আজ- ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  রাত ২:৩০

ভূঞাপুরের আ’লীগ নেতা ফরিদ হত্যায় সমন্বয় করেন মেম্বার মকবুল

 

দৃষ্টি নিউজ:

নিহত ফরিদ

নিহত ফরিদ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা রকিবুল ইসলাম ফরিদ হত্যাকান্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগের তিন নেতা ও ঘাতকদের মধ্যে সমন্বয় করেন ইউপি সদস্য মো. মকবুল হোসেন তরফদার। রোববার(১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রুপন কুমার দাসের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন গ্রেপ্তারকৃত ইউপি সদস্য মো. মকবুল হোসেন তরফদার। তিনি ভারই দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আ. হামিদ তরফদারের ছেলে ও অলোয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অশোক কুমার সিংহ বলেন, মকবুল এই হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা ও অর্থ যোগানদাতাদের সঙ্গে ঘাতকদের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করেন। রোববার বিকালে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনাকারী, অর্থ জোগানদাতা ও ঘাতকদের সহ জড়িত সবার নামও বলেন মকবুল। এরআগে শনিবার(১১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ভূঞাপুর উপজেলার ভারই গ্রাম থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রুপন কুমার দাস গ্রেপ্তারকৃত মকবুলের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।
আদালত ও তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি(শনিবার) বিকালে একই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন গ্রেপ্তারকৃত শওকত। শওকত বলেন, ঘটনার মাসখানেক আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনজন নেতা ফরিদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এ হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া শওকত ও তাঁর সঙ্গীদের দুই লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ওই তিন নেতা। তাঁরা এক লাখ টাকা হত্যাকান্ডের আগে অগ্রিম প্রদান করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী শওকতসহ ছয়জন ঘটনার পাঁচ দিন আগে বৈঠক করেন। তাঁরা শপথ নেন যে কেউ ধরা পড়লে অন্য কারও নাম প্রকাশ করবেন না। ঘটনার দিন শওকত নিজ হাতে ফরিদকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি, ফরিদের মোবাইল ফোনসহ সব আলামত ভাড়ই গ্রামে অবস্থিত এটিবি নামক ইটভাটায় পুড়িয়ে ফেলেন।
এরআগে গোয়েন্দা পুলিশ গত ২২ জানুয়ারি এ মামলায় ভূঞাপুরের ভাড়ই মধ্যপাড়া গ্রামের মাঈনুল হাসান মাসুদকে গ্রেপ্তার করে। মাসুদও একই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত ২৩ জানুয়ারি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মাসুদ জানায়, কিছু নেতার সঙ্গে মতবিরোধ এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকান্ড ঘটে। তার মতে, পাঁচ দিন আগে চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয়। সেদিন খুনিরা শপথ করে যে হত্যার পর পুলিশের কাছে কেউ গ্রেপ্তার হলে অন্যদের নাম প্রকাশ করবে না। এ সময় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ও জনপ্রতিনিধির নামও তিনি বলেন।
প্রকাশ, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সকালে ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম ফরিদের গলা কাটা লাশ তাঁর নিজ গ্রাম ভাড়ই মধ্যপাড়ার একটি পুকুরপাড় থেকে উদ্ধার করা হয়। আগের দিন রাত সাড়ে নয়টার পর তিনি নিখোঁজ হন।
৬ ডিসেম্বর ফরিদের ভাই ফজলুল করিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে ভূঞাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ফজলুল করিম বাদী হয়ে ১৫ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে একটি সম্পূরক মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক তাহেরুল ইসলাম তোতা, অপর যুগ্ম-আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য আবদুল হামিদ মিয়া ভোলা, অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সরকারসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। বিচারিক আদালত থানা ও আদালতে দায়ের করা মামলা দুটি একসঙ্গে তদন্তের আদেশ দেন। পরে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno