প্রথম পাতা / অর্থনীতি /
যমুনা ও ঝিনাই নদীর ভাঙনে ৯২ পরিবার নিঃস্ব, আতঙ্কে পাঁচ শতাধিক পরিবার
By দৃষ্টি টিভি on ২৫ জুলাই, ২০২১ ৪:৩৪ অপরাহ্ন / no comments
বুলবুল মল্লিক:
টাঙ্গাইলে যমুনার উন্মত্ততায় দুই দিনের ভাঙনের শিকার হয়ে কালিহাতী উপজেলার ৯২টি পরিবার নিঃস্ব হয়েছে।
একই সময়ে জেলার ঝিনাই নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকার বাঁকে বাঁকে ভাঙন দেখা দেওয়ায় বাসাইল উপজেলার পাঁচ শতাধিক পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক ডক্টর মো. আতাউল গনি ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত ১৪টি পরিবারকে নগদ অর্থ ও অন্যদের খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, যমুনায় পানি কমতে থাকায় শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাতে কালিহাতী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ভৈরববাড়ী গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়।
শুক্রবার রাতের ভাঙনে ১৪টি পরিবারের বাড়ি পুরোপুরি যমুনার পেটে চলে যায়। পরে দফায় দফায় শনিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই গ্রামের ৭৮টি পরিবারের বাড়িঘরে ভাঙন শুরু হওয়ায় তড়িঘড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ভাঙন কবলিত শতাধিক পরিবার আত্মীয়দের বাড়ি আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও শতাধিক ঘর বাড়ি ভাঙনের হুমকির মুখের রয়েছে।
এদিকে শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাতে ভাঙনের শিকার পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা ও চাল বিতরণ করা হয়েছে।
শনিবার বিকালে সরেজমিনে ভৈরববাড়ী গিয়ে দেখা যায়, ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো বাড়িঘরের জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তায় জমা করে রেখেছে। কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
গ্রামটির বেশ কিছু অংশে পাউবো’র গাইড বাঁধ দেওয়া হয়েছে। গাইড বাঁধের পর যমুনার বাম তীরে পাউবো ৩০০মিটার এলাকায় প্রায় ৫৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করেছে। কিন্তু যমুনার ঘূর্ণাবর্ত উল্টোস্রোত দক্ষিণ দিক থেকে এসে জিও ব্যাগের প্রতিরোধ সহ বাড়িঘর ভেঙে ফেলেছে।
বর্তমানে পাশের বেলটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও শতাধিক ঘরবাড়ি মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে।
অপরদিকে, গত এক সপ্তাহে বাসাইল উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনার শাখা ঝিনাই নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকার বাঁকে বাঁকে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে ১০-১২টি পরিবারের ভিটাবাড়ি ও বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণে তীরবর্তী অনেকেই বাড়িঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে।
পাঁচ শতাধিক পরিবার ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। বিলপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া বীর নিবাসটিও ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে।
বাসাইল উপজেলায় ঝিনাই নদীর ভাঙন কবলিত গ্রামগুলোর মধ্যে ফুলকি ইউনিয়নের দোহার, হাকিমপুর, জশিহাটি, একঢালা; কাশিল ইউনিয়নের দাপনাজোর, দেউলী,
কামুটিয়া, নদখোলা, কাশিল, থুপিয়া, নাকাছিম, বিয়ালা; কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কাজিরাপাড়া, বিলপাড়া, মানিকচর, আদাজান গ্রাম অন্যতম।
এছাড়া পাকা সড়ক, খেলার মাঠ, হাট-বাজার, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
কালিহাতীর দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আনোয়ার হোসেন জানান, গত শুক্র ও শনিবার যমুনার ভাঙনে ৯২টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি শনিবার দুপুরে ভাঙন কবলিত ভৈরববাড়ী গ্রাম পরিদর্শন করেছেন।
নদীতে ঘরবাড়িসহ সবকিছু বিলীন হয়ে যাওয়া ১৪টি পরিবারকে তিনি পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, যমুনার ভাঙনের শিকার ভৈরববাড়ী গ্রামে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু করা হয়েছে।
অপরদিকে, বাসাইল উপজেলায় ঝিনাই নদীর ভাঙন রোধে বিভিন্ন পয়েণ্টে কাজ অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে ভাঙন কবলিত পয়েণ্টগুলোতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, প্রতি বছর নদী ভাঙন রোধে অস্থায়ী ব্যবস্থায় শুধু টাকার অপচয় হচ্ছে। নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি। অহেতুক টাকার অপচয় ঠেকাতে ও নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নয় :: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
-
টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪ জিআই পণ্যের সনদ বিতরণ
-
যুদ্ধকে ‘না’ বলুন :: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
-
টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ মাঠে ইস্তিকার নামাজ আদায়
-
টাঙ্গাইলে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপিত
-
টাঙ্গাইলে পঁচা মাংস বিক্রি করায় ব্যবসায়ীকে জরিমানা
-
বখাটেদের টাকা না দেওয়ায় প্রবাসীকে নিয়ে তুলকালাম!
-
শিক্ষাবিদ আব্দুল মোমেনের দাফন সম্পন্ন