আজ- ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  সকাল ৬:৪৭

স্বাগত-অভিবাদন খ্রিস্টীয়-২০১৮

 

দৃষ্টি নিউজ:

বিদায়ী বছরের সূর্যাস্ত

নতুন স্বপ্নকে ধারণ করে শীতের কুয়াশা সরিয়ে উঁকি দিয়েছে উজ্জ্বল রোদ। সোনালি অতীতকে বিদায় জানিয়ে স্বপ্নের হাতছানি দিয়ে উদিত হয়েছে ‘নতুন সূর্য’। মানে বিশ্বের বয়স বাড়ল আরও এক বছর। নতুন একটি ‘বর্ষপরিক্রমা’ শুরু হলো আজ। ‘স্বাগত-অভিবাদন খ্রিস্টীয় ‘২০১৮’।
গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা অনুযায়ী ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন আজ। এ বর্ষকে স্বাগত জানতে বিশ্ববাসী মেতেছে আনন্দ-উল্লাসে। এ উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়েই মানুষ স্বাগত জানিয়েছে ইংরেজি নতুন বছর ২০১৮ সালকে। ‘হ্যাপি নিউইয়ার’- উচ্চারিত হচ্ছে শত কোটি কণ্ঠে। এর মধ্য দিয়ে সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্তেরর বেড়াজাল ছিন্ন করে বিশ্বের সঙ্গে তাল-মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে চায়।
নতুন এ বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
মানুষের সুদূর থেকে একেবারে নিকট অতীতের প্রতিটি দিন, মাস, বছর, শতক এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে। তবে এই দিনগুলো থাকে ইতিহাসের পাতায়। মানুষ আপন প্রয়োজনেই ইতিহাসের পাতা খুলে প্রয়োজনীয় অতীতকে জেনে নেয়, চিনে নেয়।
এ অবস্থায় দেশ ও জাতির সামনে অনেক অনেক স্বপ্ন ও প্রত্যাশা নিয়ে এসেছে নতুন বছর ২০১৮। কিন্তু সেসব স্বপ্ন জানালা পেরিয়ে চ্যালেঞ্জও কম থাকছে না। বরং ২০১৭ সালের কিছু কিছু চ্যালেঞ্জের রেশ থেকে যাবে ২০১৮ সালেও। বিশ্লেষকরা বলছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা, দ্রব্যমূল্য, সন্ত্রাসসহ নির্বাচন কেন্দ্রিক বিষয়গুলো কম ভোগাবে না বাংলাদেশকে। এমন বাস্তবতায় কেমন যাবে নতুন বছর? কোন কোন দিকে দিতে হবে বাড়তি নজর? সেই বিষয়ে কথা বললেন অর্থনীতিবিদ ইব্রাহীম খালেদ।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে মূল যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হবে সেটা হচ্ছে রোহিঙ্গা নিয়ে। এটি একটি বড় সমস্যা এই জন্য যে, ১০ লাখ রোহিঙ্গা থাকার কারণে অনেকগুলো সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এবং হবে। তাদের জোর করে ফেরত পাঠানো যাবে না। ফলে সমাধানটা আন্তর্জাতিকভাবেই করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে এই ইসু্যতে তারা অনেক সহায়তা পাচ্ছেন কিন্তু সেগুলো ঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।
নির্বাচনের বছর হওয়ায় নির্বাচনও হবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইব্রাহীম খালেদ যোগ করেন, এ বছর নির্বাচনের বছর সুতরাং সেটা একটা দ্বন্দ্বের জায়গায় যেতেও পারে। যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ৭৫ থেকে বিভাজন তৈরি হয়েছে। সেটা কাটিয়ে তারা নতুন করে দিন শুরু করতে পারবেন কিনা সেই ব্যাপারে একটা ইঙ্গিত প্রদান করতে পারবে এই নির্বাচন।
এ বছর সন্ত্রাস মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। সমাধানের পথ বাতলাতে গিয়ে বলেন, সেসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে তারা সক্ষমতা অর্জন করেছেন। সেটাই তাদের রক্ষা করে চলতে হবে ও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। রোহিঙ্গার ব্যাপারে মিয়ানমার বারবার বলছে এটা দ্বিপক্ষীয়, এটা তা নয়। আন্তর্জাতিকভাবে সহযোগিতা আরও কার্যকর করে সামনে এগোতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে ব্যাংকিং সেক্টরে যে বিশাল দুর্নীতি ঘটে গেছে সেখান থেকে বেরোতে হলে টপ লেভেলের পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট দরকার।
একই ধরনের চ্যালেঞ্জগুলোর কথা বলেন অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ। তিনি বলেন, এ বছরের চ্যালেঞ্জটা হবে রোহিঙ্গা কেন্দ্রিক। যদিও সেটা সরাসরি অর্থনৈতিক নয়, কিন্তু অর্থনীতির উপর বেশ ভালো প্রভাব থাকবে এই সমস্যার। আরেকটা মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বাংলাদেশের কারেন্সি ব্যালেন্স মাইনাসে যাচ্ছে। সেটা একটা সমস্যা তৈরি করতে পারে। ২০১৭ সালে আমদানি বেশি হয়েছে। সেটা পদ্মা সেতুর কারণে। আগামি বছরে যদি রপ্তানি বাড়াতে না পারে তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার উপরে চাপ পড়বে। তবে গত বছর তেলের দামটা নিয়ন্ত্রণে ছিল।
দ্রব্যমূল্যের কথা টেনে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে ২০১৭ সালে। ২০১৮তে বন্যার মতো কোনো ঘটনা না ঘটলে হয়তো চালের দাম স্থিতিশীল থাকবে বলেই মনে হয়। শেয়ার বাজার যত উপরে যাওয়ার কথা ২০১৭ সালে ততটা গেছে। তবে আরও উন্নতি করতে হলে নতুন কিছু স্টক নিয়ে আসতে হবে, তাহলে এই জায়গাতে পরিবর্তন আনা সম্ভব।
নির্বাচনের চ্যালেঞ্জের কথা বলতে গিয়ে আবু আহমেদ যোগ করেন, নির্বাচন যদি সবার অংশগ্রহণমূলক হয় তাহলে অর্থনীতিতে সুবাতাস আসবে আর বৃহৎ দলকে বাদ দিয়ে হয় তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে ততটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। জনগণ হয়তো মেনে নেবে, কিন্তু সিস্টেমেটিকভাবে এগোনো যাবে না।
অর্থনীতির আরও কিছু দিক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ২০১৮ তে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হবে এক্সপোর্টটা ধরে রাখতে পারব কি না, মানে গ্রোথ রেট। ২০১৭ সালের গ্রোথ রেটটা ধরে রাখতে পারলে ভালো অর্জন হবে। যদিও ২০১৭ তেও আমরা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। এক্সপোর্ট গ্রোথ রেটের সঙ্গেই জিডিপি জড়িত। ডলার ভার্সেস টাকা এক্সচেঞ্জ রেটটাও আমাদের বিপক্ষে যাচ্ছে। সেটাও স্থির রাখতে পারাটা একটা চ্যালেঞ্জ হবে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি যত কমানো যায় তত ভালো। সঞ্চয়পত্র বিক্রি খোলা রাখলে সরকারের দেনা বাড়ে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno