প্রথম পাতা / অর্থনীতি /
টাঙ্গাইলে গরু আছে ক্রেতা নেই ॥ অনলাইন হাটও জমে ওঠেনি
By দৃষ্টি টিভি on ৯ জুলাই, ২০২১ ৮:১২ অপরাহ্ন / no comments
বুলবুল মল্লিক:
টাঙ্গাইলে খামার ও কৃষক পর্যায়ে কোরবানির জন্য প্রায় দেড় লাখ গরু প্রস্তুত থাকলেও করোনার কারণে হাট না বসানোয় ক্রেতা মিলছে না।
সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কোরবানির পশু বিকিকিনির জন্য অনলাইন হাটের ব্যবস্থা করা হলেও এ বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় জমে ওঠছে না।
ফলে কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে কৃষক ও খামারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে ঈদুল আযহার আগে ৩-৪দিন হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হলে এ অবস্থার কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন হওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন খামারী ও কৃষকরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় ছোট-বড় ৬ শতাধিক গরু মোটাতাজা করণের খামার রয়েছে।
খামারগুলোতে ৯৫ হাজার ২০০ কোরবানির গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া জেলার কৃষক পর্যায়ে প্রায় ৫০ হাজার পশু মোটাতাজা করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সূত্রমতে, সরকারি হিসেবে জেলায় কোরবানির জন্য ৮৪ হাজার ২২০টি(গত দুই বছরের অনুপাতে) পশুর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বেসরকারি হিসেবে এর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। করোনার কারণে দেশে কঠোর লকডাউন চলমান থাকায় জেলার গরুর হাটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জেলার গরুর হাট হিসেবে খ্যাত ৩-৪টি হাটে ইজারাদাররা ব্যক্তি উদ্যোগে হাট বসানোর চেষ্টা করায় জেলা-উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা কোরবানির হাট বসানোর বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এদিকে, অনলাইন কেনাকাটা উৎসাহিত করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কোরবানিকে সামনে রেখে ১৩টি অনলাইন পশুর হাট পেইজ খোলা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজে খোলা এসব হাটগুলোর মধ্যে জেলার ১২টি উপজেলায় ১২টি এবং জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে একটি রয়েছে।
এসব পেইজে বৃহস্পতিবার(৮ জুলাই) পর্যন্ত তিন হাজার ৬৮১টি পশুর বিবরণ সহ ছবি আপলোড করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৩২টি কোরবানির পশু সরকারি অনলাইনে বিক্রি হয়েছে।
সরেজমিনে কৃষক জাহাঙ্গীর আলম, বুলবুল হোসেন, দবির উদ্দিন, আজিজুর রহমান, বাবলু মিয়া, রমজান আলী, লালচান মিয়া, নজরুল ইসলাম সহ অনেকেই জানান, তারা প্রতি বছর কোরবানি সামনে রেখে ২-৪টি ষাড় বাছুর কিনে মোটাতাজা করেন।
মোটাতাজাকরণে পরিবারের সবাই কম-বেশি শ্রম দেন। কোরবানির সময় বিক্রি করে তারা বেশ লাভবান হন। এ বছরও তারা ষাড় বাছুর কিনে মোটাতাজা করেছেন।
কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কঠোর লকডাউন চলছে। ফলে এখনও পর্যন্ত কোন পাইকার তাদের গরু কেনার জন্য আসেনি। হাট বন্ধ থাকায় তাদের গরুগুলো বাড়িতেই রয়েছে।
অনলাইন হাট সম্পর্কে তাদের ধারণা না থাকায় সেখানেও কোন রকম যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছেনা। সব মিলিয়ে তারা এবার গরু নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
টাঙ্গাইল পৌরসভার বালুচরা এলাকার বীণা এগ্রো ফার্মের মালিক শাহ আজিজ তালুকদার জানান, কোরবানিকে সামনে রেখে তিনি ১৫টি দেশি জাতের গরু লালন-পালন করছেন।
ইতোমধ্যে গরুগুলো ক্রয় ও পালনে তিনি ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। করোনায় হাট-বাজার বন্ধ থাকায় তিনি অনলাইনে চেষ্টা করে আশানুরূপ সাড়া পাননি। ভারতীয় গরু দেশে না এলে তিনি এবারও লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
ভূঞাপুরের বৃহৎ খামার চকদার গরুর খামারের মালিক মো. দুলাল হোসেন চকদার জানান, এ বছর কোরবানির জন্য তিনি ১০০টি ষাড় ও বলদ মোটাতাজা করেছেন। এরমধ্যে ৪০টি বলদ ও ৬০টি ষাড় গরু রয়েছে।
করোনার কারণে এবার তিনি অনলাইনে গরু বিক্রির উপর জোর দিয়েছেন। ফেসবুকে পেইজ খুলে গরুর ছবি দিয়ে তিনি ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করছেন। এতে ভালো সাড়াও পেয়েছেন।
প্রতিদিনই অনলাইনে লোকজন যোগাযোগ করছেন, পাইকাররাও ফেসবুকে দেখে স্বশরীরে আসছেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি ২৬টি ষাড় ও বলদ বিক্রি করেছেন।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর গরুর হাট ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী গরুর হাটের ইজারাদার মো. লিটন মন্ডল জানান, স্থানীয় নানা জটিলতার কারণে বৃহত্তর এ হাটটি ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে।
করোনার কঠিন আঘাত তাদের জন্য ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার হাটবারেও গরু থাকলেও কঠোর লকডাউনের কারণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাটে বিকিকিনি বন্ধ করে দিয়েছে।
এছাড়া লকডাউনের কারণে ক্রেতা ও পাইকাররা আসতে পারছেনা। গত বছর হাট ইজারা নিয়ে বেশ লোকসান গুনতে হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে গোবন্দিাসী গরুর হাট অস্তিত্ব হারাবে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া জানান, কঠোর লকডাউনের কারণে হাট-বাজার বন্ধ রয়েছে।
কোরবানির পশু বিকিকিনি করতে জেলা প্রশাসন ও প্রাণি সম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে একটি এবং জেলার ১২টি উপজেলায় ১২টি মোট ১৩টি ফেসবুক পেইজ খোলা হয়েছে। ওইসব পেইজে খামারী ও সাধারণ কৃষকদের অনলাইনে পশু কেনাবেচাঁর সুযোগ তৈরি হয়েছে।
অনেকে এ সুযোগ গ্রহন করছেন। সরকারি নির্দেশনা পেলে পশুর হাট বসানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নয় :: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
-
টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪ জিআই পণ্যের সনদ বিতরণ
-
যুদ্ধকে ‘না’ বলুন :: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
-
টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ মাঠে ইস্তিকার নামাজ আদায়
-
টাঙ্গাইলে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপিত
-
টাঙ্গাইলে পঁচা মাংস বিক্রি করায় ব্যবসায়ীকে জরিমানা
-
বখাটেদের টাকা না দেওয়ায় প্রবাসীকে নিয়ে তুলকালাম!
-
শিক্ষাবিদ আব্দুল মোমেনের দাফন সম্পন্ন