিষা চাষে ক্ষতির আশঙ্কা কৃষি বিভাগের!

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলে সরিষার ফলন কমে যাওয়ার আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে। অসময়ে ভারী বর্ষণ ও সরিষা ক্ষেতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে এ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে, নিচু এলাকার সরিষা ক্ষেতগুলো পুরোপুরি বিনষ্ট হওয়ায় টাঙ্গাইল জেলায় এবার সরিষার আবাদ কমেছে কয়েক হাজার হেক্টর। এবছর সরিষার প্রত্যাশিত ফলন পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
জানা যায়, ২০১৬-১৭ সালে টাঙ্গাইল জেলার রবি মৌসুমে ১২টি উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছিল। ওই বছর ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে ৪১ হাজার ২৭১ মে.টন সরিষা উৎপাদন হয়। কিন্তু অতি বৃষ্টিতে ফসলি জমিতে পানি জমে থাকা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও বর্ষার কারণে এ বছর তেমন ফলন হয়নি। টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় কিছু জমিতে সরিষার ফলন ভালো হলেও অধিংকাশ এলাকায় সরিষার ফলন হয়নি।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর মাত্র ২৮ হাজার ৪০৮হেক্টর জমিতে সরিষার বীজ বপণ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১১ হাজার হেক্টর কম। এর মধ্যে অধিংকাশই বিনষ্ট হয়েছে। এছাড়াও এ বছর যেসব এলাকায় সরিষা বপণ করা হয়েছে তা থেকে কৃষকরা তেমন লাভবান হবে না।
সূত্রমতে, টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় এবছর দুই হাজার ৫০০হেক্টর, বাসাইল উপজেলায় দুই হাজার ৩৭৫ হেক্টর, কালিহাতী উপজেলায় ৭২০ হেক্টর, ঘাটাইল উপজেলায় এক হাজার ৪৪৫ হেক্টর, নাগরপুর উপজেলায় নয় হাজার হেক্টর, মির্জাপুর উপজেলায় ছয় হাজার ৪৯০ হেক্টর, মধুপুর উপজেলায় ১৫১ হেক্টর, ভূঞাপুর উপজেলায় এক হাজার ২২৩ হেক্টর, গোপালপুর উপজেলায় দুই হাজার ২৭০ হেক্টর, সখীপুর উপজেলায় ৬৮০ হেক্টর, দেলদুয়ার উপজেলায় এক হাজার ৩৭০ হেক্টর ও ধনবাড়ী উপজেলায় ১৭৮ হেক্টর জমিতে সরিষা বপণ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার গালা ও দেলুয়ার উপজেলা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, যে সব জমিতে সরিষা বপণ করা হয়েছে তার অধিংকাশই বিনষ্ট হয়েছে। যে সময়ে সরিষা ঘরে তোলার অপেক্ষায় থাকবে কৃষক সেখানে লোকসানের আশঙ্কায় খরচের টাকা তুলতে পারবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন তারা। অনেক জমিতে সরিষার ফুল দেখা গেলেও কোন কোন জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির ঘাস ছাড়া অন্য কিছু চোখে পড়ে না। আবার অনেক সরিষার গাছ বড় হলেও নেই কোন দানা।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ভাটচান্দা এলাকার আব্দুর রহিম, আব্দুল হক ও লাল মিয়া, ওমর আলী, দেলদুয়ারের আজিম উদ্দিন, সরবেশ আলী বলেন, গত বছর সরিষা চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছিলাম। কিন্তু এ বছর বৃষ্টির কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। এবার আর সরিষা ঘরে তুলতে পারবো বলে মনে হয় না।
সরিষা চাষী মো. মইন উদ্দিন, শফি কামাল মোল্লা, সাইফুল ইসলাম, খাইরুল আলম বলেন, যে সময় সরিষার বীজ বপণ করা হয় সে সময় আমাদের জমিগুলোতে পানি ছিল। পরবর্তীতে কোন রকমে সরিষা বপণ করলেও বৃষ্টির পানিতে সব তলিয়ে যায়। এতে সরিষার ফলন ভালো হয়নি। যা হয়েছে তা দিয়ে খরচের টাকাও উঠবে না।
ভূঞাপুর উপজেলার শহিদুল ইসলাম, দেলদুয়ার উপজেলার লাবু মিয়া, কালিহাতীর আবু সাইম বলেন, সরিষাতে এ বছর যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়। সরকারিভাবে আমাদের কিছু সহযোগিতা করলে এ ক্ষতি কিছুটা উঠে আসবে।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা সার্বিকভাবে কৃষকদের পাশে থেকে তাদের সহযোগিতা করে থাকি। কিন্তু এ বছর বর্ষা ও নভেম্বরের টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে সরিষার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত বছর আমাদের ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে ৪১ হাজার ২৭১ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হয়। এবছর ২৮ হাজার ৪০৮ হেক্টর জমিতে সরিষার বীজ বপণ করা হয়েছে। যা থেকে কৃষকরা তেমন লাভবান হবে না। এবছর যে ক্ষতি হয়েছে তা পুরণ করার জন্য সরকারিভাবে আমরা ধানের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করেছি।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno