আজ- ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  দুপুর ২:৪৪

হলুদ চাঁদরে মোড়ানো টাঙ্গাইলের কৃষকের মাঠ

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার কৃষি মাঠ গায়ে হলুদ চাঁদর জড়িয়েছে। সরিষা ফুলের মৌ মৌ সুবাশে গুণ গুণ করছে মৌমাছি, মধু আহরণে ব্যস্ত তারা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। চারিদিকে সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধাঁনো বর্ণিল সমারোহ। ফুলের রেণু থেকে মৌমাছির মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির ফুলে ফুলে দাপাদাপি- এ এক অপরূপ মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য। ভোরের শিশির বিন্দু আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে দিগন্তজোড়া হলুদকে দিয়েছে নতুন মাত্রা। ভালো ফলনের আশায় জেলার কৃষকরা অবিরাম পরিশ্রম করছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এবার বন্যার পানি মাঠ থেকে দ্রুত নেমে যাওয়া এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রবি শস্যের উপযোগী উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪, বারি- ১৭ এবং ট্ররি(মাঘী) জাতের সরিষা বপণ করা হয়েছে। এতদাঞ্চলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকরা। এদিকে, কিছু কিছু জমি সরিষা চাষের উপযোগী না হওয়ায় কৃষকরা সঠিক সময়ে সরিষা বপণ করতে পারেনি। ফলে তারা অন্যান্য রবিশস্য চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। কৃষকরা যথা সময়ে সরিষা ঘরে তুলতে পারলে এবং বিক্রিমূল্য ভাল পেলে বন্যার কারণে রোপা-আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষকরা মনোযোগী হতে পারবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষকরা জানায়, জেলা কৃষি অফিস থেকে ১২টি উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে হাতেগোনা কয়েকজন কৃষককে কৃষি উপকরণ, উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা বীজ ও রাসায়নিক সার দেয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জেলার সব কৃষককে কৃষি উপকরণ দেয়ার দাবি জানান তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ১২টি উপজেলায় ৩৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। শুরুতেই সরিষা ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে সরিষা চাষীদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরি সহযোগিতার কারণে সরিষা ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কুইজবাড়ী গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান জানান, তিনি চলতি মৌসুমে এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। কোন প্রকার দূর্যোগ ও রোগবালাই না থাকায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। বাসাইল উপজেলার সৈদামপুর গ্রামের কৃষক হাকিম মিয়া জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। হালকা কুয়াশার কারণে সরিষার কিছুটা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও বাম্পার ফলনের আশা তার। তিনি আরও জানান, কৃষি অফিস থেকে তাকে কোন প্রকার কৃষি উপকরণ, সরিষা বীজ, রাসায়নিক সার দেয়া হয়নি। কালিহাতী উপজেলার পারখী ইউনিয়নের রজব আলী জানান, তিনি এ বছর প্রায় চার বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। সরিষা গাছে প্রচুর ফুল আসায় তিনি এবার সরিষার আশানুরূপ ফলন পাওয়ার আশা করছেন।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ বছর জেলার ১২টি উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮ হাজার হেক্টর কিন্তু এ বছর সরিষা চাষ হয়েছে ৩৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। তিনি বলেন, এ বছর জেলায় ৪০ হাজার মেট্রিকটন সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন। যথাসময়ে জমি চাষযোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে সরিষা চাষ করেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে জেলায় সরিষা আবাদের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno