আজ- ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  রাত ২:১৩

চালের বাজার অস্থির! ২৫ টাকার মোটা চাল এখন ৪০ টাকা

 

দৃষ্টি নিউজ:

dristy-9
হঠাৎই অস্থির চালের বাজার। গত চার মাসে দফায় দফায় চালের দাম বেড়েছে। চিকন চালে কেজিপ্রতি দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৩-৪ টাকা। এ ছাড়া মোটা চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কেজিপ্রতি ১৫ টাকা। গত রোজার ঈদের আগে মোটা যে চালের দাম ছিল ২৪-২৫ টাকা, সে চালের দাম এখন ৪০ টাকা।
খুচরা চাল বিক্রেতারা বলছেন, ‘দাম নিয়ে লিখে কী হবে? কোনো সমাধান তো হবে না। প্রতিবারই বাড়তি দাম দিয়ে চাল কিনতে হয়। আমরাও বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে চাল বিক্রি করছি। এ ছাড়া তো উপায় নেই।’
তারা বলেন, ‘অামরা এখন রশিদের মিনিকেট প্রতি কেজি বিক্রি করছি ৫২ টাকা যা ১০ থেকে ১২ দিন আগেও ছিল ৪৮ টাকা, আটাশ চাল বিক্রি করছি প্রতি কেজি ৪৬ টাকা, যা ছিল ৪২ টাকা, সাকির মিনিকেট এখন ৪৫ টাকা আগে ছিল ৪২ টাকা, পাইজাম এবং গুটি স্বর্ণা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, আগে ছিল ৩৬ টাকা।
চাল বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।’
তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, চালের দাম তেমন বাড়েনি। দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘চালের দাম খুবই কম বাড়ছে। পদক্ষেপ নেয়ার মতো এখনো সময় আসেনি।’
চার মাস যে চালের দাম ছিল ২৪-২৫ টাকা। তার দাম এখন ৪০ টাকা। দাম বৃদ্ধির এ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে প্রোডাকশন কস্ট কত? সেই তুলনায় চালের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। দাম আরও বাড়ার দরকার ছিল।’
চালের দাম বৃদ্ধি বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘এ বিষয়ে আর কী বলব। গত কয়েক মাসে যে কয়বার চাল আনতে গেছি, তার বেশিরভাগ সময়েই আগের থেকে বেশি দামে চাল কিনতে হয়েছে।’
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো আমরা বলতে পারব না। আমরা চাল কিনি কারওয়ান বাজার থেকে।’
চাল কিনতে আসা এক গৃহিণীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘শুধু চাল কেন? কোনো জিনিসের দাম বাড়ছে না বলুন? আটাশ চাল আগে কিনেছি ৩৭ টাকা, এখন তা ৪৫-৪৬ টাকা। এগুলো দেখার কেউ নেই।’
ঢাকার কারওয়ান বাজারে চালের পাইকারি বিক্রেতা নূর আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘মিনিকেট প্রতি কেজি বিক্রি করছি বিভিন্ন প্রকারভেদে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, যা ১০ থেকে ১২ দিন আগে ৪৪ টাকায় বিক্রি করেছি। ২৮ চাল বিক্রি করছি প্রতি কেজি ৪২ থেকে টাকা, যা ছিল ৩৬ টাকা। মোটা চাল কেজিপ্রতি ৩২ থেকে ৩৪ টাকা, যা আগে ছিল ২৮ টাকা।’
তিনি বলেন, ‘২৮ আর মোটা চালের দাম বেশি বেড়েছে। কী কারণে বেড়েছে, এটা আমরা বলতে পারব না। কারণ আমরা যেসব মিল থেকে চাল কিনে আনি সেখানে দামাদামির কোনো সুযোগ নাই। তারা যেই দাম ঠিক করে দেবেন সেই দামেই আনতে হয়।’
এই বাজারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘আমি মিনিকেট ৪৮ টাকা, নাজির বিভিন্ন প্রকার ভেদে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, ২৮ চাল ৪১ থেকে ৪২ টাকা বিক্রি করছি।’
দফায় দফায় চাল বৃদ্ধির এ প্রবণতায় নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠতে শুরু করেছে। দিন দিন ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যের দাম।
রিকশাচালক মনিরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘পত্রিকায় লেইখ্যা কী অইব কন? আপনি কন এহন চালের দাম কতই গিয়া ঠেকল? কোন জিনিসের দাম বাড়ে নাই কন?’
চালের দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে অনেকেই দাবি করে বলেন, ‘মিল মালিকদের সিন্ডিকেট আছে। সরকারের উচিত এগুলোর খোঁজ নেয়া। কারণ সেখানে আমরা কোনো কথা বলতে পারি না। তারা চালের যে দাম ঠিক করে দেয় সেই দামেই আমাদের আনতে হয়।’
‘এ ছাড়া মনে করেন এক বস্তায় চাল থাকে ৫০ কেজি। কোনো কারণে বস্তায় ১০ টাকা বাড়লে খুচরা বাজারে কিন্তু সেটা কেজিপ্রতি এক টাকা বেড়ে যায়। তারপর যখন আবার বস্তায় ১০ টাকা কমে তখন কিন্তু খুচরা বাজারে তার দাম কমে না। এমন করেও কিন্তু চালের দাম বাড়ে। খুচরা বাজারে গিয়ে খোঁজ নিলে দেখবেন তারা প্রতি কেজি চালে পাঁচ থেকে ছয় টাকা লাভ করে’।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno