আজ- ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ রবিবার  সন্ধ্যা ৬:১৬

তৃণমূলে কোন্দলে জর্জরিত আওয়ামীলীগ :: মাঠে বিএনপির আন্দোলন স্থবির

 

বুলবুল মল্লিক:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলের তৃণমূলের রাজনীতি উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে। জেলার ৮টি সংসদীয় আসনে শাসক দলে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশি থাকায় তারা অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে পড়েছেন। এর প্রভাব উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপি একদফা দাবির আন্দোলন করলেও উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে তার কোন প্রভাব না থাকায় এক প্রকার স্থবিরতা বিরাজ করছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কোন কর্মসূচিও তারা প্রকাশ্যে পালন করে না। জেলা পর্যায়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করলেও তা মূল শহরের বাইরে ২০০ গজের মধ্যে ফটো সেশনে সীমাবদ্ধ। জাতীয় পার্টির নেতারা ধীরে চল নীতিতে চলছে। কৃষক শ্রমিক জনতালীগ দীর্ঘ সময় নীরব থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জেলার ৮টি আসনের রাজনৈতিক মাঠ গোছাতে সক্রিয় রয়েছে।


জেলা আওয়ামীলীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের ৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে ফজলুর রহমান খান ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জোয়াহেরুল ইসলামের(ভিপি জোয়াহের) নাম ঘোষণা করা হয়। নানা কারণে দীর্ঘ ৯ মাস পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন করা হয়নি। সেই থেকে দুই সদস্য দিয়েই জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড চালানো হয়েছে। গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামীলীগের ৭৪ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওই কমিটিতে ২৭ জন নতুন মুখ থাকলেও পদবঞ্চিতরা সাংগঠনিক কর্মকান্ড থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ার প্রয়াস পাচ্ছেন।


টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার প্রায় প্রতিটি আসনের সংসদ সদস্যের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রকাশ্য দ্ব›দ্ব রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন, দলের বাইরে ‘ভাই লীগ বা এমপি লীগ’ কিংবা নিজস্ব বলয় তৈরি, দলীয় এমপির বিতর্কিত কর্মকান্ড, জনবিচ্ছিন্নতা, বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদদান, উন্নয়নের কাজে উপজেলা ভিত্তিক বৈষম্য, উন্নয়ন কাজে কমিশন বাণিজ্য, স্থানীয় নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য ও আত্মীয়করণ, নিজস্ব বলয়ের লোক দিয়ে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন, তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করা ইত্যাদি কারণে দলীয় অভ্যন্তরীণ দ্ব›দ্ব প্রকাশ্য কোন্দলে রূপ নিয়েছে। ওই কোন্দল এখন উপজেলার গন্ডি পেরিয়ে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কোন্দলের কারণে ২-৩টি উপজেলায় আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি আলাদাভাবে পালন করা হয়।


তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানায়, বিগত সময়ে আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনে স্ব স্ব আসনের এমপিরা নিজেদের পছন্দের লোকদের নেতৃত্বে নিয়ে আসার প্রয়াস পান। ফলে দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীরা পদ বঞ্চিত হন। ওইসব নেতাকর্মীরা সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং কিংবা দলীয় কর্মসূচিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রশংসা ও সরকারের উন্নয়নের সুফল বর্ণনা করলেও স্থানীয় এমপির নানা কর্মকান্ডের বিরোধিতা করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কোন্দলের কারণে গত বছরের ১৫ জুন কালিহাতী উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হলেও অদ্যাবধি পূর্ণাঙ্গ কার্যকরি কমিটি গঠন করা হয়নি।


জেলার মধুপুর, গোপালপুর, ভূঞাপুর, ঘাটাইল, কালিহাতী, দেলদুয়ার, নাগরপুর, বাসাইল, সখীপুর ও মির্জাপুর উপজেলায় আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নানাভাবে প্রকাশ্যে এসেছে। কোন কোন উপজেলায় কোন্দলের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা পত্র-পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে। তবে রোববার(৬ আগস্ট) গণভবনে আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে আয়োজিত বৈঠকে অংশগ্রহন করার পর কয়েকটি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, অতীতে যাই ঘটে থাকুক না কেন এখন তারা সেসব নিয়ে আর ভাবছেন না। আগামি জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীককে নির্বাচিত করতে হবে- এটাই তাদের একমাত্র প্রতিজ্ঞা।


টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম(ভিপি জোয়াহের) এমপি জানান, আওয়ামীলীগ দেশের একটি বড় ও প্রাচীণ রাজনৈতিক দল। দলে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশি থাকবে- এটাই স্বাভাবিক। এ নিয়ে দলের অভ্যন্তরে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আছে, তবে প্রতিহিংসা বা কোন্দল নেই।


তিনি জানান, দীর্ঘ ৯ মাস পরে হলেও বাংলাদেশ আাওয়ামীলীগ গত ৭ আগস্ট জেলা আওয়ামীলীগের ৭৪ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দিয়েছে। নতুন কমিটি পূর্ণ উদ্যমে সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা করবে।
তিনি আরও জানান, দলের মধ্যে প্রতিযোগিতার কারণে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করলেও মূলত সবাই দলীয় প্রধান জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি পূর্ণ আস্থাশীল। আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে সব নেতাকর্মী তার পক্ষে নৌকা প্রতীককে জয়যুক্ত করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।


জেলা বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের ১ নভেম্বর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে হাসানুজ্জামিল শাহীনকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। দলীয় নানা জটিলতায় এখনও পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। এই দুই সদস্যের কমিটি দিয়ে চলছে জেলা বিএনপি।

বিভিন্ন উপজেলায় কমিটি করা হলেও স্থানীয় রাজনীতিতে তারা সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছেনা। ফলে বিএনপির একদফা দাবির আন্দোলনের প্রভাব উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। তাছাড়া অনেকে মনে করেন, সাবেক ছাত্রদল নেতা ও বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দলের সাংগঠনিক কাঠামো অকেজো হয়ে পড়েছে।

তিনি পছন্দের লোক নিয়ে বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠন করায় দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামে পরিচিত ত্যাগী নেতাকর্মীরা পদ বঞ্চিত হয়েছেন। সময়-অসময়ে তিনি ফোন রিসিভ না করায়ও নেতাকর্মীরা তার প্রতি বিরাগভাজন। এসব নানা কারণে তার নেতৃত্বের প্রতি তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনাস্থা তৈরি হয়েছে।


জেলা বিএনপির নেতারা জানান, বর্তমান সরকারের অধীনে তারা কোন নির্বাচনে অংশ নেবেন না। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের একদফা দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। আন্দোলনের ঢেউ তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। মামলা-হামলা ও গ্রেপ্তারের ভয়ে তাদের নেতাকর্মীরা উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারছেন না।

এদিকে, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম মূল শহরের বাইরে বেপারীপাড়ায় ২০০ গজের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় দুই বছরের অধিক সময় ধরে বিএনপি মূল শহরে কোন কর্মসূচি পালন করতে পারছে না। গত ১৮ জুলাই মূল শহরের ঈদগাঁ ময়দান থেকে পদযাত্রা শুরু করলেও পুরো শহর প্রদক্ষিণ করতে পারেনি। পদযাত্রা শুরুর পরই পুলিশ বাধা দিয়ে তাদের বেপারি পাড়ার দিকে পাঠিয়ে দেয়।


জেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশ বা সম্মেলন কোন কিছুর জন্যই মূল শহরের কোনো মাঠ বা পার্ক ব্যবহারের অনুমতি দুই বছরেরও আগে থেকে তারা পাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে মূল শহরের বাইরে কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। গত বছরের ১ নভেম্বরে দলের জেলা শাখার সম্মেলন করতে হয়েছে লৌহজং নদীর ওপারে কাগমারা এলাকায়। অনুমতি না পেয়ে বাধ্য হয়ে ব্যাপারীপাড়া এলাকার সরকারি শিশু পরিবারের (এতিমখানা) সামনে থেকে শান্তিকুঞ্জ মোড়- এই ২০০ গজের মধ্যে সকল কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। সকল কর্মসূচিতে ৫-৬ জন নেতা বক্তৃতা করে থাকেন। এরই মধ্যে ফটোসেশন হয়। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে কর্মসূচি পালনের কথা প্রচার করা হয়। তারপর কর্মসূচি শেষ করে নেতাকর্মীরা চলে যান।


বিএনপির একাধিক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, পুলিশের বেধে দেওয়া জায়গার বাইরে গিয়ে কোনো কর্মসূচি পালন করলে গ্রেপ্তার, মামলা, হামলা সহ নানা হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়। গত ১৮ জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির করতে গিয়ে দুই জন নেতা গ্রেপ্তার হয়েছে। তাই পুলিশি নির্দেশনা মেনে মূল শহরের বাইরে তারা কর্মসূচি পালন করছেন।


জেলা বিএনপির ত্যাগী নেতারা মনে করেন, পুলিশের অনুমতি নিয়ে আন্দোলন হয় না। বর্তমান নেতৃত্ব দায়সারাভাবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছে। তারা পুলিশের বেঁধে দেওয়া ছকের বাইরে গিয়ে নিজেদের মতো করে কর্মসূচি পালন করতে পারছেন না। তাই প্রতিটি কর্মসূচিতে দেখা যায়, বেপারি পাড়ার এতিম খানার সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। তারপর ২০০ গজ অতিক্রম করে শান্তিকুঞ্জের মোড়ে গেলেই পুলিশ বাধা দেয়। আর সেখানেই কর্মসূচি শেষ করে দেওয়া হয়। ফলে তৃণমূলে আন্দোলন সংগ্রামের আঁচ ছড়াচ্ছেনা।


বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কোন কর্মসূচি পালন করা হয়না। ফলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঝিমিয়ে পড়েছে। কেউ কেউ পদ টিকিয়ে রাখতে জেলা বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেয়। তবে কেন্দ্রীয় বা বিভাগীয় কর্মসূচিগুলোতে তারা নিজ খরচে দলবেধে অংশগ্রহন করে থাকেন।


জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার ছাইদুল হক ছাদু জানান, আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ বাধা দেবেই। বাধা পেলে আন্দোলন আরও জোরদার হয়। কিন্তু বর্তমান নেতৃত্ব পুলিশের নির্দেশনা মেনে মূল শহরের বাইরে কর্মসূচি পালন করছে। এভাবে কর্মসূচি পালন করে আন্দোলন কীভাবে জোরদার হবে তা বোধগম্য নয়। তিনি জানান, দুর্বল নেতৃত্বের কারণেই তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলন সংগ্রাম ছড়িয়ে পড়ছেনা।


জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল জানান, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপিতে নেতৃত্বের কোন দ্ব›দ্ব নেই। নেই কোন রেশারেশিও। খুব দ্রæত জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা জেলার কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। তাছাড়া উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা খুব কম দেওয়া হয়। এজন্য নেতাকর্মীরা জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রের নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকেন।


তিনি জানান, ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু তাদের নেতা। তিনি টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার সকল কর্মকান্ডই দলের মঙ্গলের জন্য নিয়ে থাকেন। তার সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের অত্যন্ত সুন্দর সম্পর্ক।


তিনি আরও জানান, মূল শহরে কর্মসূচি পালনের দীর্ঘদিন যাবৎ পুলিশের অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের চেয়ে বেশি আগ্রাসী হয়ে পুলিশ তাদের বাধা দিয়ে থাকে। তাই শহরের বাইরে কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। সামনে আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে। তখন নিষেধাজ্ঞা দিলে তা অমান্য করেই পুরো শহরে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে হবে।


কৃষক শ্রমিক জনতালীগ রাজনীতির মাঠে বেশকিছুদিন নীরবতা পালন করলেও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় ব্যাপক সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছে। গত ২১ জুন বাসাইল পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী রাহাত হাসান টিপু নির্বাচিত হওয়ার পর দলীয় নেতাকর্মীরা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছেন।

প্রতিটি উপজেলার দলীয় সমাবেশে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। জেলার ৮টি সংসদীয় আসনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ করা না হলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠ পর্যায়ে গণসংযোগ করছেন।


কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীরপ্রতীক জানান, অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে তাদের সাংগঠনিক অবস্থা অনেক বেশি সুসংগঠিত। দলের জেলা সভাপতির মৃত্যুজনিত কারণে বীরমুক্তিযোদ্ধা বদিউর রহমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও এটিএম সালেক হিটলু ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দলীয় প্রায় কর্মসূচিতে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম অংশ নেওয়ায় জনসম্পৃক্ততা অনেকাংশে বাড়ছে।



কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদ গ্রæপ ও জিএম কাদের গ্রæপ একত্র হওয়ায় টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিধাবিভক্তিরও সমাধান হয়েছে। জেলার ১২টি উপজেলা ও পৌরসভাগুলোতে জাতীয়পার্টির কমিটি রয়েছে। টাঙ্গাইল সদর ও কালিহাতী উপজেলায় প্রায় নিয়মিত কর্মী অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। কর্মীসভাগুলোতে সাবেক এমপি ও পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল কাশেম, টাঙ্গাইল-৪(কালিহাতী) আসনে পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশি ইঞ্জিনিয়ার লিয়াকত আলী, জেলা শাখার সভাপতি আব্দুছ ছালাম চাকলাদার ও সাধারণ সম্পাদক মোজ্জাম্মেল হক অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে থাকেন।

জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মোজাম্মেল হক জানান, বিগত সময়ে দলের মধ্যে নানা জটিলতা থাকলেও তা কাটিয়ে উঠে এখন অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে জেলা জাতীয়পার্টি সাংগঠনিকভাবে অনেকাংশে মজবুত। উপজেলা ও পৌরসভার নেতাকর্মীরা এখন পার্টির প্রায় প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। আগামি নির্বাচনকে সামনে রেখে পার্টির তৎপরতা কয়েকগুন বাড়ানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno