আজ- ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  সন্ধ্যা ৭:৫০

খান পরিবারের আগ্রাসন :: ঘাটাইলে ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালিয়ে পাঁচ বাড়ি ভাংচুর

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকবাল হোসেনসহ পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়ি-ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে।

টাঙ্গাইলের আলোচিত-সমালোচিত খান পরিবারের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে প্রায় ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী ওই তাণ্ডব চালানো হয়। ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম লেবু এবং গোপালপুর সার্কেলের এএসপি মাসুদ রানাসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।


প্রত্যক্ষদর্শী জিয়াদ খান জয়, ফরিদা ইয়াসমিন, নারগিস বেগম, কামাল হোসেন, নাঈম, ফয়সাল, রনিসহ অনেকেই জানান, দিঘলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেন।

ওই নির্বাচনে টাঙ্গাইলের খান পরিবার সমর্থিত রেজাউল করিম মটু ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচিত হন। পরে জালিয়াতির অভিযোগ এনে মো. ইকবাল হোসেন ভোট পুন:গণনার দাবিতে নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। আগামী ৭ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালে ওই আবেদনের শুনানীর দিন ধার্য রয়েছে। এ নিয়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মটু ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছে।


বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে আওয়ামী লীগের কয়েকজন কর্মী দিঘলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন করতে গেলে উদ্যোক্তা নানা অজুহাতে তাদের ফিরিয়ে দেন। কর্মীদের ফিরিয়ে দেওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে উদ্যোক্তার সাথে রূঢ় আচরণ করেন।

এ খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মটু টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার কর্মী বাহিনী ডেকে এনে মো. ইকবাল হোসেন ও তার কর্মীদের পাঁচটি বাড়িতে ভাংচুর চালায়।

ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডবে ভাংচুরকৃত বাড়িগুলো হচ্ছে- দিঘলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেঘ শিমুল গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে মো. ইকবাল হোসেনের ২টি ঘর, তার ভাই সালামত হোসেন হিটলুর ২টি, ফরিদ হোসেনের ২টি, তার কর্মী বেলদহ গ্রামের আ. রহিমের ছেলে কামাল হোসেনের ২টি, উপলদিয়া গ্রামের শামছুদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানার ২টি ঘর দা, চাপাতি, হকিস্টিক, লাঠি, রড ইত্যাদি দিয়ে ভাংচুর চালায়। এসময় হামলাকারীরা মো. ইকবাল হোসেনের বাড়ি থেকে একটি কম্পিউটার ও একটি ল্যাপটপসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।


ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন জানান, ইতোপূর্বে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ায় টাঙ্গাইলের খান পরিবারের অন্যতম সদস্য সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা তার উপর রুষ্ঠ হন। নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দেওয়ায় ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম মটু তার উপর ক্ষুব্ধ।


তিনি জানান, কুখ্যাত খান পরিবারের সহায়তায় রেজাউল করিম মটু তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইতোপূর্বে দুইবার হামলা চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার দেড় শতাধিক লোক নিয়ে তার বাড়ি ঘেরাও করে এবং তা-ব চালায়। এসময় তার স্ত্রী রুমিনা ইকবাল সোফার নিচে তোষক ও ল্যাপ দিয়ে ঢেকে রেখে তাকে রক্ষা করে।


তিনি আরও জানান, রেজাউল করিম মটু একজন কুখ্যাত রাজাকারের নাতি। সাবেক এমপি রানার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ তার ও তার কর্মীদের পাঁচটি বাড়ির ১০টি ঘর কুপিয়ে বসবাসের অযোগ্য করে ফেলেছে।


দিঘলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মটু জানান, ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তাদের সাথে মো. ইকবাল হোসেনের বাক-বিতন্ডার জের ধরে মারামারি হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বেশি কিছু বলতে পারবেন না।


ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম বিপিএম জানান, বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনায় মো. ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম লেবু জানান, কাক কাকের মাংস খায়না, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কর্মীদের বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনা অত্যন্ত দু:খজনক। যারা হামলা চালিয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানা পুলিশকে বলা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno