আজ- ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  রাত ১০:১০

কালিহাতীতে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি জবরদখলের অভিযোগ!

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার দশকিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি জবরদখল করতে সাইন বোর্ড টাঙানোর অভিযোগ উঠেছে। ওই জবরদখলের নেপথ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আ. মালেক ভূঁইয়ার ইন্দন রয়েছে বলে জানাগেছে।
অভিযোগ ও সরেজমিনে জানাগেছে, দশকিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. কোরবান আলীসহ আওয়ামী লীগের ১৬ নেতাকর্মীর নামে সাইন বোর্ড টাঙিয়ে খাসমগড়া গ্রামের সমীর পাল, সনদ পাল, বিজন পাল, অপু পাল ও সুমন পালের মগড়া মৌজার ৬৫ শতাংশ জমি জবরদখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। জবরদখলকারী অন্য নেতাকর্মীর মধ্যে রয়েছেন, দশকিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আমানত আলী সরকার, মো. সেলিম তালুকদার, মো. মজিবর তালুকদার, মো. আফাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. ইসমাইল হোসেন ভূঁইয়া, মো. রহিজ উদ্দিন(বিএনপি কর্মী), সল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগ নেতা মো. শফিকুল ইসলাম শফি(আনালিয়াবাড়ী), আ’লীগ নেতা মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা, ইউপি সদস্য ও আ’লীগ নেতা মো. আনোয়ার হোসেন আকন্দ ও মো. মতিয়ার রহমান ভূঁইয়া, ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা আরিফুল ইসলাম আরিফ, মো. জালাল উদ্দিন দুল্লু, মো. মিজানুর রহমান মিনু, মো. আবুল কাশেম এবং নাজমুল হাসান। সাইনবোর্ডে লেখা হয়েছে, উল্লেখিত ব্যক্তিরা ‘ক্রয়সূত্রে’ ওই জমির মালিক। কিন্তু সাইনবোর্ডে উল্লেখ করা নামগুলোর অধিকাংশ ব্যক্তিই কীভাবে- কারা সাইনবোর্ড ঝুঁলিয়েছে এবং কেন তাঁদের নাম লিখেছে তা জানেন না। তবে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, দশকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আ. মালেক ভূঁইয়ার মদদে ওই সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে খাস মগড়া গ্রামের সনদ পাল বাদি হয়ে কালিহাতী থানার মগড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
স্থানীয় বাজারের কতিপয় ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে জানান, অভিযোগের পর মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা, শফিকুল ইসলাম শফি, আরিফুল ইসলাম আরিফ, আফাজ উদ্দিন ভূইয়া, ইসমাইল হোসেন ভূইয়া, আনোয়ার হোসেন আকন্দ, মতিয়ার রহমান গভীর রাতে ওই ফসলি জমিতে মাটি ভরাট করতে যায়। এ সময় অভিযোগকারী সনদ পাল ও সমীর পাল মাটি ভরাটে বাধা দিলে উল্লেখিত প্রভাবশালীরা তাদের হত্যা করে গুম করে ফেলার হুমকি দেয়। খবর পেয়ে মগড়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে প্রভাবশালীরা সট্কে পড়ে। এ ঘটনায় স্থানীয় সংখ্যালঘু পাল পরিবারটি আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
এ বিষয়ে সনদ পাল বলেন, জমি দখলকারীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও দশকিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. মালেক ভূঁইয়ার আত্মীয়-স্বজন। তারা ওই জমি ছেড়ে দিতে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধমকি ও অভিযোগ তুলে না নিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান আ. মালেক ভূঁইয়া সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারির প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় সর্বেসর্বা বনে গেছেন।
এ বিষয়ে মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, সনদ পালের ভাতিজা প্রদীপ পালের কাছ থেকে আলম তালুকদার ৬৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেছে। আলম তালুকদারের কাছ থেকে আমরা ওই জমি বায়না দলিল করেছি।
দশকিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কোরবান আলী(ইউপি সদস্য) ও বিএনপি কর্মী মো. রহিজ উদ্দিন জানান, তারা ওই জমি বা সাইন বোর্ডের বিষয়ে কিছুই জানেন না। ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের নাম ব্যবহার করে সাইন বোর্ড টাঙিয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও দশাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. মালেক ভূঁইয়া বলেন, আওয়ামী লীগ- বিএনপির বিষয় নয়, স্থানীয় কয়েকজন মিলে সনদ পালের ভাতিজা প্রদীপ পালের কাছ থেকে ওই জমি কিনে নিয়েছে। ক্রয় সূত্রে তারা ওই জমির মালিক বিধায় সাইন বোর্ড ঝুঁলিয়েছে। স্থানীয় সাংসদের প্রভাব খাটানোর বিষয় অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমার আত্মীয় হলেও তারা আইন মেনেই সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে।
কালিহাতীর মগড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ওই জমিতে গভীর রাতে শফিকুল ইসলাম শফির নেতৃত্বে মাটি ভরাট করার চেষ্টা করা হচ্ছিল। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি ভরাট বন্ধ করে দিয়েছি। এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করা হয়েছে।

 

 

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno